জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয়
জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশনের নাম সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
জন্মনিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য হলো পরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ না হওয়া নিশ্চিত করা। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
.
জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয়
জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধের বা ইনজেকশনের দেবার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম আছে। ভুল সময়ে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা জীবনে বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন নেয়ার সিদ্ধান্ত একান্ত ব্যক্তিনির্ভর হয়ে থাকে। এটা বিবাহিত দম্পতির পরিকল্পনা অনুযায়ী দিয়ে থাকেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।
- হরমোনাল ইনজেকশনঃ প্রতি মাসে বা প্রতি ৩ মাসে একবার দিতে হয়।
- একবার ইনজেকশন দেওয়ার পর এটি দীর্ঘ সময় কার্যকরী থাকে, তাই একবার ইনজেকশনের পর সারা বছর গর্ভধারণ প্রতিরোধ হতে থাকে।
- জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন হিসেবে আর আই এস ইউ জি নিতে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার সে ক্ষেত্রে বিবেচনা করে দেখবেন যে শরীরে এই ইনজেকশনটি নেয়ার সক্ষমতা রয়েছে কিনা।
- ইনজেকশন দেওয়ার জন্য একটি দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শ এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন, কারণ এই ধরনের পদ্ধতিতে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ঝুঁকি থাকতে পারে।
- ইনজেকশন দেওয়ার আগে এবং পরে শরীরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষ করে পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোনও সমস্যা থাকলে।
এই পদ্ধতিগুলি এখনও বিশ্বব্যাপী উন্নয়নশীল এবং পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে, তাই এটি ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশনের নাম
পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন একটি নতুন ধরনের পদ্ধতি, যা বর্তমানে গবেষণাধীন এবং কয়েকটি দেশে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি মূলত পুরুষদের জন্য হরমোনাল পদ্ধতি, যা শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ করে গর্ভধারণ প্রতিরোধ করে। জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় তা নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক স্বাস্থ্য সক্ষমতা কতটুকু এবং সে গ্রহণ করতে উপযুক্ত কিনা।
যদি কখনো এমন হয় যে দম্পতিদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র স্ত্রীর শারীরিকভাবে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম নন সে ক্ষেত্রে পুরুষদের ইঞ্জেকশন নেয়ার জন্য অগ্রসর হওয়া উচিত। বর্তমানে পুরুষের জন্য ব্যবহৃত হয় ইনজেকশন। এটি নতুন এবং অভিনব একটি পদ্ধতি। পুরুষের জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন এর নাম Vasalgel এবং "RISUG" (Reversible Inhibition of Sperm Under Guidance)।
এটি শুক্রনালির ভিতরে একটি বিশেষ গেমিকোলার জেল ইনজেক্ট করা হয়, যা শুক্রাণুর গতিশীলতা বন্ধ করে দেয়। এছাড়া, কিছু গবেষণায় হরমোনাল ইনজেকশন এর ব্যবহারের চেষ্টা চলছে, যেমন টেস্টোস্টেরনের উচ্চ মাত্রা ব্যবহার করা, যা শুক্রাণু উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কত প্রকার
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, সামাজিক অবকাঠামো গত ও আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে। জন্ম নিয়ন্ত্রন সম্পর্কে সবার জ্ঞান থাকা জরুরী। জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি প্রধানত তিন প্রকারের।
স্থায়ী পদ্ধতিঃ গর্ভধারণ স্থায়ী ভাবে বন্ধ করতে ব্যবহৃত পদ্ধতিকে স্থায়ী পদ্ধতি বলা হয়। এই পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ স্থায়ী হয় এবং সাধারণত সন্তান ধারণের সক্ষমতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। উদাহরণ: নারীদের টিউবেকটমি (ফ্যালোপিয়ান টিউব বাঁধা)। পুরুষদের ভ্যাসেকটমি (বীর্যনালী কেটে দেওয়া)।
- স্ত্রীদের জন্য বন্ধ্যত্ব (Tubal ligation): জরায়ুর ডিমনালীগেশন বা বন্ধ করে দেয়া।
- পুরুষদের জন্য বন্ধ্যত্ব (Vasectomy): শুক্রনালির বন্ধ করে দেয়া।
অস্থায়ী পদ্ধতিঃ ব্যারিয়ার পদ্ধতি যৌনাঙ্গের মধ্যে শারীরিক বাধা সৃষ্টি করে যাতে শুক্রাণু মাটিতে না পৌঁছাতে পারে। এই পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কার্যকর থাকে। উদাহরণ: কনডম (পুরুষ ও মহিলা)। গর্ভনিরোধক বড়ি, গর্ভনিরোধক ইনজেকশন (যেমন,ডিপোপ্রোভেরা),ইমপ্ল্যান্ট(গর্ভনিরোধকরড),আইইউডি(IUD)বা কপার টি। জন্মনিয়ন্ত্রণ প্যাচ।ভ্যাজাইনাল রিং।
- কন্ডোম: পুরুষ বা মহিলার জন্য কন্ডোম ব্যবহার করা।
- ডায়াফ্রাম: একটি প্লাস্টিক বা রাবারের ঢাকনা যা যোনিতে স্থাপন করা হয়।
প্রাকৃতিক পদ্ধতিঃ প্রাকৃতিক পদ্ধতি শারীরিক বা প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভধারণ প্রতিরোধ করে। এই পদ্ধতিতে কোন রাসায়নিক বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় না, বরং স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণ এড়ানো হয়। উদাহরণ: মাসিক চক্র পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি (Ovulation Method)।সহবাস এড়ানো (Safe Period Method)। সহবাসের সময় নির্ধারণ পদ্ধতি (Withdrawal Method)।
- ক্যালেন্ডার পদ্ধতি: মাসিক চক্রের হিসাব করে উর্বর সময় নির্ধারণ এবং এই সময়ের মধ্যে যৌনসম্পর্ক এড়ানো।
- আবস্তি পদ্ধতি (Coitus interruptus): যৌন সম্পর্কের সময় পুরুষের সাময়িক নির্গমন বন্ধ করা।
- শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ: ঋতুকালীন তাপমাত্রার পরিবর্তন দেখে উর্বর সময়ের পূর্বাভাস দেওয়া।
প্রতিটি পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে, তাই এটি নির্বাচন করার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণ এর অন্যান্য পদ্ধতি এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় তা জানাটাও অত্যাবশ্যক। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নে আলোচনা করা হলো।
হরমোনাল পদ্ধতিঃ এগুলি হরমোনের মাধ্যমে গর্ভধারণ প্রতিরোধ করে।
- পিল (oral contraceptives): দৈনিক গর্ভনিরোধক পিল সেবন।
- ইঞ্জেকশন: প্রতি ৩ মাস পরপর হরমোন ইনজেকশন নেওয়া।
- প্যাচ: ত্বকে লাগানো হরমোনের প্যাচ, যা নিয়মিত হরমোন সরবরাহ করে।
- ইমপ্ল্যান্ট: ত্বকের নিচে ছোট একটি হরমোন ইমপ্ল্যান্ট স্থাপন করা।
ইন্টার-উটেরাইন ডিভাইসঃ একটি ছোট ডিভাইস, যা জরায়ুতে স্থাপন করা হয় এবং গর্ভধারণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি দু'ধরণের হতে পারে-
- Copper IUD: তামার তৈরি একটি ডিভাইস, যা শুক্রাণুর চলাচল বাধা দেয়।
- Hormonal IUD: হরমোন সরবরাহ করে, যা ডিম্বাণু মুক্তি আটকায় এবং জরায়ুতে শুক্রাণুর প্রবেশ প্রতিরোধ করে।
এছাড়াও কিছু পদ্ধতি যেমন জরায়ুর ক্যানেল ব্লক করা বা বিভিন্ন অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যায়।
পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন এর সুবিধা
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এমন প্রক্রিয়া, যা এক বা একাধিক উপায়ে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় বা বন্ধ করে। তাছাড়া একজন ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীরা দম্পতির জীবনযাপন ও স্বাস্থ্য অনুযায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতির কোনটি ব্যবহার করা উচিত এবং যদি ইনজেকশন নিতে হয় অর্থাৎ জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় বিবেচনা করে থাকেন। পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন এর সুবিধা সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
- স্বল্পমেয়াদী এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য: এটি পুনরায় reversibly (অর্থাৎ পুনরুদ্ধারযোগ্য) হতে পারে, যেহেতু ইনজেকশন বন্ধ করলে পুরুষের ফার্টিলিটি (সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা) ফিরে আসে।
- পুরুষের জন্য নতুন বিকল্প: মহিলাদের জন্য প্রচলিত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলির পাশাপাশি এটি পুরুষদের জন্য একটি নতুন বিকল্প হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব: একবার ইনজেকশন দেওয়া হলে, এটি দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল প্রদান করতে পারে, এমনকি কয়েক মাস বা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কার্যকর হতে পারে।
- হরমোনাল প্রভাব কম: অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য হরমোনাল ইনজেকশনটি মহিলাদের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না, তবে কিছু ক্ষেত্রে সামান্য প্রভাব থাকতে পারে।
পুরষের জন্ম নিয়ন্ত্রনের অসুবিধা
পুরুষদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের বিকল্পগুলি এখনও উন্নতির পথে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও কার্যকর এবং সুবিধাজনক পদ্ধতি পাওয়া যেতে পারে। নিম্নে পুরষের জন্ম নিয়ন্ত্রনের অসুবিধা গুলো উল্লেখ করান হলো।
- গবেষণার পর্যায়েঃ এটি এখনও কিছু দেশে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং সম্পূর্ণভাবে বাজারে উপলব্ধ নয়। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
- প্রতি ইনজেকশনের খরচঃ কিছু ইনজেকশন অত্যন্ত ব্যয়বহুল হতে পারে এবং এটিকে পুনরায় দেওয়ার জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হতে পারে।
- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে হরমোনাল ইনজেকশন বা RISUG এর কারণে অল্প কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যেমন অস্থায়ী যৌন শক্তি কমে যাওয়া বা শারীরিক অস্বস্তি।
- প্রতিস্থাপন বা বন্ধ করার সময় কিছু সমস্যাঃ ইনজেকশনটি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চাইলে কয়েক মাস সময় নিতে পারে, তাই তাৎক্ষণিক ফলাফল আশা করা যায় না।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন দেয়ার নিয়ম
পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন বা *RISUG* (Reversible Inhibition of Sperm Under Guidance) এবং অন্যান্য ধরনের হরমোনাল ইনজেকশনগুলি বর্তমানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে, এবং এটি অনেক দেশে এখনও সাধারণভাবে উপলব্ধ নয়। তবে, বর্তমানে যেসব পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলি সাধারণত বিশেষ চিকিৎসকের অধীনে দেওয়া হয়। নিম্নে কিছু সাধারণ নির্দেশনা দেওয়া হলো।
RISUG (Vasalgel) ইনজেকশন দেওয়ার নিয়মঃ
প্রক্রিয়াঃ RISUG ইনজেকশনটি শুক্রনালিতে একটি বিশেষ গেমিকোলার জেল ইনজেক্ট করার মাধ্যমে কাজ করে। এটি শুক্রাণু নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
দান পদ্ধতিঃ এটি একটি একক ইনজেকশন, যা একটি ছোট সূঁচ দিয়ে পুরুষের স্ক্রটাম (অণ্ডকোষ) এর নীচে শুক্রনালির ভেতরে ইনজেক্ট করা হয়। ইনজেকশনটি স্থানীয় অ্যানেস্থেশিয়া (নামানো) দিয়ে দেওয়া হয়।
সময়ঃ একবার ইনজেকশন দেওয়ার পর এটি ১০ বছর বা তার বেশি সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকতে পারে, তবে যদি প্রয়োজন হয়, এটি দ্রুত উলটানো বা বাতিল করা যেতে পারে।
হরমোনাল ইনজেকশন
প্রায় ভিন্ন ভিন্ন কারণে বেশিরভাগ নতুন দম্পতিরা অনেক সময় সন্তান নেয়ার বিষয়ে একটু দেরিতেই চিন্তা বা ভাবতে চান। আবার যাদের দুই তিনটা সন্তান আছে তারা অনেক সময় বাচ্চা নিতে চান না সে ক্ষেত্রেও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন।
জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় তা দম্পতি সন্তান নিতে ইচ্ছুক কি না এটার ক্ষেত্রেও লক্ষনীয়। জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মহিলা এবং পুরুষ উভয়েই ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। হরমোনাল ইনজেকশন (যেমন টেস্টোস্টেরনের ইনজেকশন) পুরুষের শুক্রাণু উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এটি সাধারণত প্রতিমাসে অথবা প্রতি ৩ মাস পরপর দেওয়া হয়, তবে কিছু গবেষণা বা পরীক্ষা এই পদ্ধতিকে বিভিন্ন সময়ের মধ্যে ব্যবহার করছে।
প্রদান পদ্ধতিঃ এই ইনজেকশনটি সাধারণত ত্বকের নিচে বা পেশিতে ইনজেক্ট করা হয়।
সময়ঃ হরমোনাল ইনজেকশন প্রতি ১ মাস অথবা প্রতি ৩ মাসে দেওয়া হতে পারে, নির্ভর করে এটি কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং কী ধরনের ইনজেকশন এটি।
সোমাজেক্ট ইনজেকশন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
সোমাজেক্ট ইনজেকশন(Somaject) একটি পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণের ইনজেকশন, যা বিশেষত হরমোনাল পদ্ধতিহিসেবে কাজ করে। এটি পুরুষের শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ করতে সহায়ক হয়। তবে, যেহেতু এটি হরমোনাল পদ্ধতি, তাই এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। এই ইনজেকশনটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন বা অন্যান্য প্রজনন হরমোনের সাহায্যে শুক্রাণু উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। সোমাজেক্ট ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করতে পারে। তবে, সাধারণত কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যেগুলি নিম্নরূপ।
- পুরুষের টেস্টোস্টেরন স্তরের পরিবর্তন হতে পারে, যার ফলে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। কিছু পুরুষের মধ্যে যৌন উত্তেজনা বা ইচ্ছা কমে যেতে পারে।
- হরমোনের কারণে মুড সুইং বা মেজাজ পরিবর্তন দেখা দিতে পারে, যেমন উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা (ডিপ্রেশন) অনুভব করা।
- ইনজেকশনটির কারণে কিছু পুরুষের মধ্যে শারীরিক শক্তি বা সহনশীলতা কমে যেতে পারে, যেমন ক্লান্তি বা অলসতা অনুভব করা।
- অ্যাসেক্সুয়াল লক্ষণ অর্থাৎ কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে যৌন সক্ষমতা বা লিবিডো (যৌন আকাঙ্ক্ষা) কমে যেতে পারে।
- টেস্টোস্টেরন বা অন্যান্য হরমোনের প্রভাবের কারণে কিছু পুরুষের বুকের পেশীতে অস্বস্তি বা ব্যথা হতে পারে।
- সুই-টেনশন (দুর্বলতা বা ফোলা):ইনজেকশনের জায়গায় ফোলাভাব বা ব্যথা হতে পারে।
- ত্বকের সমস্যা অর্থাৎ কিছু পুরুষের ত্বকে অ্যালার্জি, র্যাশ, বা ব্রণের সমস্যা হতে পারে।
- দীর্ঘদিন ব্যবহারে কিছু পুরুষের রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্তর বেড়ে যেতে পারে, যা রক্তের চাপ বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- কিছু ক্ষেত্রে লিভারের উপর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, বিশেষ করে যদি ইনজেকশনটি দীর্ঘ সময় ধরে নেওয়া হয় তাহলে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যদি কোনও পুরুষের আগে থেকেই হার্ট, কিডনি, লিভার বা রক্তের সমস্যা থাকে, তবে এই ইনজেকশন নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।
- কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে, ইনজেকশনের পর প্রজনন ক্ষমতা দ্রুত ফিরে আসতে পারে না, তাই পরিকল্পিতভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পরিবর্তন করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দরকার হতে পারে।
এই ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একেক ব্যক্তির মধ্যে ভিন্ন হতে পারে, তাই এটি ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন কখন নিতে হয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশনের নাম, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন দেয়ার নিয়ম, সোমাজেক্ট ইনজেকশন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, হরমোনাল ইনজেকশন, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কত প্রকার এবং পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন এর সুবিধা ও পুরষের জন্ম নিয়ন্ত্রনের অসুবিধা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url