সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায়
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার খরচ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নের শুরু হয় সঠিক পথ বেছে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
.
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায়
বাংলাদেশে সরকারিভাবে পাইলট হওয়া অনেকের স্বপ্ন। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে হলে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ ও যোগ্যতা অনুসরণ করতে হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় ব্যাখ্যা করা হলো।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনঃ সরকারি পাইলট হতে হলে প্রথম ধাপ হলো সায়েন্স বিভাগ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ভালো ফল করা। বিশেষ করে ফিজিক্স ও ম্যাথমেটিক্সে ভালো গ্রেড থাকা আবশ্যক। সাধারণত জিপিএ ৫.০০ থাকা সবচেয়ে উপযুক্ত। বয়স ১৬-২২ বছরের মধ্যে হলে সবচেয়ে ভালো।
- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে আবেদনঃ সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার সবচেয়ে নিশ্চিত পথ হলো বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সে (BAF) যোগ দেওয়া। প্রতি বছর “GD(P)” বা General Duties (Pilot) পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এই পদে আবেদন করতে হলে BAF এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন করতে হয়।
- বাছাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণঃ আবেদন করার পর আপনাকে কিছু ধাপে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে
- লিখিত পরীক্ষাঃ সাধারণত ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে।
- শারীরিক ফিটনেস টেস্টঃ দৌড়, বুকডানাসহ বিভিন্ন ফিজিক্যাল চেকআপ।
- চোখ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষাঃ চোখের দৃষ্টিশক্তি একদম সঠিক হতে হবে। রঙ চেনার সমস্যা থাকলে বাতিল হতে পারেন।
- ISSB (Inter Services Selection Board): এটি একটি চার দিনের পরীক্ষা, যেখানে প্রার্থীর নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ও মানসিক দৃঢ়তা যাচাই করা হয়।
- প্রশিক্ষণ গ্রহণঃ ISSB তে নির্বাচিত হলে আপনাকে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পাঠানো হবে। এখানে প্রায় ১ থেকে ১.৫ বছর মেয়াদি কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে বেসিক মিলিটারি ট্রেনিং, একাডেমিক এভিয়েশন ক্লাস, ফ্লাইট সিমুলেটর ট্রেনিং এবং বাস্তব উড়োজাহাজ চালনার প্রশিক্ষণ।
- কমিশন ও নিয়োগঃ প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করলে আপনি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কডেট অফিসার হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হবেন এবং সরকারিভাবে পাইলট হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন।
এই পথটি কঠিন, প্রতিযোগিতামূলক এবং সময়সাপেক্ষ হলেও, সঠিক প্রস্তুতি, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য থাকলে আপনি সহজেই একজন সফল সরকারি পাইলট হতে পারেন। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নকে বাস্তব করতে এখনই প্রস্তুতি শুরু করুন।
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার খরচ
বাংলাদেশে সরকারিভাবে পাইলট হতে চাইলে মূলত খরচের বিষয়টি প্রার্থীকে তেমনভাবে ভাবতে হয় না, কারণ এয়ার ফোর্সে নির্বাচিত হলে প্রায় সব ব্যয় রাষ্ট্র বহন করে। সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার খরচ বলতে এখানে মূলত পরীক্ষার প্রস্তুতি, যাতায়াত, প্রাথমিক মেডিকেল চেকআপ এবং আবেদন প্রক্রিয়ার সামান্য খরচই বোঝায়।
বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সে পাইলট হতে চাইলে শুরুতে যেসব ধাপে খরচ হতে পারে তা হলোঃ
আবেদন ফিঃ সাধারণত ১০০-২০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
পরীক্ষার প্রস্তুতির খরচঃ কোচিং না করলেও, অনেকে ISSB ও লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির বই, গাইড কিনে থাকেন। এতে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
মেডিকেল রিপোর্ট বা চেকআপঃ কেউ কেউ আগেই চোখ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিতে চান, এতে কিছু প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১০০০-২০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
যাতায়াত ও থাকাঃ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাছাই কেন্দ্রে যেতে আসতে, প্রয়োজনে হোটেল ভাড়া করতে হতে পারে, যেখানে ১০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
তবে একবার যদি আপনি নির্বাচিত হন, তাহলে প্রশিক্ষণকালীন সব খরচ, থাকা-খাওয়া এমনকি মাসিক ভাতা পর্যন্ত সরকার দিয়ে থাকে। তাই এটি একটি তুলনামূলক কম খরচে, অথচ সম্মানজনক ও স্থায়ী ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ।
মেয়েদের পাইলট হওয়ার ওজন
বর্তমানে মেয়েরাও সমানতালে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে, আর পাইলট হওয়া তাদের জন্য এখন শুধুই স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। তবে এই পেশায় আসতে হলে কিছু শারীরিক যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হয়, যার মধ্যে ওজন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মেয়েদের পাইলট হওয়ার জন্য ওজন নির্ধারণ করা হয় তাদের উচ্চতা ও বয়সের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট BMI (Body Mass Index) অনুযায়ী।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সরকারিভাবে পাইলট হতে চাইলে মেয়েদের জন্য গড় উচ্চতা হতে হয় কমপক্ষে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি (১৫৭ সেন্টিমিটার)। এই উচ্চতার ক্ষেত্রে আদর্শ ওজন সাধারণত ৪৮ থেকে ৫৪ কেজির মধ্যে হওয়া উচিত। উচ্চতা যদি এর চেয়ে বেশি বা কম হয়, তবে ওজনও সে অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। অতিরিক্ত ওজন বা অত্যধিক কম ওজন হলে মেডিকেল পরীক্ষায় বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়া, চোখের দৃষ্টিশক্তি, রক্তচাপ, হার্টবিটসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সূচকও ভালো থাকতে হয়। তাই যারা জানতে চান সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় এবং মেয়েদের পাইলট হওয়ার ওজন তাদের জন্য পরামর্শ হলো, শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখা এবং মেডিকেল ফিটনেসের প্রতি যত্নশীল থাকা।
নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত ঘুম একজন মেয়েকে শুধু যোগ্য পাইলট নয়, বরং আত্মবিশ্বাসী একজন নেতৃত্বে পরিণত করতে পারে। তাই আকাশ ছোঁয়ার আগে নিজের শরীরকেই আগে প্রস্তুত করুন।
পাইলট হতে হলে কোথায় পড়তে হবে
সরকারিভাবে পাইলট হতে চাইলে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ নিতে হবে, যেগুলো সরাসরি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অধীনে পরিচালিত হয়। অনেকে মনে করেন সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েই পাইলট হওয়া সম্ভব, কিন্তু বাস্তবতা হলো পাইলট হতে কোথায় পড়তে হবে সেটা নির্ভর করে আপনি সরকারি না বেসরকারি পথ বেছে নিচ্ছেন তার উপর।
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় এবং পাইলট হতে হলে কোথায় পড়তে হবে এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, সরকারি পাইলট হতে হলে প্রথমে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সের “GD(P)” পদের জন্য আবেদন করতে হবে। নির্বাচিত হলে, আপনাকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে Bangladesh Air Force Academy (BAFA), যেটি অবস্থিত যশোরে। এই একাডেমিতে প্রাথমিক মিলিটারি ট্রেনিং ও এভিয়েশন সংক্রান্ত একাডেমিক শিক্ষা দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে প্রার্থীরা বিভিন্ন সময় Flying Training School (FTS) এবং Initial Flying Training School (IFTS)-এ গিয়ে বাস্তব উড়োজাহাজ চালানোর অনুশীলন করে। এখানে কেবল একাডেমিক পড়াশোনা নয়, বরং কঠোর ফিজিক্যাল ট্রেনিং, লিডারশিপ ট্রেনিং এবং উড্ডয়ন সংক্রান্ত ব্যাকগ্রাউন্ডও শিখানো হয়।
সরকারিভাবে এইসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়, বরং প্রশিক্ষণকালীন সময় ভাতা পর্যন্ত দেওয়া হয়। তাই যারা সরকারি পথে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য এটি হতে পারে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও সাশ্রয়ী পথ।
পাইলট হওয়ার খরচ
পাইলট হওয়ার পথে খরচ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিশেষ করে যখন কেউ বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিতে চায়। তবে যারা সরকারিভাবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য এই খরচ তুলনামূলকভাবে একেবারেই সামান্য। সাধারণত বেসরকারি উড্ডয়ন স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে প্রায় ৪০-৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এই খরচের মধ্যে থাকে গ্রাউন্ড স্কুল, ফ্লাইট ট্রেনিং, ইউটিলিটি ফি, একাডেমিক কভারেজ ও আন্তর্জাতিক লাইসেন্স ফি।
অন্যদিকে, সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় এবং পাইলট হওয়ার খরচ জানতে হলে বুঝতে হবে যে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সের মাধ্যমে পাইলট হলে এই বিশাল খরচ থেকে আপনি পুরোপুরি মুক্ত থাকবেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে নির্বাচিত হলে আপনার প্রশিক্ষণ, থাকা-খাওয়া, ইউনিফর্ম, বই, মেডিকেলসহ যাবতীয় খরচ সরকার বহন করে। উপরন্তু, প্রশিক্ষণকালীন সময়ে আপনাকে একটি মাসিক ভাতা পর্যন্ত প্রদান করা হয়, যা পড়াশোনার পাশাপাশি আর্থিক চাপ কমায়।
তবে আবেদন প্রক্রিয়া, যাতায়াত, মেডিকেল রিপোর্ট ও প্রস্তুতির জন্য কিছু প্রাথমিক খরচ যেমন গাইড বই, প্রাইভেট কোচিং বা হোস্টেলে থাকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী পাইলট প্রশিক্ষণের ব্যয়ের তুলনায় এটি একেবারেই নগণ্য। সুতরাং, যারা খরচ কমিয়ে সম্মানজনক পেশায় আসতে চান, তাদের জন্য সরকারিভাবেই পাইলট হওয়াটা সবচেয়ে উপযুক্ত ও বাস্তবসম্মত পথ।
পাইলট এর বেতন কত
বাংলাদেশে একজন পাইলটের বেতন নির্ভর করে তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন, কত বছরের অভিজ্ঞতা আছে, এবং কোন ধরনের বিমান পরিচালনা করছেন তার উপর। বেসরকারি এয়ারলাইনে কাজ করা পাইলটদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা সরকারি পাইলটদের চেয়ে আলাদা হয়ে থাকে। তবে যারা সরকারিভাবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তারা সাধারণত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে (BAF) পাইলট হিসেবে নিয়োগ পান।
একজন নতুন কমিশনপ্রাপ্ত পাইলট অফিসার হিসেবে শুরুতে মাসিক বেতন প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে, যার সঙ্গে যুক্ত হয় রেশন, পোশাক ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা ও সরকারি বাসস্থানের সুবিধা। অভিজ্ঞতা ও পদোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এই বেতন ধাপে ধাপে বাড়ে এবং একজন স্কোয়াড্রন লিডার বা উইং কমান্ডারের বেতন পৌঁছাতে পারে ৭০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকারও বেশি।
পাশাপাশি, পাইলটদের জন্য রয়েছে ফ্লাইট ভাতা, মিশন ভাতা, এবং আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ বা দায়িত্ব পালন করলে অতিরিক্ত সুবিধা। যারা জানতে চান সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় এবং পাইলট এর বেতন কত, তাদের জন্য এটি একটি নিশ্চিত ও সম্মানজনক ক্যারিয়ার, যেখানে ভালো ইনকামের পাশাপাশি দেশসেবার সুযোগও রয়েছে। সুতরাং, শুধু আকাশে ওড়া নয়, একজন সরকারি পাইলট হতে পারা মানে হলো একটি স্থিতিশীল জীবন ও ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা।
মেয়েদের পাইলট হওয়ার যোগ্যতা
বর্তমানে বাংলাদেশে মেয়েরাও সরকারি পাইলট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পাচ্ছেন, এবং এজন্য রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অধীনে পাইলট হতে চাইলে মেয়েদের অবশ্যই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করতে হবে, যেখানে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত বিষয় থাকতে হবে। দুই পরীক্ষাতেই সর্বনিম্ন জিপিএ ৪.৫০ থাকা বাঞ্ছনীয়।
বয়সসীমা সাধারণত ১৬ থেকে ২২ বছরের মধ্যে হতে হয়। উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি এবং ওজন হতে হবে বয়স ও উচ্চতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দৃষ্টিশক্তি অবশ্যই ৬/৬ হতে হবে এবং রঙ চেনায় কোনো সমস্যা থাকা যাবে না। ফিজিক্যাল ফিটনেসের ক্ষেত্রেও মেয়েদের পুরুষদের মতোই মানদণ্ড পূরণ করতে হয়, যেমন দৌড়, বুকডানা, সাঁতার ইত্যাদি।
ISSB (Inter Services Selection Board) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক, যেখানে নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, মানসিক দৃঢ়তা ও দলগত কাজের দক্ষতা যাচাই করা হয়। এরপর নির্বাচিত হলে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। অনেকে ভাবেন, মেয়েদের জন্য হয়তো খরচ বেশি বা আলাদা।
বাস্তবতা হলো, সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার খরচ এবং মেয়েদের পাইলট হওয়ার যোগ্যতা দুটি ক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়ের জন্য কোনো ভিন্নতা নেই। প্রশিক্ষণ, থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য ব্যয় সম্পূর্ণভাবে সরকার বহন করে। তাই যোগ্যতা থাকলে মেয়েরাও অনায়াসেই পাইলট হিসেবে আকাশ ছুঁতে পারে।
মেয়েদের পাইলট হওয়ার উচ্চতা
বাংলাদেশে মেয়েদের জন্য সরকারি পাইলট হওয়ার সুযোগ এখন অনেক সহজলভ্য, তবে এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক যোগ্যতা থাকতে হয়। এর মধ্যে উচ্চতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মানদণ্ড। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে নারী পাইলট হিসেবে যোগ দিতে চাইলে ন্যূনতম উচ্চতা হতে হবে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি বা প্রায় ১৫৭ সেন্টিমিটার। এর কম হলে মেডিকেল পরীক্ষায় বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
উচ্চতার এই সীমা নির্ধারণ করা হয় মূলত ককপিটে বসে সঠিকভাবে কন্ট্রোল নেওয়ার সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য। কারণ, পাইলটকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও নিয়ন্ত্রণ প্যানেলে সহজে পৌঁছাতে হয়। অতিরিক্ত বেশি বা কম উচ্চতা দুটোই এই কার্যক্রমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেকেই ভাবেন, শুধু উচ্চতা হলেই হবে, কিন্তু আসলে উচ্চতার সঙ্গে ওজনের ভারসাম্য (BMI) ঠিক রাখতে হয়। তাই যারা পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তাদের উচিৎ শারীরিক ফিটনেস ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বজায় রাখা।
যারা জানতে চান সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় এবং মেয়েদের পাইলট হওয়ার উচ্চতা, তাদের জন্য বলা যায় যোগ্যতা ও উচ্চতা মিললে মেয়েরাও আজ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সফল পাইলট হতে পারছে। আর এই উচ্চতা যদি প্রাথমিকভাবে কিছুটা কমও হয়, তবে নিয়মিত ব্যায়াম ও স্ট্রেচিংয়ের মাধ্যমে উন্নতির সম্ভাবনা থাকে। আত্মবিশ্বাস থাকলে কোনো বাধাই বড় নয়।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আমাদের আজকের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url