নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয়
নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে ঋতুর পরিবর্তনে তাদের বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই আজকের পোস্টে নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব।
.
নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয়
নবজাতক শিশুর সর্দি-কাশি হলে এটি মায়েদের জন্য একেবারে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ তাদের শারীরিক ক্ষমতা এখনও পুরোপুরি বিকশিত হয়নি। সর্দি বা কাশি শিশুদের মধ্যে সাধারণ একটি সমস্যা হলেও নবজাতকের ক্ষেত্রে এটি বেশিরভাগ সময় মায়ের কাছে বেশ উদ্বেগজনক হতে পারে। নবজাতকের শ্বাসনালী খুবই সরু, তাই সর্দি-কাশি হলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণর
- যদি নবজাতকের সর্দি বা কাশি থাকে, তাহলে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। শ্বাসকষ্ট, শ্বাস নিতে সময় বেশি লাগা বা গলা দিয়ে ঝাঁঝালো আওয়াজ শোনা গেলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- সাধারণ সর্দি বা কাশি হলে শিশুকে কিছু সহজ উপায়ে আরাম দেওয়া যেতে পারে। প্রথমে শিশুর নাক পরিষ্কার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। নরম নোজাল সুইপার বা ন্যাজাল ড্রপ ব্যবহার করে শিশুর নাক পরিষ্কার করা উচিত যাতে শ্বাস নিতে সহজ হয়।
- শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার যেমন দুধ বা জল দিতে হবে, যাতে শরীরে জলশূন্যতা না হয়। তবে কোনও ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিন বা কাশি-সর্দির ওষুধ শিশুকে দেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কেননা এসব ওষুধ নবজাতকের জন্য সঠিক নাও হতে পারে।
- ঘরের পরিবেশে আর্দ্রতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। শুষ্ক বাতাস নবজাতকের শ্বাসনালীতে আরও কষ্টকর হতে পারে। তাই আর্দ্রতা বজায় রাখতে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে।
- শিশুর ঘর পরিষ্কার রাখা এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ ধোঁয়া শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। একইভাবে শিশুকে ঠাণ্ডা বা খুব গরম পরিবেশে না রাখাই ভালো।
- আর নবজাতকের সর্দি-কাশির সাথে উচ্চ তাপমাত্রা, অতিরিক্ত অস্বস্তি, খাওয়া বন্ধ করা বা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক। সর্দি-কাশি যদি বেশিদিন স্থায়ী হয়, তবে তা কোনো সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে, যা চিকিৎসা প্রয়োজন।
নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি
নবজাতকের পেটে গ্যাস হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা প্রায় প্রতিটি শিশুর ক্ষেত্রেই দেখা যায়। নবজাতকরা খাবার পর বা ঘুমানোর সময় পেটে গ্যাসের কারণে অস্বস্তি অনুভব করতে পারে, যার ফলে তারা কান্না করে বা অস্থির হতে পারে। পেটে গ্যাস হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন, অপরিপক্ব পাচনতন্ত্র, বাওয়েল মুভমেন্ট সঠিক না হওয়া বা মায়ের দুধের পাশাপাশি বাতাস ঢুকে যাওয়া। তবে এই সমস্যাটি বেশিরভাগ সময় নিজেই চলে যায়। তবে কিছু সহজ উপায় আছে যা নবজাতকের গ্যাস সমস্যায় উপকারে আসতে পারে।
- নবজাতকের খাওয়ানোর সময় অনেক শিশুর পেটে বাতাস ঢুকে যায়, যা গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য খাওয়ানোর পর শিশুকে উল্টে দিয়ে পিঠে হালকা মৃদু চাপ দিয়ে তাকে ডাকার আওয়াজ বের করানোর চেষ্টা করুন। এতে শিশুর পেটে জমে থাকা বাতাস বের হয়ে যায় এবং সে কিছুটা আরাম পায়।
- শিশুর ঘুমানোর অবস্থানেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কিছু শিশুরা পেটে গ্যাস জমে থাকার কারণে বেশি অসুবিধায় পড়ে। আপনি যদি তাকে ঘুমানোর সময় সামান্য পেট ওপর দিকে রেখে শোয়ান, তবে গ্যাস বের হতে সহজ হয়।
- শিশুর পেটের গ্যাস কমাতে গ্যাস ড্রপ বা অ্যান্টি-গ্যাস মেডিসিন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এসব ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শিশুর জন্য কোনও ধরনের ঔষধ দেওয়ার আগে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। কারণ তাদের শরীর খুবই সংবেদনশীল।
- গ্যাস সমস্যার আরেকটি সমাধান হলো শিশুকে ম্যাসাজ করা। শিশুর পেটের চারপাশে আঙ্গুল দিয়ে সোজা বা গোলাকৃতিতে ম্যাসাজ করলে গ্যাস বের হওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হয়। এটি নবজাতকের জন্য আরামদায়ক হতে পারে এবং তারা শান্তি অনুভব করে।
- মায়ের ডায়েটও শিশুর গ্যাস সমস্যা নিয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। যদি মা গ্যাস উৎপন্নকারী খাবার খান, তবে শিশুর পেটে গ্যাস জমে যেতে পারে। তাই মায়ের উচিত খাবার নির্বাচনে সতর্ক থাকা।
এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে গ্যাস সমস্যা খুব বেশি মাত্রায় হলে বা যদি শিশুর অসুবিধা বাড়ে সেক্ষেত্রে নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি সম্পর্কে আপনারা এখন জানেন। দ্রুত চিকিৎসকের নিকট নেওয়া উচিত। এরপরে আপনাদের সাথে নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
শীতে নবজাতকের যত্ন
শীতের সময় নবজাতক শিশুর যত্নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। শিশুর শরীর তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারছে কি না, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তাপমাত্রার হেরফেরের কারণে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের অবস্থা পরিবর্তিত হতে পারে। শিশুর জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো।
- শীতে নবজাতকের যত্ন নেওয়া মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কেননা শীতকাল শিশুদের জন্য বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। নবজাতকের শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনো সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়নি, তাই শীতে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
- নবজাতককে গরম রাখার জন্য সঠিক পোশাক পরানো উচিত। অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা থেকে তাকে রক্ষা করতে হলে উলের পোশাক, মোজা, টুপি এবং গ্লাভস পরানো ভাল। শিশুর তাপমাত্রা ৩৬.৫-৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকা উচিত। তাই সঠিক তাপমাত্রায় তাকে ঢেকে রাখুন।
- অতিরিক্ত গরমও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পোশাকের সংখ্যা ও তাপমাত্রা সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে হবে।
- নবজাতকের ত্বক শীতে অতিরিক্ত শুষ্ক হতে পারে। যা চামড়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই শিশুদের ত্বকে নরম এবং শীতকালীন ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। শিশুর মুর্ছানো বা ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে হবে।
- শিশুকে শীতে সর্দি-কাশির ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে তাদের ঘরটি পরিষ্কার ও উষ্ণ রাখা উচিত। ঠাণ্ডা ও শুষ্ক বাতাস শ্বাসতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় হিসেবে ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে।
- নবজাতককে শীতকালীন জ্বর বা ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে টিকা নেওয়া এবং শিশু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে ঠাণ্ডা পানি বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পরিবেশ থেকে দূরে রাখা উচিত।
শেষে শীতে নবজাতককে যথেষ্ট পরিমাণে দুধ বা তরল খাবার দেওয়া উচিত। যাতে তাদের শরীরে পানির অভাব না হয়। এই সময়ে তাদের পেটের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং তাদের আরামদায়ক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সর্দি কাশি কেন হয়
শীতকাল হল এমন একটি সময় যখন নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি আমাদের আরো বেশি মনোযোগ দিতে হয়। এই মৌসুমে তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং পরিবেশের কারণে শিশুর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য এবং পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের আজকের পোস্টে আমরা যা কিছু জানবো তা হল- শীতে নবজাতকের যত্ন, নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি, নবজাতক শিশুর স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত, নবজাতকের জ্বর হলে করণীয়, নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয়, নবজাতকের টিকা দেওয়ার পর জ্বর হলে করণীয় এ সকল বিষয় সম্পর্কে। তাছাড়াও সর্দি-কাশি সাধারণত ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণেও হয়ে থাকে।
বিশেষ করে রাইনোভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা এই সংক্রমণ ঘটে থাকে। এই ভাইরাসগুলি শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে গলা, নাসিকা ও ফুসফুসে সংক্রমণ সৃষ্টি করে। যার ফলে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এছাড়াও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, এলার্জি, মাল্টিপল ভাইরাস বা ধোঁয়া, ধূলিকণা বা নির্দিষ্ট রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা সর্দি-কাশির কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, শরীরের দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং দীর্ঘ সময় এয়ার কন্ডিশনারের নিচে থাকা থেকেও সর্দি-কাশি হতে পারে। সর্দি-কাশি সাধারণত ভাইরাল সংক্রমণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ বা অন্য কোনও রোগের উপসর্গও হতে পারে। নিয়মিত হাত ধোয়া, সঠিক পুষ্টি এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সহায়ক।
নবজাতক শিশুর স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত
নবজাতকের জ্বর একটি চ্যালেঞ্জিং সমস্যা হতে পারে। কারণ এটা শিশুর শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার দ্রুত পরিবর্তন থেকে হয়ে থাকে। নবজাতক শিশুর স্বাভাবিক তাপমাত্রা সাধারণত ৩৬.৫ থেকে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৭.৭ থেকে ৯৯.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এর মধ্যে থাকে। এর চেয়ে বেশি বা কম তাপমাত্রা শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে এবং এর জন্য দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শিশুর তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার করা উচিত। নবজাতকের তাপমাত্রা মাপার সবচেয়ে সঠিক উপায় হল তাপমাত্রা মাপার ডিজিটাল থার্মোমিটার বা ইনফ্রারেড থার্মোমিটার ব্যবহার করা, যা মুখ, গলা বা পায়ে মাপা যায়। যদি নবজাতকের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বা তার বেশি হয়, তাহলে তা জ্বর হিসেবে গণ্য করা হয় এবং চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
আবার যদি তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এর নিচে চলে যায়, তবে তা হাইপোথার্মিয়া বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডার লক্ষণ হতে পারে। যা খুবই বিপজ্জনক এবং নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় চিকিৎসাগুলো দেয়া প্রয়োজন। নবজাতকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক পোশাক পরানো এবং ঘরের তাপমাত্রা নিয়মিত পর্যালোচনা করা উচিত।
নবজাতকের জ্বর হলে করণীয়
নবজাতকের জ্বর হলে এটি সাধারণত চিন্তার বিষয় হতে পারে, কারণ তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না। তবে নবজাতকের জ্বরের ক্ষেত্রে কিছু সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন যাতে শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে। যদি নবজাতকের তাপমাত্রা ১০০.৪°F (৩৮°C) বা তার বেশি হয়, তাহলে তা জ্বর হিসেবে গণ্য হবে।
প্রথমেই জ্বর মাপার জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার করা উচিত। নবজাতকের জন্য ডিজিটাল বা ইনফ্রারেড থার্মোমিটার সবচেয়ে নিরাপদ। জ্বর পরিমাপের পর, যদি তাপমাত্রা বেশি হয়, তবে শিশুকে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ত্বক মুছানো বা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ফ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে নবজাতকের জন্য কোন ধরনের ওষুধ (যেমন প্যারাসিটামল) দেয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এক্ষেত্রে নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় বিষয় সমূহের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া শিশুকে বেশি পানি বা তরল খাবার দেওয়া উচিত। যাতে তারা ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা পায়। কিছু ক্ষেত্রে জ্বরের সাথে অন্যান্য লক্ষণ যেমন অস্বস্তি, খাওয়া না চাওয়া বা অতি কাঁন্না দেখা দিলে তা আরও গুরুতর অবস্থার ইঙ্গিত দিতে পারে এবং এই পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শিশুর শরীরের তাপমাত্রা ১০১°F (৩৮.৩°C) বা তার বেশি হলে বা যদি জ্বর বেশিদিন স্থায়ী হয়, তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। নবজাতকের জন্য জ্বর সাধারণত কোন গুরুতর সমস্যার প্রমাণ হতে পারে তাই দ্রুত প্রতিকার গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
নবজাতকের টিকা দেওয়ার পর জ্বর হলে করণীয়
নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় এবং নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি বিষয়গুলো নিয়ে যত্নশীল হওয়া মা-বাবার দায়িত্ব। নবজাতকের টিকা দেওয়ার পর জ্বর হওয়া একটি সাধারণ বিষয়। যা অনেক সময় টিকার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যায়। তবে টিকা দেওয়ার পর জ্বর হলে কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত।
- প্রাথমিক অবস্থাতে শিশুর তাপমাত্রা নিয়মিত মাপা উচিত। সাধারণত টিকা দেওয়ার পর ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রা হলে তা জ্বর হিসেবে গণ্য হয়। যদি তাপমাত্রা বেশি থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- জ্বর কমানোর জন্য কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। শিশুকে হালকা গরম পানি দিয়ে স্নান করানো বা ঠাণ্ডা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। তবে, খুব ঠাণ্ডা বা গরম পানি ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ তা শিশুর শরীরের জন্য অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে।
- শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া উচিত এবং তাকে পর্যাপ্ত পানি বা দুধ খাওয়ানো উচিত। শিশুর শরীরে জলশূন্যতা রোধে তরল খাবারের পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন।
- যদি জ্বরের পাশাপাশি অন্য কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ যেমন অতিরিক্ত কান্না, খাওয়ার অস্বীকার, ত্বকে দাগ বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। টিকা দেওয়ার পর এই ধরনের লক্ষণগুলো গুরুতর সমস্যা হতে পারে।
শেষ কথায় নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়া একটি গুরুতর দায়িত্ব। যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে প্রয়োজন সঠিক পদক্ষেপ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ। শীতকালে বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত এবং সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। এছাড়া নিয়মিত টিকা দেওয়ার মাধ্যমে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা সম্ভব। যা তাদের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করে।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে নবজাতক শিশুর শীতে যত্ন, গ্যাস, জ্বর এবং সর্দি কাশি সমস্যার মোকাবেলা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url