জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ
জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, জন্ডিস হলে কি কলা খাওয়া যাবে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
লিভারের একটি জটিল রোগ হলে জন্ডিস। সঠিকভাবে চিকিৎসা না নিলে তা প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই আজকের পোস্টে জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব।
.
জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ
জন্ডিস একটি সাধারণ চিকিৎসা সমস্যা যা যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে হতে পারে। এই অবস্থায় ত্বক এবং চোখের সাদা অংশের হলুদ হয়ে যাওয়া দেখা যায়, যা রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বাড়ার কারণে হয়। ভাইরাল হেপাটাইটিস (যেমন হেপাটাইটিস এ, বি, সি) প্রধান কারণ হতে পারে। যা লিভারের প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং বিলিরুবিনের প্রক্রিয়াকরণে ব্যাঘাত ঘটায়। ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিস শরীরে জন্ডিসের কারণ হতে পারে। তাই ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সঠিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যে, জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ এবং জন্ডিস হলে কি খেতে হয়। জন্ডিস অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংক্রমণ দ্বারা হতে পারে। ভাইরাসজনিত জন্ডিসের অন্যতম প্রধান কারণ হলো হেপাটাইটিস ভাইরাস যা বিভিন্ন প্রকার হতে পারে।
হেপাটাইটিস এঃ এটি প্রধানত জল ও খাদ্য মাধ্যমে ছড়ায় এবং ভাইরাসজনিত লিভারের প্রদাহ সৃষ্টি করে।
হেপাটাইটিস বিঃ এই ভাইরাসটি রক্ত এবং শারীরিক তরল দ্বারা সংক্রমিত হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী লিভারের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
হেপাটাইটিস সিঃ এটি প্রধানত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায় এবং লিভারের দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে।
হেপাটাইটিস ডি এবং হেপাটাইটিস ইঃ এই ভাইরাসগুলি কম প্রচলিত হলেও, যথাযথ সুরক্ষা না থাকলে তারা জন্ডিস সৃষ্টি করতে পারে।
তবে ভাইরাস ছাড়া অন্য কারণেও জন্ডিস হতে পারে। যেমন পিত্তনালীর সমস্যা, হিমোলাইসিস, এবং লিভারের অন্যান্য রোগ। তাই জন্ডিসের কারণ সঠিকভাবে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
জন্ডিস হলে কি কলা খাওয়া যাবে
সাধারণত রোগীদের জন্য কলা একটি উপকারী খাবার হতে পারে। কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। যা শরীরের অতিরিক্ত তরল শোষণ এবং শরীরের সঠিক পুষ্টির ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক। তবে জন্ডিসের সময় যদি কোনও ব্যক্তি পেটের সমস্যায় ভোগেন বা ডায়রিয়া থাকে, সেক্ষেত্রে কলা খাওয়া আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কারণ কলায় ফাইবার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে৷ যা হজমে সমস্যা করতে পারে । সেই সাথে কলা শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে যা জন্ডিসের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় । এজন্য ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় কলা রাখবেন না। তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযাই নিয়ম মেনে চলে আপনি দেখতে পারেন যে, আপনার জন্ডিস কত দিনে ভালো হয় বা হচ্ছে।
সাথেই নিজের সন্তুষ্টির জন্য ডাক্তারের কাছ থেকেই আপনি জেনে নিতে পারেন যে, জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ কি না। এখন আসি প্রশ্নে জন্ডিস হলে কি কলা খাওয়া যাবে, বলা যায় জন্ডিস হলে যদি শরীরের অবস্থা স্থিতিশীল থাকে এবং কোনও পেটের সমস্যা না থাকে, তবে কলা খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে নয়। কলা হজমে সহজ এবং পুষ্টির জন্য ভাল। তাই এটি খাওয়া যেতে পারে যদি আপনার স্বাস্থ্য সঠিক থাকে।
জন্ডিস এর লক্ষণ
জন্ডিস এর লক্ষণ এর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান হল ত্বক, চোখের সাদা অংশ এবং মিউকাস মেমব্রেন পীতবর্ণ বা হলুদ হয়ে যায়। এটি তখন ঘটে যখন রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বাড়ে। বিলিরুবিন হলো লিভার দ্বারা তৈরি একটি রাসায়নিক পদার্থ, যা লাল রক্তকণিকার অবশিষ্টাংশ থেকে বেরিয়ে আসে। সাধারণত লিভার বিলিরুবিনকে প্রস্রাব বা মল মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু লিভার যদি তার কাজ ঠিকমতো করতে না পারে বা শরীরে বেশি বিলিরুবিন তৈরি হয়, তখন জন্ডিস দেখা দেয়। জন্ডিসের প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে।
- ত্বকের হলুদভাবঃ জন্ডিসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো ত্বকের হলুদ হয়ে যাওয়া। এটি শুধু ত্বকে নয়, চোখের সাদা অংশেও দেখা যেতে পারে।
- চোখের সাদা অংশে হলুদ ভাবঃ চোখের সাদা অংশ, যা স্ক্লেরা বলা হয়, সেখানে হলুদ ভাব পরিলক্ষিত হয়। এটি জন্ডিসের এক প্রাথমিক চিহ্ন।
- অল্প অল্প ত্বকে কাঁপুনি বা চুলকানিঃ জন্ডিসে আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক সাধারণত শুকনো এবং চুলকানো হতে পারে।
- মূত্রের গাঢ় রঙঃ জন্ডিসে আক্রান্ত হলে মূত্রের রঙ গাঢ় বা কলার মতো হতে পারে। এর কারণ হলো বিলিরুবিনের উপস্থিতি।
- অ্যাপেটাইট হারানো বা খিদে কমে যাওয়াঃ জন্ডিসে আক্রান্ত হলে অনেক সময় খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায় এবং খিদে মেটানো কঠিন হয়ে পড়ে।
- ক্লান্তি ও দুর্বলতাঃ শরীরে শক্তির অভাব বা ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। এটি শরীরে অতিরিক্ত বিলিরুবিনের উপস্থিতির কারণে হয়ে থাকে।
- মল বা পায়খানার রঙ পরিবর্তনঃ জন্ডিসে আক্রান্ত হলে পায়খানার রঙ সাধারণত সাদা বা হালকা হতে পারে। এটি লিভারের অসুস্থতার কারণে ঘটে। যেখানে পিত্তের যথেষ্ট প্রবাহ হতে পারে না।
- বমি ও পেটব্যথাঃ কিছু ক্ষেত্রে জন্ডিসের ফলে বমি বা পেটব্যথা হতে পারে, যা সাধারণত লিভারের সমস্যা বা পিত্তাশয়ের কোনো সমস্যার কারণে হয়।
জন্ডিসের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে- লিভার রোগ, পিত্তনালীতে সমস্যা। জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ ও জন্ডিস কেন হয়, এর উপর চিকিৎসা নির্ভর করে। তাই যদি কেউ এই লক্ষণগুলি দেখে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে নিকটস্থ হতে হবে।
জন্ডিস কেন হয়
জন্ডিস একটি উপসর্গ যা শরীরের মধ্যে কোনো সমস্যা বা রোগের উপস্থিতি নির্দেশ করে। প্রধানত রক্তে বিলিরুবিনের অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এটি ঘটে। বিলিরুবিন হলো একটি হলুদ পদার্থ যা লাল রক্তকণিকার ভাঙনের ফলে তৈরি হয়। সাধারণত লিভার এই বিলিরুবিন প্রক্রিয়া করে এবং শরীর থেকে বের করে দেয়। যখন লিভার এর প্রক্রিয়া ঠিকভাবে করতে পারে না বা বিলিরুবিনের পরিমাণ অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছ জন্ডিসের সৃষ্টি করে। জন্ডিস হওয়ার প্রধান কারণগুলো বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
লিভারের রোগঃ লিভারের বিভিন্ন রোগ যেমন হেপাটাইটিস (ভাইরাল, অ্যালকোহলিক বা অটোইমিউন), সিরোসিস (লিভারের প্রদাহজনিত রোগ), এবং লিভার ক্যান্সারও জন্ডিস সৃষ্টি করতে পারে। লিভারের ক্ষতি হওয়ার ফলে এটি বিলিরুবিন প্রক্রিয়াকরণে অক্ষম হয়ে পড়ে। ফলে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
পিত্তাশয় সম্পর্কিত সমস্যাঃ পিত্তনালীতে পাথর বা পিত্তাশয়ের প্রদাহ (যেমন চোলেথিয়াসিস বা পিত্তনালীতে পাথর জমা হওয়া) লিভারে বিলিরুবিন নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে। যার ফলে জন্ডিস হতে পারে। এছাড়াও পিত্তনালীতে কোনও ব্লকেজ বা সংকোচনও এই সমস্যার কারণ হতে পারে।
হিমোলাইসিস বা রক্তকণিকার অতিরিক্ত ভাঙনঃ হিমোলাইসিস একটি অবস্থার নাম যেখানে রক্তকণিকা খুব দ্রুত ভেঙে যায়। এতে বিলিরুবিনের পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে গিয়ে লিভার এটি যথাযথভাবে প্রক্রিয়া করতে পারে না এবং রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে জন্ডিসের সৃষ্টি হয়।
সংক্রমণঃ জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ জানা যায় সংক্রমনের ধরন দেখে। হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসের মতো ভাইরাল সংক্রমণ লিভারের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের সংক্রমণ লিভারের কার্যকারিতা নষ্ট করে। যার ফলে বিলিরুবিনের স্তর বেড়ে গিয়ে জন্ডিস হয়।
জেনেটিক সমস্যাঃ কিছু জেনেটিক বা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত রোগ, যেমন গিলবার্ট সিনড্রোম, বিলিরুবিন প্রক্রিয়াকরণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগে লিভার সম্পূর্ণভাবে বিলিরুবিন প্রক্রিয়া করতে সক্ষম হয় না। যার কারণে জন্ডিসের সৃষ্টি হয়।
অন্য রোগ বা অবস্থাঃ কিছু বিশেষ রোগ, যেমন প্যানক্রিয়াটাইটিস (পিত্তাশয়ের প্রদাহ) বা কিডনি সমস্যাও জন্ডিস সৃষ্টি করতে পারে। এই অবস্থায় শরীরে বিলিরুবিনের বৃদ্ধি হতে পারে এবং লিভার যথাযথভাবে এটি নিষ্কাশন করতে ব্যর্থ হয়।
জন্ডিসের কারণ জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারেন। রোগ নির্ণয়ের জন্য সাধারণত রক্তের পরীক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাফি এবং অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়।
জন্ডিস হলে কি খেতে হয়
জন্ডিসের রোগী হলে খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সঠিক খাদ্য গ্রহণ করলে লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত হতে পারে এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হতে পারেন। জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ আর তাহলে কি ধরনের খাবার খেতে হবে তা জানা জরুরী। এই সময় কিছু নির্দিষ্ট ধরনের খাবার খাওয়া উচিত, যা শরীরের প্রক্রিয়া সমর্থন করবে এবং সুস্থতা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, দই ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন শরীরের কোষগুলির পুনর্গঠন এবং লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে চর্বি বা তেলযুক্ত মাংস থেকে বিরত থাকা উচিত।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলঃ কমলা, আমলকি, পেয়ারা, লেবু ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া উচিত। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
হালকা খাবারঃ জন্ডিসের সময় হালকা খাবার খাওয়া উচিত যাতে লিভারের উপর চাপ না পড়ে। সেদ্ধ ভাত, খিচুড়ি, পাস্তা, ভাপা সবজি ইত্যাদি সহজ খাবার হজম করতে সহজ হয় এবং শরীরের উপকারে আসে।
অতিরিক্ত পানিঃ শরীরের ডিহাইড্রেশন এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানি শরীরে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং লিভারের ওপর চাপ কমায়। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সবজিঃ পুষ্টির জন্য পাতি সবজি যেমন পালং শাক, মিষ্টি আলু, টমেটো, গাজর ইত্যাদি খাওয়া উচিত। এসব সবজি ভিটামিন, মিনারেল এবং আঁশের সমৃদ্ধ উৎস, যা লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সহায়ক।
হালকা ও সহজ প্রক্রিয়াকৃত খাবারঃ ভারী মসলাযুক্ত, অতিরিক্ত তেল, চর্বি, এবং তেলতেলে খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। এসব খাবার লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
সাবধানে মিষ্টি খাবারঃ জন্ডিসের রোগীদের জন্য অতিরিক্ত মিষ্টি, চিনির খাবার এড়ানো উচিত, কারণ এতে শরীরে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বৃদ্ধি পায় এবং লিভারের উপর চাপ বাড়তে পারে।
এছাড়া অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (যেমন কফি, চা) লিভারের জন্য ক্ষতিকর বলে এড়িয়ে চলা উচিত। জন্ডিস আক্রান্ত রোগীর উচিত সুস্থ খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা। যাতে শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে এবং লিভারের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
জন্ডিসের স্বাভাবিক মাত্রা কত
জন্ডিস নিজে একটি উপসর্গ শুধুমাত্র ভাইরাসের কারণে হয় না। শরীরে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘটে। বিলিরুবিন হল একটি হলুদ পদার্থ যা লাল রক্তকণিকার ভাঙন থেকে সৃষ্টি হয় এবং সাধারণত লিভার দ্বারা প্রক্রিয়া হয়ে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। যদি লিভার এই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে না করতে পারে বা যদি রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে যায়, তবে জন্ডিস সৃষ্টি হয়।
জন্ডিসের স্বাভাবিক মাত্রা কত হওয়া উচিৎ এ বিষয়ে আমাদের অনেকের জানা নেই। বিলিরুবিনের পরিমাণ শরীরে সধারণত ১ থেকে ১.৫ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (mg/dL) হওয়া উচিত। যখন এই মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তখন তা জন্ডিসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণত ৩ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার বা তার বেশি হলে, তা জন্ডিসের লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। তবে এটি নির্ভর করে যে কিভাবে লিভার বা পিত্তাশয় কাজ করছে এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলি কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।
জন্ডিস কত দিনে ভালো হয়
জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ এবং জন্ডিস হলে কি কলা খাওয়া যাবে এর মতো সাধারণ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা রোগীকে চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে। জন্ডিসের উন্নতি সময়ের সাথে সাথে হয়। এটি রোগীর স্বাস্থ্য এবং জন্ডিসের কারণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত ভাইরাল হেপাটাইটিস বা সাধারণ লিভার ইনফেকশনে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
তবে কিছু গুরুতর অবস্থায় যেমন সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সার, সময় বেশি লাগতে পারে এবং বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগী শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। জন্ডিস একটি সাধারণ কিন্তু জটিল রোগ। এর সঠিক চিকিৎসা এবং খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ না করলে অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সতর্কতার সাথে খাবার এবং চিকিৎসা গ্রহণ করলে, এই রোগ থেকে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে জন্ডিসের লক্ষণ, কারণ এবং খাদ্যতালিকার পরামর্শ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url