গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয়
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
গর্ভাবস্থায় মায়ের সুস্থতা ও শিশুর সঠিক বিকাশে ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয়, তা জানা অত্যন্ত জরুরি। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
.
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয়
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা মা ও অনাগত সন্তানের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। ফলিক এসিড একটি প্রকারের বি-ভিটামিন (B9), যা ভ্রূণের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে। এটি বিশেষভাবে নিউরাল টিউব ডিফেক্ট, যেমন স্পাইনা বিফিডা বা অ্যানেনসেফালির ঝুঁকি হ্রাস করে। তাই যারা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন, তাদের গর্ভধারণের অন্তত এক মাস আগে থেকেই ফলিক এসিড সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ শুরু করা উচিত।
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস বা প্রথম ট্রাইমেস্টার ফলিক এসিড গ্রহণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ এই সময়ে শিশুর নিউরাল টিউব গঠিত হয় এবং এই ধাপে ফলিক এসিড না থাকলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে অনেক চিকিৎসক পুরো গর্ভাবস্থাজুড়েই ফলিক এসিড খাওয়ার পরামর্শ দেন, বিশেষ করে যেসব মায়ের শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে কিংবা যারা একাধিক সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন। সাধারণভাবে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এই মাত্রা বাড়তেও পারে।
যারা পূর্বে কোনো জন্মগত ত্রুটিযুক্ত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বা যাদের পারিবারিক ইতিহাসে এমন সমস্যা আছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত ডোজের প্রয়োজন হতে পারে। গর্ভাবস্থার পাশাপাশি স্তন্যদানের সময়েও ফলিক এসিডের চাহিদা থাকতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ডোজ ও সময় নির্ধারণ করাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।
অতএব, গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয়, তা নির্ভর করে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের অবস্থা, গর্ভাবস্থার ধাপ এবং চিকিৎসকের নির্দিষ্ট পরামর্শের উপর। নিরাপদ মাতৃত্ব ও শিশুর সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান।
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থার সঠিক বিকাশে ফলিক এসিড একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এটি মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং জটিলতা হ্রাস করে। তাই গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পয়েন্ট আকারে বিস্তারিত নিয়মগুলো উল্লেখ করা হলোঃ
- গর্ভধারণের আগে থেকেই শুরু করুনঃ যারা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন, তাদের গর্ভধারণের অন্তত ১ মাস আগে থেকেই প্রতিদিন ফলিক এসিড গ্রহণ শুরু করা উচিত।
- প্রথম তিন মাসে নিয়মিত গ্রহণঃ গর্ভাবস্থার প্রথম ট্রাইমেস্টার (১ম থেকে ৩য় মাস) ফলিক এসিড গ্রহণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে শিশুর নিউরাল টিউব তৈরি হয়, যা সঠিকভাবে গঠনের জন্য ফলিক অ্যাসিড অপরিহার্য।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট ডোজঃ সাধারণত প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ মাইক্রোগ্রাম (mcg) ফলিক এসিড গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে কারো শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসক ভিন্ন মাত্রা নির্ধারণ করতে পারেন।
- বিশেষ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় গ্রহণঃ যেসব মায়ের ডায়াবেটিস, ওবেসিটি বা পূর্বে জন্মগত ত্রুটিযুক্ত সন্তান হয়েছে, তাদের জন্য ৪০০০ মাইক্রোগ্রাম (৪ মি.গ্রা.) পর্যন্ত ফলিক অ্যাসিড প্রয়োজন হতে পারে যা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করতে হবে।
- খাওয়ার উপযুক্ত সময়ঃ সাধারণত খাবারের আগে বা পরে, প্রতিদিন একই সময়ে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া ভালো। পানি দিয়ে খাওয়াই উত্তম এবং ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটের সাথে একসাথে না খাওয়াই ভালো।
- গর্ভকালীন পুরো সময়ে খাওয়া যেতে পারেঃ অনেক সময় গর্ভাবস্থার শেষ পর্যন্ত এবং এমনকি স্তন্যদানকালেও ফলিক এসিড চালিয়ে যেতে বলা হয়, যদি মায়ের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি থাকে।
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চললে মা ও নবজাতকের সুস্থতা নিশ্চিত করা অনেক সহজ হয়। তাই নিয়মিত ও সঠিক ডোজে ফলিক এসিড গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফলিক এসিড এর কাজ কি
ফলিক এসিড, যা ভিটামিন B9 নামেও পরিচিত, শরীরের কোষ বিভাজন এবং ডিএনএ গঠনের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি উপাদান। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গর্ভে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক গঠনের জন্য ফলিক এসিড অপরিহার্য। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেই শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ড গঠন শুরু হয়, এই সময় ফলিক এসিডের অভাব হলে নিউরাল টিউব ডিফেক্টের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থার পরিকল্পনার সময় থেকেই ফলিক এসিড গ্রহণ শুরু করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এছাড়া, ফলিক এসিড রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। এটি গর্ভবতী মায়েদের ক্লান্তি, দুর্বলতা ও মাথা ঘোরানো কমাতে সহায়তা করে। এমনকি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এটি গর্ভপাত ও প্রি-টার্ম বার্থের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় এবং ফলিক এসিড এর কাজ কি এই দুটি প্রশ্ন একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাধারণত গর্ভধারণের তিন মাস আগে থেকে শুরু করে গর্ভাবস্থার অন্তত প্রথম তিন মাস পর্যন্ত ফলিক এসিড খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়ে এটি চালিয়ে যেতে হতে পারে, যা নির্ভর করে মায়ের স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর।
ফলিক এসিড খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মায়ের সুস্থতা এবং গর্ভস্থ শিশুর সঠিক বিকাশের জন্য ফলিক এসিড একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এটি মূলত ভিটামিন B9-এর একটি রূপ, যা গর্ভাবস্থায় নিয়মিত গ্রহণ করলে নানা ধরনের জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শুরুতে ফলিক এসিড খাওয়া শিশুর সুস্থ জন্ম নিশ্চিত করতে অনেকটাই সহায়ক। নিচে ফলিক এসিড খাওয়ার উপকারিতা পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলোঃ
- নিউরাল টিউব ডিফেক্ট প্রতিরোধে সহায়তা করেঃ এটি শিশুর মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের সঠিক গঠনে সাহায্য করে, জন্মগত সমস্যা যেমন স্পাইনা বিফিডা প্রতিরোধে কার্যকর।
- রক্তশূন্যতা কমায়ঃ ফলিক এসিড লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে, যা মায়ের শরীরে রক্তশূন্যতার ঝুঁকি হ্রাস করে।
- গর্ভপাত ও প্রি-টার্ম ডেলিভারির ঝুঁকি কমায়ঃ নিয়মিত ফলিক এসিড খেলে গর্ভকালীন জটিলতার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
- শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়কঃ গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড গ্রহণ শিশুর ভবিষ্যৎ বুদ্ধিমত্তা ও মানসিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়ঃ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ফলিক এসিড হোমোসিস্টেইন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
- শরীরের কোষ গঠনে সহায়কঃ এটি ডিএনএ এবং কোষ বিভাজনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয়।
অনেকে জানতে চান, গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় এবং ফলিক এসিড খাওয়ার উপকারিতা কী। সাধারণভাবে গর্ভধারণের তিন মাস আগে থেকে শুরু করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস পর্যন্ত ফলিক এসিড গ্রহণ করা উচিত, তবে বিশেষ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে তা আরও দীর্ঘ হতে পারে।
ফলিক এসিড কোন ভিটামিন
অনেকই প্রশ্ন করে যে ফলিক এসিড কোন ভিটামিন। ফলিক এসিড একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যা মূলত ভিটামিন বি-গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত, এবং এটি ভিটামিন বি৯ নামে পরিচিত। এটি পানি-দ্রবণীয় ভিটামিন এবং দেহের কোষ বিভাজন, ডিএনএ গঠন এবং নতুন কোষ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য এই ভিটামিনটি অতীব জরুরি, কারণ গর্ভের শিশুর সঠিক স্নায়ুতন্ত্র গঠনে ফলিক এসিড একটি প্রধান উপাদান হিসেবে কাজ করে।
গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই নারীদের ফলিক এসিড গ্রহণ করা উচিত, এমনকি অনেক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেন গর্ভধারণের পরিকল্পনার অন্তত এক মাস আগেই ফলিক এসিড সাপ্লিমেন্ট শুরু করতে। কারণ গর্ভধারণের প্রথম কয়েক সপ্তাহেই শিশুর মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ড গঠিত হয়, যা এই ভিটামিনের উপস্থিতির উপর নির্ভর করে। এ জন্যই অনেকে জানতে চান গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, গর্ভধারণের আগ থেকে শুরু করে কমপক্ষে প্রথম তিন মাস পর্যন্ত এটি নিয়মিত খাওয়া উচিত।
তবে কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারদের পরামর্শে পুরো গর্ভকালীন সময়জুড়েও এটি চালিয়ে যেতে হতে পারে। ফলিক এসিড প্রাকৃতিকভাবে কিছু খাবার যেমন পালং শাক, ডাল, লিভার, ডিম ও ব্রকলিতে পাওয়া যায়। তবে প্রয়োজনীয় মাত্রা নিশ্চিত করতে অনেক সময় সাপ্লিমেন্টই সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হয়ে ওঠে।
ফলিক এসিডের অভাবে কি রোগ হয়
ফলিক এসিডের অভাব শরীরের জন্য একাধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এটি একটি অপরিহার্য ভিটামিন যা রক্তকণিকা উৎপাদন, কোষ বিভাজন এবং ডিএনএ সংশ্লেষে ভূমিকা রাখে। এর ঘাটতির কারণে প্রথমত দেখা দিতে পারে মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, যেখানে রক্তে অস্বাভাবিকভাবে বড় ও অপরিণত লাল রক্তকণিকা তৈরি হয়। এর ফলে রোগী দুর্বলতা, অবসাদ, শ্বাসকষ্ট ও হৃদস্পন্দনের অনিয়মে ভুগতে পারেন।
নারীদের ক্ষেত্রে ফলিক এসিডের অভাব গর্ভকালীন জটিলতা তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীরা যদি প্রয়োজনীয় পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড না গ্রহণ করেন, তাহলে গর্ভের শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্ট, যেমন স্পাইনা বাইফিডা বা অ্যানেনসেফালির মতো জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে। এছাড়া ফলিক এসিডের অভাবে স্মৃতিভ্রংশ, মনোযোগের ঘাটতি এবং হতাশাজনিত সমস্যা বাড়তে পারে।
অনেকেই জানতে চান, গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় এবং ফলিক এসিডের অভাবে কি রোগ হয় এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, ফলিক এসিডের অভাব শুধু গর্ভবতী নারীদেরই নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও বিপজ্জনক হতে পারে। তাই খাদ্যাভ্যাসে ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন শাকসবজি, ডাল ও ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত। যথাসময়ে এই ভিটামিন গ্রহণ করলে অনেক জটিল রোগ এড়ানো সম্ভব।
কোন কোন খাবারে ফলিক এসিড আছে
ফলিক এসিড একটি বি-ভিটামিন (ভিটামিন বি৯), যা কোষ বিভাজন, ডিএনএ গঠন এবং রক্তকণিকা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি অতীব প্রয়োজনীয়। তাই অনেকেই জানতে চান, গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম এবং কোন কোন খাবারে ফলিক এসিড আছে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে খাবারের উৎস সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। নিচে ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবারগুলোর নাম এবং প্রতি ১০০ গ্রামে গড়ে কত মাইক্রোগ্রাম (mcg) ফলিক অ্যাসিড থাকে তা উল্লেখ করা হলো।
- পালং শাক – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৯৪ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড থাকে।
- মসুর ডাল (রান্না করা) – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৮১ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড।
- ব্রকলি (সেদ্ধ) – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১০৮ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড।
- কমলা – একটি মাঝারি আকারের কমলায় প্রায় ৫০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড।
- ডিমের কুসুম – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৪৪ মাইক্রোগ্রাম।
- গরুর লিভার (রান্না করা) – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ২৫০ মাইক্রোগ্রাম, যা অত্যন্ত সমৃদ্ধ উৎস।
- সূর্যমুখী বীজ – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ২৩৮ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড।
- হোল গ্রেইন ওটস – প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ২৫ মাইক্রোগ্রাম।
ফর্টিফায়েড ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল কিছু ব্র্যান্ডে প্রতি সার্ভিংয়ে ১০০ থেকে ৪০০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত ফলিক এসিড থাকে। এই খাবারগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে দৈনিক চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করা সম্ভব। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর দৈনিক প্রয়োজন গড়ে ৪০০ মাইক্রোগ্রাম, আর গর্ভাবস্থায় সেটি বেড়ে যায় ৬০০ মাইক্রোগ্রামে। তাই খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি সাপ্লিমেন্টও দরকার হতে পারে।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ফলিক এসিড সাধারণত গর্ভবতী নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন। তবে এটি গ্রহণের সময় কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা জানা থাকলে ভয় বা বিভ্রান্তি কমে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো খুবই হালকা এবং সাময়িক হয়। যেমন বমি বমি ভাব, মুখে তিক্ত স্বাদ, গ্যাস বা পেট ফাঁপা, ক্ষুধামান্দ্য এবং মৃদু ত্বকের র্যাশ। কিছু ক্ষেত্রে মাথাব্যথা বা ঘুম ঘুম ভাবও দেখা যেতে পারে। তবে এগুলো যদি তীব্র আকার ধারণ করে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যারা অতিরিক্ত মাত্রায় ফলিক এসিড গ্রহণ করেন, তাদের ক্ষেত্রে বিরলভাবে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া বা শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তবে এটি খুবই কম ঘটে এবং সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করলে সাধারণত কোনো গুরুতর সমস্যা হয় না।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য, গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় এবং ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকা মায়ের এবং শিশুর সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। সাধারণত গর্ভধারণের আগ থেকে শুরু করে প্রথম তিন মাস পর্যন্ত ফলিক এসিড গ্রহণ করা হয়, তবে অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই সময়সীমা বৃদ্ধি পেতে পারে। অতএব, ফলিক এসিড গ্রহণের পাশাপাশি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও সঠিক ধারণা রাখা উচিত।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড কত দিন খেতে হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আমাদের আজকের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url