সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি

সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পেনশন নীতিমালা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
সরকারি-চাকরিজীবীদের-সর্বজনীন-পেনশন-স্কিমের-নাম-কি
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পেনশন সম্পর্কিত স্কিম ও পেনশন নীতিমালা রয়েছে। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
.

সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি

সরকার সম্প্রতি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য একটি সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে। যার নাম হলো জাতীয় পেনশন স্কিম (National Pension Scheme)। এই স্কিমটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে সমস্ত স্তরের সরকারি চাকরিজীবী তাদের কর্মজীবন শেষে আর্থিক সুরক্ষা পান। সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি, তা জানতে হলে বুঝতে হবে এটি কেবল একটি আর্থিক সুরক্ষার প্রতীক নয়। তার সাথে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি সামাজিক নিরাপত্তার অঙ্গ।

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন নির্ধারণ পদ্ধতি অত্যন্ত সুসংগঠিত ও প্রযুক্তিনির্ভর। পেনশন নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ এবং সহজ হওয়ায় চাকরিজীবীরা নিজেরাই তাদের পেনশনের পরিমাণ অনুমান করতে সক্ষম। পেনশন সুবিধা চাকরিজীবীদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবসরকালীন জীবনকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।

তাছাড়া ২০২৫ সালের নতুন পেনশন নীতিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই নীতিমালার মূল লক্ষ্য হলো পেনশন ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করা। পেনশনের হিসাব প্রক্রিয়া সহজীকরণ করা। কর্মজীবনের দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করা। নতুন পেনশন নীতিমালায় পেনশনের পরিমাণ এখন কর্মীর বেতন স্কেল, অবসরকালীন সুবিধা এবং কর্মজীবনের স্থায়ীত্বের উপর নির্ভর করে।

সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পেনশন নীতিমালা

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন পেনশন নীতিমালা তাদের অবসরকালীন আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নীতিমালার মাধ্যমে পেনশন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, প্রযুক্তি-সমর্থিত এবং সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি হবে সে সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। নতুন নীতিমালার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • স্বচ্ছ পেনশন হিসাবঃ নতুন পেনশন নীতিমালায় পেনশন নির্ধারণের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফর্মুলা ব্যবহার করা হচ্ছে, যা চাকরির স্থায়ীত্ব এবং অবসরকালীন বেতনের উপর নির্ভর করে।
  • প্রযুক্তির ব্যবহারঃ পেনশন প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চাকরিজীবীরা অনলাইনে তাদের পেনশন হিসাব ও প্রাপ্য অর্থের তথ্য পেতে পারেন।
  • সর্বজনীন পেনশন স্কিমঃ এই স্কিমের আওতায় সব সরকারি চাকরিজীবী নির্ধারিত নিয়মে পেনশন সুবিধা পাবেন। এটি পেনশন প্রক্রিয়ায় সমতা নিশ্চিত করেছে।
  • চিকিৎসা ও উৎসব ভাতাঃ পেনশনভোগীরা মাসিক চিকিৎসা ভাতা ছাড়াও বছরে দুটি উৎসব ভাতা এবং পহেলা বৈশাখে একটি বিশেষ ভাতা পাবেন।
  • স্বেচ্ছা অবসরের সুযোগঃ ২৫ বছরের চাকরিকাল পূর্ণ হলে সরকারি চাকরিজীবীরা স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে পেনশন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
  • অন্যান্য সুবিধাঃ চাকরিজীবীরা সহজেই তাদের পেনশন হিসাব করতে পারবেন। পেনশন প্রক্রিয়ার সময় কমে আসবে। আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। অবসরকালীন জীবন আরও সুরক্ষিত হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পেনশন নীতিমালা অবসরকালীন জীবনকে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল এবং নিরাপদ করে তুলেছে। আধুনিক প্রযুক্তি এবং স্বচ্ছ পদ্ধতির সংযোজন পেনশন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করেছে। যা চাকরিজীবীদের জীবনের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পেনশন কি

পেনশন হলো একটি আর্থিক সুবিধা যা কোনো ব্যক্তি অবসর গ্রহণের পর নির্দিষ্ট সময় বা সারা জীবনের জন্য নিয়মিতভাবে পেয়ে থাকেন। এটি মূলত একটি সঞ্চয় ব্যবস্থার অংশ যা কর্মজীবনের সময় মাসিক ভিত্তিতে সঞ্চিত অর্থ থেকে প্রদান করা হয়। পেনশনের মূল লক্ষ্য হলো অবসর গ্রহণের পর ব্যক্তির আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা, যেন তিনি তার দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করতে পারেন।

পেনশনের ধারণা প্রাথমিকভাবে সরকারি এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে প্রচলিত। সরকারি চাকরিজীবীরা সাধারণত অবসর গ্রহণের পর পেনশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। এটি তাদের কর্মজীবনে সরকারি সেবা প্রদানের একটি পুরস্কার এবং তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য আর্থিক নিশ্চয়তা। বেসরকারি খাতে অনেক সংস্থা পেনশন ফান্ড বা প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করে।

যেখানে কর্মচারীর এবং নিয়োগকারীর সম্মিলিত অবদানে একটি সঞ্চয় তহবিল তৈরি হয়। কর্মজীবন শেষে এই তহবিল থেকে পেনশন বা সঞ্চিত অর্থ প্রদান করা হয়। পেনশনের ধরন বিভিন্ন হতে পারে। যেমন নির্দিষ্ট পরিমাণ পেনশন, বয়স অনুযায়ী পেনশন বা কর্মীর আয় অনুযায়ী নির্ধারিত পেনশন। এছাড়াও অনেক দেশে ব্যক্তিগত পেনশন পরিকল্পনাও প্রচলিত।

যেখানে একজন ব্যক্তি নিজেই তার পেনশন সঞ্চয় পরিকল্পনা করতে পারেন। পেনশন ব্যবস্থা মানুষের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি অবসরকালীন জীবনে নির্ভরতার অনুভূতি কমিয়ে এনে একটি নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করে।

পেনশন কত প্রকার

সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পেনশন নীতিমালা অনুযায়ী পেনশনের ধরন এবং তার পরিমাণ নির্ধারণে নতুন দিকনির্দেশনা যুক্ত হয়েছে। এর ফলে পেনশনের প্রকৃতি এবং সুবিধা গ্রহণে পরিবর্তন এসেছে। পেনশন বিভিন্ন প্রকারভেদে ভাগ করা যায়। সাধারণত পেনশনকে পাঁচটি প্রধান ধরণে ভাগ করা হয়। নিম্নে পেনশন এর প্রকারভেদ গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো।

ক্ষতিপূরণ পেনশনঃ যদি কোনো কর্মচারীর পদ বিলুপ্ত হয় এবং তাকে সমমর্যাদাসম্পন্ন বা নিম্ন বেতন গ্রেডের অন্য কোনো পদে নিয়োগ বা আত্মীকরণ করা সম্ভব না হয় অথবা কর্মচারী নিজেই এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, তখন ক্ষতিপূরণ পেনশন প্রদান করা হয়। এটি চাকরি হারানোর কারণে আর্থিক ক্ষতি পূরণে একটি সহায়ক ব্যবস্থা।

অক্ষমতাজনিত পেনশনঃ শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতার কারণে কোনো কর্মচারী যদি তার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন এবং মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক স্থায়ীভাবে অক্ষম ঘোষণা করা হলে তাকে অক্ষমতাজনিত পেনশন প্রদান করা হয়।

বার্ধক্যজনিত পেনশনঃ গণ কর্মচারী (অবসর) আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা ব্যতীত অন্যান্য কর্মচারীদের ৫৯ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ৬০ বছর বয়স পূর্তিতে বার্ধক্যজনিত পেনশন প্রদান করা হয়। এছাড়া অবসর-প্রস্তুতি ছুটির সুযোগও রয়েছে যা এক বছর পর্যন্ত হতে পারে।

অবসরজনিত পেনশনঃ যদি কোনো কর্মচারী ২৫ বছরের চাকরিকাল পূর্ণ করে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন অথবা সরকারের নির্দেশে জনস্বার্থে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। তখন তাকে অবসরজনিত পেনশন প্রদান করা হয়। তবে ২৫ বছর পূর্ণ না হলে এই পেনশন পাওয়া যায় না।

অসাধারণ পেনশনঃ কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন কর্মস্থলে দুর্ঘটনা, গুরুতর আঘাত বা কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুর কারণে কর্মচারী বা তার পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য এই পেনশন প্রদান করা হয়।

পেনশনের এই পাঁচটি প্রকার কর্মচারীদের বিভিন্ন চাহিদা এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে তাদের আর্থিক সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ জীবনের নিশ্চয়তা প্রদান করে। এটি কর্মজীবনের অবসানের পর মানসিক প্রশান্তি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক।

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধা

পেনশন সুবিধা সরকারি চাকরিজীবীদের কর্মজীবনের দীর্ঘ সেবার প্রতিদান হিসেবে প্রদান করা হয় এবং এটি অবসরকালীন জীবনে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পেনশন কেবল চাকরিজীবীর এবং তার পরিবারের জন্য ভবিষ্যৎ জীবিকাও সুরক্ষিত রাখে। সরকারি পেনশন স্কিমগুলি চাকরিজীবীদের মানসিক প্রশান্তি ও জীবনের মান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধার প্রধান দিকসমূহ নিম্নরূপ।
  • সরকারি চাকরিজীবীরা অবসরের পর নিয়মিত মাসিক পেনশন পান। এটি তাদের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করতে এবং আর্থিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • যদি কোনো সরকারি চাকরিজীবী মৃত্যুবরণ করেন, তবে তার স্ত্রী (বিধবা) বিধবা পেনশন সুবিধা পান। এটি তার স্ত্রীর আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
  • সরকারি পেনশনধারীদের জন্য চিকিৎসার ব্যয়ে অতিরিক্ত সহায়তা প্রদান করা হয়। এটি পেনশনভোগী এবং তার পরিবারের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • সরকারি চাকরিজীবীর অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের জন্য বিশেষ পেনশন সুবিধা চালু থাকে। চাকরিজীবীর মৃত্যুর পর তার নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যরা এই পেনশন সুবিধা পেতে পারেন।
  • সর্বজনীন পেনশন স্কিম নামক সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন স্কিমটি সবার জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করে। এটি তাদের আর্থিক নিরাপত্তার একটি প্রধান ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধা তাদের এবং তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ জীবনে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। এই সুবিধাগুলি চাকরিজীবীর ও তার পরিবারের জন্যও একটি স্থায়ী আর্থিক আশ্বাস প্রদান করে। সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি, তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি পেনশন সুবিধাগুলিও তাদের জীবনের মান উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা পালন করে।

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন কত টাকা

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন নির্ধারণে মূল ভিত্তি হলো তাদের শেষ মূল বেতন। পেনশনের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য কিছু নির্দিষ্ট ফর্মুলা এবং নিয়ম অনুসরণ করা হয়। সাধারণত, একজন কর্মচারী অবসর নেওয়ার পর তার মাসিক পেনশন, এককালীন লাম্পগ্র্যান্ট এবং গ্র্যাচুইটির মাধ্যমে তার আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়।

পেনশন হিসাবের মূল বিষয়ঃ সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন কত টাকা পরিমাণ নির্ধারণে শেষ মূল বেতনকে কেন্দ্র করে নিচের উপাদানগুলো বিবেচনা করা হয়।

মাসিক পেনশনঃ মাসিক পেনশন নির্ধারণের ফর্মুলা হলো - (শেষ বেসিক × ৯০%) ÷ ২ + মাসিক চিকিৎসা ভাতা। উদাহরণঃ যদি শেষ বেসিক বেতন হয় ২৯,২০০ টাকা, তবে মাসিক পেনশন হবেঃ
(২৯,২০০ × ৯০%) ÷ ২ + ১,৫০০ = ১৩,১৪০ + ১,৫০০ = ১৪,৬৪০ টাকা।

লাম্পগ্র্যান্ট বা এককালীন অর্থঃ লাম্পগ্র্যান্ট হলো শেষ মূল বেতনের ১৮ মাসের সমপরিমাণ। ফর্মুলাঃ শেষ বেসিক × ১৮। উদাহরণঃ যদি শেষ বেসিক বেতন ২৮,০০০ টাকা হয়, তবে লাম্পগ্র্যান্ট হবেঃ ২৮,০০০ × ১৮ = ৫,০৪,০০০ টাকা।

গ্র্যাচুইটিঃ পি আর এল (PRL) শেষে গ্র্যাচুইটি নির্ধারণ হয়। ফর্মুলাঃ (শেষ বেসিক × ৯০%) ÷ ২ × ২৩০। উদাহরণঃ শেষ বেসিক ২৯,২০০ হলে গ্র্যাচুইটি হবেঃ (২৯,২০০ × ৯০%) ÷ ২ × ২৩০ = ৩০,৩২,০০০ টাকা।

উৎসব ভাতাঃ সরকারি পেনশনভোগীরা বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পান, যা মাসিক পেনশনের সমান।
উদাহরণঃ মাসিক পেনশন ১৩,১৪০ টাকা হলে, প্রতি উৎসব ভাতা হবে ১৩,১৪০ টাকা।

চিকিৎসা ভাতাঃ মাসিক পেনশনের সাথে চিকিৎসা ভাতা যুক্ত হয়। ৬৫ বছর বয়সের পর এটি ১,৫০০ টাকার পরিবর্তে ২,৫০০ টাকা হয়।

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন শেষ মূল বেতনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। এতে মাসিক পেনশন, লাম্পগ্র্যান্ট, গ্র্যাচুইটি, উৎসব ভাতা এবং চিকিৎসা ভাতা অন্তর্ভুক্ত থাকে। তার সাথে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি ধারণা থাকলে উপরের নিয়ম অনুযায়ী একজন সরকারি চাকরিজীবী সহজেই তার পেনশনের মোট পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন।

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন হিসাব

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় তাদের চাকরির স্থায়ীত্ব এবং অবসরকালীন বেতনের উপর ভিত্তি করে। পেনশন হিসাব সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সূত্র অনুযায়ী করা হয়। যা সহজে প্রাপ্য পেনশন নির্ধারণে সাহায্য করে।

পেনশন হিসাবের মূল সূত্রঃ পেনশন = (চাকরির সময়কাল × বেসিক বেতন) ÷ ২। এই সূত্র অনুযায়ী, চাকরির সময়কাল যত দীর্ঘ এবং বেসিক বেতন যত বেশি, পেনশনের পরিমাণও তত বেশি হবে।

পেনশনের হারঃ সাধারণত একজন সরকারি চাকরিজীবী তার অবসরকালীন বেতনের ৫০% থেকে ৬০% পর্যন্ত পেনশন পান। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে এই হার আরও বাড়তে পারে। যেমন চাকরির সময়কাল বেশি হলে বা পেনশন স্কিমে অতিরিক্ত সুবিধা যুক্ত থাকলে।

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন নির্ধারণের জন্য নিচের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ।
  • বোনাস ও অতিরিক্ত সুবিধাঃ বোনাস বা উৎসব ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা পেনশনের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
  • নতুন পেনশন নীতিমালাঃ পেনশন হিসাব আরও স্বচ্ছ ও সহজ করার জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পেনশন নীতিমালা চালু করা হয়েছে। এই নীতিমালায় প্রযুক্তির ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যাতে চাকরিজীবীরা নিজেরাই সহজে পেনশন নির্ধারণ করতে পারেন।
  • সর্বজনীন পেনশন স্কিমঃ সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সর্বজনীন পেনশন স্কিম। সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি এবং এর আওতায় সব ধরনের সরকারি চাকরিজীবী একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পেনশন সুবিধা পান।
  • চাকরির স্থায়ীত্বঃ একজন চাকরিজীবীর মোট চাকরিকাল পেনশন নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • অবসরকালীন বেতনঃ শেষ বেতন বা বেসিক বেতন পেনশনের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল থাকাটাই স্বাভাবিক। জাতীয় পেনশন স্কিম এবং নতুন পেনশন নীতিমালা এ বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করেছে।
  • পেনশন আর্থিক সুবিধা দিয়ে একজন চাকরিজীবীর কর্মজীবনের মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তা দেয়। নতুন পেনশন নীতিমালা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
অবশেষে বলা যায় পেনশনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত আর্থিক নিরাপত্তার সঙ্গে সমাজ এবং রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতার একটি সুন্দর উদাহরণ তৈরি হয়।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নাম কি তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে নতুন পেনশন নীতিমালা, পেনশন কত প্রকার, সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url