লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, লিভার ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন লিভার ক্যান্সার হবার লক্ষণ, কারণ, চিকিৎসা ও খরচ এবং বাঁচার সম্ভাবনা সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।লিভার ক্যান্সার একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা যা দ্রুত রোগীর জীবন মান কমিয়ে দিতে পারে। তাই আজকের পোস্টে লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ভূমিকা
লিভার ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ, যা দ্রুত জীবনমান কমিয়ে দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও পরবর্তী সময়ে পেটব্যথা, ওজন কমা, জন্ডিস ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। হেপাটাইটিস ভাইরাস, অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতা এবং দূষিত খাদ্য এই রোগের প্রধান কারণ। বাংলাদেশে এর চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি, যা কয়েক লাখ থেকে কয়েক কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। আমাদের আজকের পোস্টে আমরা যা কিছু জানবো তা হল- লিভার ক্যান্সার লক্ষণ, লিভার ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ, লিভার ক্যান্সার কেন হয়, লিভার ক্যান্সার এর চিকিৎসা, লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে, লিভার ক্যান্সার কি ভাল হয় এ সকল বিষয়ের তথ্য সম্পর্কে।
লিভার ক্যান্সার লক্ষণ
লিভার ক্যান্সার (Liver Cancer) হল একটি মারাত্মক রোগ। যা লিভারে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধির ফলে ঘটে। এটি সাধারণত প্রাথমিক (প্রাইমারি) বা দ্বিতীয় (সেকেন্ডারি) হতে পারে। তবে প্রাথমিক লিভার ক্যান্সারই বেশি পরিলক্ষিত হয়। এটি সাধারণত ধীরে ধীরে বিকশিত হয়, ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক সময় তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যা রোগের উপস্থিতি সম্পর্কে সংকেত দেয়। জটিল পরিস্থিতির ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগী লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে তা জানা শঙ্কা থেকেই যায়।
- লিভার ক্যান্সারের সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম হলো পেটের উপরের অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি। এই ব্যথা অনেক সময় পেটে বা পিঠে অনুভূত হতে পারে।
- এছাড়া পেট ফুলে যাওয়া, গ্যাস, কিংবা অস্বস্তি অনুভূত হওয়া সাধারণ লক্ষণ হতে পারে। অধিকাংশ রোগীই পেটের ডানদিকে ফোলা বা গাঢ় হয়ে যাওয়া দেখতে পান, যা লিভারের বৃদ্ধি বা ক্যান্সারের কারণে হতে পারে।
- এছাড়া লিভার ক্যান্সারের একটি আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হল ক্ষুধামন্দা এবং ওজন কমে যাওয়া। রোগী খাওয়া কমিয়ে দেয় এবং শরীরের অবস্থা ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ে।
- ত্বকের রঙ হলুদ হয়ে যাওয়া (জন্ডিস), চোখের সাদা অংশের হলুদ হয়ে যাওয়া, এবং প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া এমন কিছু লক্ষণ যা লিভার ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। এই অবস্থা মূলত লিভারে সঠিকভাবে বিলিরুবিন প্রক্রিয়া না হওয়ার কারণে ঘটে।
- রোগীর শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং শক্তি কমে যাওয়া লক্ষ্য করা যায়। যা সাধারণত লিভার ক্যান্সারের কারণে ঘটে থাকে। এটি আরও উন্নত হলে, রোগী বমি, মলত্যাগের সমস্যা এবং হজমের সমস্যা অনুভব করতে পারেন।
- লিভার ক্যান্সার ছাড়াও, এটি অন্যান্য রোগের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে যেমন সিরোসিস (লিভারের কঠিন হওয়া) বা হেপাটাইটিস বি বা সি।
অতএব যদি এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ক্যান্সারের নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা রোগের অগ্রগতি জানাতে বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান বা বায়োপসি করা হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় জীবনধারা অনুসরণ করলে ক্যান্সারের প্রভাব অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
লিভার ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ
বাংলাদেশে লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ রোগীর আর্থিক সক্ষমতা এবং চিকিৎসার ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, কিংবা সার্জারি করতে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। লিভার প্রতিস্থাপনের মতো জটিল প্রক্রিয়া করলে এই খরচ আরও অনেক বেড়ে যায়।
কেমোথেরাপির খরচ প্রতি সেশনে ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা হতে পারে এবং এটি বেশ কয়েকটি সেশনে দিতে হতে পারে। ফলে মোট খরচ কিছুটা বাড়তে পারে। রেডিয়েশন থেরাপির জন্য প্রতি সেশনে ৩০,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা প্রয়োজন। যা কয়েকটি সেশনে করতে হতে পারে। লিভার প্রতিস্থাপন করতে গেলে প্রায় ২০-৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এটি শুধুমাত্র প্রাথমিক খরচ, এর সাথে চিকিৎসা, ওষুধ এবং হাসপাতালের অন্যান্য খরচও যুক্ত হবে।
অন্যদিকে চিকিৎসায় যে বায়োপসির দরকার, ধরন অনুযায়ী তার খরচ কম বা বেশি হতে পারে। গড়ে একটি বায়োপসি পদ্ধতিতে প্রায় ৪,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা আপনার খরচ হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ ভিন্ন হতে পারে। বিশেষ করে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে। তাই লিভার ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ থেকে কত হবে তা নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নির্ভরযোগ্য হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
লিভার ক্যান্সার কেন হয়
লিভার ক্যান্সার বা যকৃৎ ক্যান্সার লিভারের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে ঘটে। যা পরবর্তীতে ক্যান্সার টিউমারে পরিণত হয়। এটি প্রাথমিক (যখন ক্যান্সার সরাসরি লিভারে শুরু হয়) বা সেকেন্ডারি (যখন ক্যান্সার অন্য কোনো অঙ্গ থেকে লিভারে ছড়িয়ে পড়ে) হতে পারে। লিভার ক্যান্সারের কারণ সঠিকভাবে জানা না গেলেও কিছু প্রধান ঝুঁকি ফ্যাক্টর রয়েছে, যা এই রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।
হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাসের সংক্রমণ লিভার ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। দীর্ঘ সময় ধরে এই ভাইরাসগুলো লিভারে সংক্রমণ সৃষ্টি করলে, এটি লিভারের তন্তু ধ্বংস করে এবং সিরোসিসের মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্ম দেয়। সিরোসিসের কারণে লিভারের কোষের ক্ষতি হয় এবং পরবর্তীতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনও লিভার ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
দীর্ঘ সময় ধরে অ্যালকোহল খেলে লিভারের ক্ষত সৃষ্টি হয়। যার ফলে সিরোসিস এবং পরে ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ে। এই লক্ষণে রোগী লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে তা বলা মুশকিল। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন। যারা স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন, তাদের মধ্যে লিভার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কারণ স্থূলতার ফলে ইনসুলিন প্রতিরোধকতা (insulin resistance) বৃদ্ধি পায়, যা লিভারে চর্বি জমতে সাহায্য করে এবং এটি লিভারের কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া কিছু বিশেষ ধরনের লিভার রোগ যেমন অপ্রতিরোধ্য লিভার ফ্যাটি রোগ (Non-Alcoholic Fatty Liver Disease) লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। আরেকটি কারণ হল জেনেটিক বা পারিবারিক ইতিহাস।
যদি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকে, তবে তার মধ্যে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়া, লিভার ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত কিছু জেনেটিক ত্রুটি বা মিউটেশনও এর কারণ হতে পারে। লিভার ক্যান্সারের আরেকটি কারণ হল পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থ যেমন অ্যাসবেস্টস বা আর্সেনিকের দীর্ঘস্থায়ী সংস্পর্শ। এই ধরনের বিষাক্ত পদার্থের প্রভাবে লিভারের কোষে মিউটেশন ঘটে, যা ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে।
অতএব লিভার ক্যান্সারের কারণ নানা ধরনের হতে পারে, তবে এর ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অ্যালকোহল সেবন সীমিত করা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
লিভার ক্যান্সার এর চিকিৎসা
লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগীর শারীরিক অবস্থা, রোগের ধরণ এবং ক্যান্সারের পর্যায়ের ওপর। এটি একটি গুরুতর রোগ এবং এর চিকিৎসা রোগী লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে সেই অবস্থার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, এবং লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রোগের ধরন এবং পর্যায় অনুযায়ী চিকিৎসার পদ্ধতি নির্বাচন করা হয়।
যদি ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে এবং এটি একটি সীমিত এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, তখন সার্জারি (অপারেশন) করতে হতে পারে। সার্জারির মাধ্যমে আক্রান্ত লিভারের অংশ বা পুরো লিভারই বের করে ফেলা যেতে পারে। এটি শুধুমাত্র তখনই সম্ভব যখন ক্যান্সার লিভারের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে না পড়ে এবং রোগী শারীরিকভাবে অস্ত্রোপচার সহ্য করার মতো সুস্থ থাকে।
অন্যদিকে কেমোথেরাপি একটি সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে শক্তিশালী ওষুধ ব্যবহৃত হয়। তবে লিভার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি প্রায়ই তেমন কার্যকরী নাও হতে পারে। এটি মেটাস্টেটিক ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে, যেখানে ক্যান্সার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
কেমোথেরাপির পাশাপাশি রেডিওথেরাপি (রেডিও এক্সরে বা রেডিওধর্মী শক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা) ও ব্যবহৃত হতে পারে, বিশেষ করে যখন সার্জারি সম্ভব না হয় বা ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে। টার্গেটেড থেরাপি এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা ক্যান্সারের কোষের নির্দিষ্ট অংশে কাজ করে এবং এটি সাধারণত কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
এই থেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সারের বৃদ্ধির জন্য দায়ী জিনগত পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করে ওষুধ দেওয়া হয়। এটি কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিক ক্যান্সারের চিকিৎসায় সহায়ক হতে পারে। ইমিউনোথেরাপি আরেকটি উন্নত পদ্ধতি, যা শরীরের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সাহায্য করে।
এই পদ্ধতিতে বিশেষ কিছু ওষুধ ব্যবহৃত হয়, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এছাড়া লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনও একটি বিকল্প হতে পারে, বিশেষত যদি ক্যান্সার লিভারের বড় অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং অপারেশন সম্ভব না হয়। এটি একটি জটিল এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া যেখানে রোগীকে একটি নতুন লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়।
এজন্য ডোনার পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় ও অর্থের পাশাপাশি ভাগ্যও চিকিৎসা রং অগ্রগতি নির্ধারণ করে থাকে। এসকল বিষয়ের সাথে সাথে একজনের লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে এবং কতখানি কষ্ট কম পায়, তা স্বজনদের আর্থিক অবস্থার উপরও অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে থাকে। সঠিক চিকিৎসার পদ্ধতি নির্ভর করে রোগীর শারীরিক অবস্থার, ক্যান্সারের স্তর, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থা উপর। তাই লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসায় রোগীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচা সম্ভব, তা নির্ভর করে রোগের পর্যায়, রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসা নেওয়ার সময়ের ওপর।
প্রাথমিক পর্যায়ঃ যদি রোগটি প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়ে এবং যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করা যায়, তবে রোগী অনেক বছর বেঁচে থাকতে পারেন।
উন্নত পর্যায়ঃ যখন ক্যান্সার লিভারের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে, তখন জীবনকাল অনেক কমে যায়। সাধারণত উন্নত পর্যায়ের রোগীরা ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন।
চিকিৎসার গুণগত মানঃ উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীর জীবনকাল কিছুটা বাড়ানো সম্ভব।
তবে সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনধারা পরিবর্তন করলে লিভার ক্যান্সার হলে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনাকে আরও কিছুদিন বাড়ানো সম্ভব।
লিভার ক্যান্সার কি ভাল হয়
লিভার ক্যান্সার পুরোপুরি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু তা নির্ভর করে রোগটি কতটা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়েছে তার ওপর। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সার্জারি বা লিভার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। আর উন্নত পর্যায়ে রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা কম হলেও উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে রোগের ঝুঁকি কমানো যায়।
একজনের লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে তা নিয়ে অনেক রোগী এবং তাদের পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ থাকে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে রোগীর জীবনকাল উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যায়। উন্নত চিকিৎসা যেমন রেডিয়েশন বা কেমোথেরাপি প্রয়োগের মাধ্যমে রোগী আরও কয়েক বছর বাঁচতে পারেন। এজন্য লিভার ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ থেকে যদি কম টাকায় করা সম্ভব হয়, তাহলে রোগীর স্বজনদের কাছে আরো উপকৃত হতে পারে।
একটি জটিল এবং মারাত্মক রোগ লিভার ক্যান্সার। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি শনাক্ত এবং চিকিৎসা করা গেলে জীবন বাঁচানো সম্ভব। লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া রোগ প্রতিরোধের প্রথম ধাপ। বাংলাদেশে লিভার ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তাই রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচা সম্ভব এবং রোগটি কি পুরোপুরি ভালো হতে পারে, তা নির্ভর করে চিকিৎসার মান এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর। সবার আগে প্রয়োজন স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে লিভার ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ, কারণ, চিকিৎসা পদ্ধতি এবং কতদিন বাঁচা সম্ভব সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url