নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়

নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, পেট ফাঁপার লক্ষণ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
নবজাতকের-পেট-ফাঁপা-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়
অনেক সময় নবজাতকের বিভিন্ন অনিয়মের কারণে পেট ফুলে নানা শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি করে। তাই আজকের পোস্টে নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব।

নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়

নবজাতককে নিয়ে নতুন বাবা-মায়েরা প্রায়ই চিন্তিত থাকেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একটি সাধারণ সমস্যা হল পেট ফাঁপা। ঘরোয়া উপায়ে নবজাতকের ফাঁপা পেট দূর করতে এবং এর লক্ষণগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আজকের পোস্টে আমরা যা কিছু জানবো তা হল- পেট ফাঁপা মানে কি, পেট ফাঁপার লক্ষণ, নবজাতকের পেট মোচড়ানো, নবজাতকের পেট ফাঁপার কারণ সম্পর্কে।

আরো জানব নবজাতকের পেট ফুলে গেলে করণীয়, নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি এ সকল বিষয়ের তথ্য সম্পর্কে। নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার জন্য কিছু সহজ ও নিরাপদ ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যেগুলি মায়েরা সহজেই অনুসরণ করতে পারেন। এই উপায়গুলো শিশুর জন্য সুরক্ষিত এবং তাদের অস্বস্তি কমাতে সহায়ক। নিম্নে নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
  • তিলের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করা একটি প্রচলিত উপায়। সামান্য গরম তিলের তেল দিয়ে শিশুর পেটের চারপাশে ভ্রান্তভাবে ম্যাসাজ করলে গ্যাস বের হওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং পেটের অস্বস্তি কমে।
  • হিংয়ের ব্যবহার গ্যাসের সমস্যা সমাধানে খুবই কার্যকর। সামান্য হিং গরম পানিতে মিশিয়ে শিশুর নাভির চারপাশে লাগালে দ্রুত গ্যাস বের হতে সাহায্য করে।
  • মায়ের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করাও নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদি মা মসলাযুক্ত বা গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার খায়, তবে তার দুধের মাধ্যমে শিশুর পেটে গ্যাস হতে পারে। তাই মায়ের খাবার নির্বাচনে সতর্ক থাকা উচিত।
  • গ্রিপ ওয়াটারও একটি ভালো ঘরোয়া উপায়। এটি বিশেষভাবে নবজাতকদের জন্য তৈরি হয় এবং গ্যাস কমাতে কার্যকরী।
  • পুদিনা পাতা বা আদার গুণ মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর পেট ফাঁপার সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। আদা বা পুদিনার রস শিশুর পেটের গ্যাস সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে।
  • এই ঘরোয়া উপায়গুলো বেশিরভাগ সময় কার্যকর প্রমাণিত হয়। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পেট ফাঁপার লক্ষণ

পেট ফাঁপা বা গ্যাসের সমস্যা নবজাতক এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়েরই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে নবজাতকের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ এটি তাদের জন্য অস্বস্তি, কান্না এবং খাওয়ার সমস্যা তৈরি করতে পারে। নবজাতকের পেট ফুলে যাওয়ার লক্ষণগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
  • পেট ফাঁপার প্রথম লক্ষণটি হল অস্বস্তি বা কান্না। শিশুটি যখন অতিরিক্ত গ্যাস বা পেট ফুলে যাওয়ার কারণে অসুস্থ বোধ করে। তখন সে বিরতিহীনভাবে কান্নাকাটি শুরু করতে পারে। এটি প্রায়ই খাবার খাওয়ার পর বা হজম প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে দেখা যায়।
  • পেট ফুলে যাওয়া হলো পেট ফাঁপা হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। যদি পেটের মধ্যে গ্যাস জমে যায়, তবে পেট ফুলে ওঠে এবং এটি স্পর্শ করলে শক্ত বা দৃঢ় মনে হয়। শিশুর পেট ফুলে যাওয়া শিশুর জন্য এক ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে সে নিরব বা অতিরিক্ত কান্না শুরু করতে পারে।
  • একটি সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে গ্যাসের আওয়াজ। পেটের মধ্যে গ্যাস জমে গেলে শিশুর পেটে গড়গড় বা ফোঁসফোঁস আওয়াজ বা তর্জন-গর্জন শব্দ হতে পারে। এই আওয়াজটি শিশুদের মধ্যে খুবই সাধারণ এবং এটি পেটের মধ্যে জমে থাকা গ্যাসের প্রভাবের কারণে হয়ে থাকে।
  • গ্যাস বের করার জন্য শিশুর ব্রপ করা (বেলচিং) একটি সাধারণ লক্ষণ। দুধ খাওয়ার পর শিশুর পেটের মধ্যে বাতাস ঢুকে গেলে তা বের করতে ব্রপিং করতে হতে পারে।
  • খাবার খেতে না চাওয়া বা দুধ খাওয়ার পর বিরতি নেওয়া হলো পেট ফাঁপা হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। নবজাতক গ্যাসের কারণে অস্বস্তি অনুভব করলে সে খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে বা খাওয়ার সময় বিরতি নিতে পারে। কখনও কখনও শিশুটি দুধ খাওয়ার পর তার পেটের এলাকায় চাপ অনুভব করে এবং তা কমাতে পারে না ফলে খাওয়া বন্ধ করতে পারে।
  • আরেকটি লক্ষণ হলো পা নাড়ানো বা পা টানানো। পেটে গ্যাস জমে গেলে শিশুরা প্রায়ই তাদের পা টানতে থাকে বা সাইকেলের মত নড়াচড়া করতে পারে। কারণ তারা পেটে অস্বস্তি অনুভব করে এবং গ্যাস বের করার চেষ্টা করে।
  • এই লক্ষণগুলোর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে শিশুর পেটে গ্যাস জমেছে এবং তাকে আরাম দেওয়ার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
অতএব উপরের আলোচনা থেকে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে, নবজাতকের পেট ফাঁপা লক্ষণগুলো সনাক্ত করা তাদের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি এই লক্ষণগুলোর প্রতি যত্নের সাথে খেয়াল করেন, তবে সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। যেমন বিশেষ করে বলা যায় শিশুকে সঠিকভাবে ব্রপিং করা বা গরম কাপড় দিয়ে পেট ম্যাসাজ করলে অনেক আরাম ও শান্তি অনুভব করবে।

পেট ফাঁপা মানে কি

পেট ফাঁপা বলতে পেট ফুলে যাওয়া, ভারী অনুভব করা, বা পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে যাওয়ার একটি অস্বস্তিকর অবস্থা বোঝায়। এটি শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সবার মধ্যেই হতে পারে। তবে নবজাতকের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা একটি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। যা শিশুর স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

নবজাতকের পেট ফাঁপা সাধারণত হজমতন্ত্রের অপরিপক্বতার কারণে হয়। এ সময় তাদের অন্ত্র গ্যাস জমে যাওয়া সহজ হয় এবং তা বের হতে সমস্যার সম্মুখীন হয়। ফলে পেট ফুলে যায়, শিশু কান্নাকাটি করে এবং খাওয়াতে সমস্যা হয়। পেট ফাঁপা শিশুদের জন্য অস্বস্তিকর ও কষ্টকর হতে পারে। এই অবস্থায় তারা শান্তভাবে ঘুমাতে পারে না এবং প্রায়ই বিরক্তি প্রকাশ করে।

পেট ফাঁপা দূর করতে সঠিক যত্ন ও ঘরোয়া উপায়ের সাহায্যে শিশুকে আরাম দেওয়া সম্ভব। এটি একটি অস্থায়ী সমস্যা হলেও প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিহ্নিত করে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি গুরুতর সমস্যায় রূপ নিতে পারে। তাই পেট ফাঁপা সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নবজাতকের পেট ফাঁপার কারণ

নবজাতকের পেট ফাঁপা হওয়ার পেছনে কয়েকটি বিশেষ কারণ রয়েছে। এগুলো জেনে রাখা খুবই জরুরি। তাহলে নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করা সহজ হবে। নিম্নে নবজাতকের পেট ফাঁপার কিছু কারণ সমূহ উল্লেখ করা হলো।
  • নবজাতকের পেট ফাঁপা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেক অভিভাবকই পরিলক্ষিত করেন। নবজাতকরা যে কারণে পেট ফাঁপে, তা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। আর তার মধ্যে বেশ কিছু কারণে পেট ফাঁপা হওয়া সাধারণ এবং স্বাভাবিকও হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর পেছনে আলাদা স্বাস্থ্যগত সমস্যাও থাকতে পারে।
  • নবজাতকের পেট ফাঁপার অন্যতম কারণ হল তাদের অগ্ন্যাশয়ের অস্বাভাবিক গ্যাসের উৎপত্তি। শিশুদের অগ্ন্যাশয় পুরোপুরি পরিপক্ব হয়নি, ফলে তারা খাওয়ার পর গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুর পেট ফুলে যেতে পারে এবং এটি অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। তবে গ্যাসের সমস্যা সাধারণত স্বাভাবিক এবং কয়েকদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়।
  • শিশুর খাবার খাওয়ার সময় বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে পেটে প্রবেশ করে। এই অতিরিক্ত বাতাস পেটে জমে গিয়ে পেট ফাঁপতে পারে। বিশেষ করে যদি শিশুটি দ্রুত দুধ খায় বা তার মুখে বোতলটি ঠিকভাবে না থাকলে পেটে বাতাস প্রবেশ করে। ফলশ্রুতিতে পেট ফাঁপে।
  • কিছু শিশুর হজমশক্তি কিছুটা দুর্বল থাকতে পারে। যার ফলে খাদ্য হজম হতে সময় বেশি লাগে এবং গ্যাসের সৃষ্টি হয়। এটি তাদের পেট ফাঁপার আরেকটি প্রধান কারণ। এই ধরনের সমস্যাগুলো সাধারণত বয়সের সঙ্গে কমে যায়। কারণ শিশুর হজমব্যবস্থা উন্নত হতে থাকে।
  • কিছু সময় দুধে থাকা ল্যাকটোজ বা দুধের অন্য কোনো উপাদান শিশুর শরীরে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। এটি শিশুর পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে এবং পেট ফাঁপাতে সাহায্য করতে পারে। দুধের পরিবর্তে অন্য কিছু খাবার প্রবর্তন বা দুধের ধরন পরিবর্তন করার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।
  • এছাড়া শিশুর স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা, যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্য কোনো পাচনতন্ত্রের সমস্যা থাকলে সেটাও পেট ফাঁপার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যখন শিশুর পেট পরিষ্কার না হয় তখন অতিরিক্ত গ্যাস জমে পেট ফাঁপে।
মোটকথা নবজাতকের পেট ফাঁপা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা শিশুর অন্যান্য অস্বস্তি সৃষ্টি করে, তাহলে অভিভাবকদের পেডিয়াট্রিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

নবজাতকের পেট মোচড়ানো

সাধারণত হজমের জটিলতা, গ্যাস বা কোলিকের কারণে নবজাতকের পেট মোচড়ানোর মতো সাধারণ সমস্যাটির সৃষ্টি হয়ে থাকে। নবজাতকরা তাদের হজম প্রক্রিয়া পুরোপুরি বিকশিত না হওয়ার কারণে প্রায়শই এই সমস্যায় ভোগে। পেট মোচড়ানোর সময় শিশু কান্নাকাটি করে, পা মুড়ে ফেলে এবং অস্বস্তি প্রকাশ করে। এটি সাধারণত খাওয়ার পর অতিরিক্ত গ্যাস জমা, ভুল পজিশনে দুধ খাওয়ানো বা খাবারের সঙ্গে বায়ু গ্রহণের কারণে হয়। মায়ের খাদ্যতালিকা শিশুর উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই মশলাদার খাবার, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি এ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সমাধানের জন্য শিশুকে কোলে নিয়ে আলতোভাবে পিঠে হাত বুলিয়ে বা সোজা রেখে বায়ু বের করার চেষ্টা করুন। উষ্ণ কাপড় দিয়ে পেট ম্যাসাজ করলেও আরোগ্য লাভ সম্ভব। সমস্যা তীব্র হলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সঠিক যত্নে এটি সাধারণত দ্রুত সমাধান হয়।

নবজাতকের পেট ফুলে গেলে করণীয়

নবজাতকের পেট ফুলে গেলে সেটি সাধারণত গ্যাস বা হজমের সমস্যার কারণে হতে পারে। যদিও এটি স্বাভাবিক একটি ঘটনা। নবজাতকের পেট ফাঁপার লক্ষণ দেখা দিলে তা উপেক্ষা করা উচিত নয়। নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় থেকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে অতি সহজেই শিশুকে আরাম দেওয়া সম্ভব।
  • শিশুকে খাওয়ানোর সময় যতটা সম্ভব বাতাস প্রবাহিত না হয় তা নিশ্চিত করুন। দুধ খাওয়ানোর পর শিশুকে একটু সময় ধরে সোজা অবস্থায় রাখুন বা তার পিঠে হালকা টোকা দিয়ে গ্যাস বের করার চেষ্টা করুন। শিশুকে খাওয়ানোর পর একটু সময় ধরে তাকে টেনে নেড়ে গ্যাস বের করার জন্য সাহায্য করতে পারেন।
  • শিশুকে উল্টো করে শুইয়ে বা কোমর দিয়ে হালকা নাচানোর মাধ্যমে পেটের গ্যাস বের করার চেষ্টা করতে পারেন। অনেক সময় শিশুর পেটে অস্বস্তি কাটানোর জন্য এই পদ্ধতিগুলি কার্যকরী হয়।
  • যদি শিশুর পেট ফাঁপার সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তাকে অতিরিক্ত যন্ত্রণায় ফেলছে, তবে পেডিয়াট্রিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। কখনো কখনো পেটে ফুলে যাওয়া অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য বা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের কারণে হতে পারে, যা চিকিৎসকের পরামর্শে সমাধান করা যেতে পারে।

নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি

নবজাতকের পেটে গ্যাস হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। যা অনেক অভিভাবকই পরিলক্ষিত করেন। শিশুর পেটে গ্যাস হলে তারা অস্বস্তি অনুভব করতে পারে এবং এটা তাদের কান্না বা বিরক্তির কারণ হতে পারে। পেট ফাঁপার লক্ষণ গুলোকে দ্রুত সনাক্ত করে নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় গ্রহণ করলে সমস্যা সহজেই সমাধান করা সম্ভব। তবে কোনো জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। শিশুদের এই সমস্যাটি সাধারণত অস্থায়ী এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে এটি সহজেই কমানো যায়।
  • শিশুর খাবার খাওয়ার সময় অতিরিক্ত বাতাস না যাওয়ার জন্য খাওয়ানোর পদ্ধতি ঠিক করা জরুরি। আপনার শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর সময়ে নিশ্চিত করুন যে বোতলটি সঠিকভাবে রাখা হয়েছে এবং যাতে বাতাস প্রবাহিত না হয়। শিশুকে খাওয়ানোর সময় ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে তাকে উল্টো করে ধীরে ধীরে শোয়ানো উচিত।
  • শিশুকে খাওয়ানোর পর ভালোভাবে ডাকার জন্য পেটে চাপ দিতে পারেন বা তাকে কোমর দিয়ে হালকাভাবে নাচাতে পারেন। এতে করে পেটে জমে থাকা গ্যাস বের হতে সাহায্য হয়। শিশুর পিঠে হালকা ভাবে টোকা দেওয়ার মাধ্যমে গ্যাস বের করার চেষ্টা করতে পারেন।
  • দুধের পরিবর্তে অন্য কোনো খাবারের প্রতি শিশুর অ্যালার্জি বা সমস্যা থাকলে, সেগুলি নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে। যদি শিশুর পেটে গ্যাসের সমস্যা বেশী থাকে, তবে দুধের ধরন পরিবর্তন করতে হতে পারে।
  • শেষে যদি শিশুর পেটে গ্যাস সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী বা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক হলে পেডিয়াট্রিক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
নবজাতকের পেট ফাঁপা সমস্যা সাধারণ হলেও এটি নিয়ে বাবা-মায়েদের চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। নবজাতকের আরামের জন্য সঠিক যত্ন এবং খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ। তাই নবজাতকের পেট ফাঁপা সমস্যা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে আপনার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করুন।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে পেট ফেঁপে যাওয়ার লক্ষণ, কারণ এবং নবজাতকের পেট ফুলে গেলে নিরাময়ের উপায় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url