কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে
কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, শিলাবৃষ্টি কখন হয় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন শিলাবৃষ্টির যাবতীয় বিষয় এবং এর প্রভাবে ফসলের যেসব ক্ষতি হতে পারে তা সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
বৃষ্টি পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। তবে শিলাবৃষ্টি প্রকৃতির বিস্ময়কর ঘটনা হলেও এটি একটি সকলের জন্য ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই আজকের পোস্টে কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ভূমিকা
শিলাবৃষ্টি প্রকৃতির এক আকর্ষণীয়, কিন্তু মাঝে মাঝে ক্ষতিকর আবহাওয়া ঘটনা। এটি মূলত মেঘের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া বরফের টুকরো, যা মাটিতে পড়ে। এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, কারণ ও প্রভাব সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আজকের পোস্টে আমরা যা কিছু জানবো তা হল- শিলা বৃষ্টি কাকে বলে, শিলাবৃষ্টি কেন হয়, শিলাবৃষ্টি কখন হয়, শিলাবৃষ্টির ক্ষেত্রে জলকণা গুলি কোন প্রক্রিয়ায় বরফের টুকরো তে পরিণত হয়, কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে, শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি এ সকল বিষয়ের তথ্য সম্পর্কে।
শিলা বৃষ্টি কাকে বলে
শিলাবৃষ্টি হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক আবহাওয়া পরিস্থিতি, যেখানে বরফের কঠিন টুকরো বা শিলারূপী বৃষ্টির মতো পড়ে। শিলাগুলি সাধারণত মেঘের মধ্যেই তৈরি হয়, যখন বাষ্পীভূত জলকণা খুব দ্রুত হিমায়িত হয়ে বরফে রূপান্তরিত হয়। এ ধরনের শিলা মাটিতে পড়ার সময় প্রায়ই ফসল, সম্পত্তি ও কখনও কখনও মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
শিলাবৃষ্টি কেন হয়
শিলাবৃষ্টি মূলত আবহাওয়ার বিশেষ পরিস্থিতির কারণে ঘটে। এটি সাধারণত গ্রীষ্মকালে অথবা বর্ষাকালের শুরুর দিকে বেশি দেখা যায়। যখন উষ্ণ এবং আর্দ্র বাতাস উপরের দিকে উঠে যায় এবং ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়, তখন বজ্রঝড় সৃষ্টি হয়। এই বজ্রঝড়ের সঙ্গে থাকা কিউমুলোনিম্বাস মেঘের ভেতরে শক্তিশালী উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ থাকে।
- এই বায়ুপ্রবাহ জলকণাগুলিকে মেঘের অত্যন্ত ঠান্ডা স্তরে নিয়ে যায়। সেই স্তরে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে, যার ফলে জলকণাগুলি দ্রুত জমে বরফে পরিণত হয়। তবে শিলাবৃষ্টি ঘটার পেছনে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ কাজ করে।
- মেঘের ভেতরে যদি বায়ুপ্রবাহ খুব শক্তিশালী হয়, তাহলে বরফের টুকরোগুলি বারবার উপরের দিকে উঠে এবং নীচে নামে। এই প্রক্রিয়ায় তাদের আকার ক্রমাগত বড় হতে থাকে। অবশেষে, যখন শিলাগুলি এত ভারী হয়ে যায় যে উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ আর সেগুলিকে ধরে রাখতে পারে না, তখন তারা মাটিতে পড়ে।
- এখন কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে বা কিউমুলোনিম্বাস মেঘ যে এই প্রক্রিয়াটি করে, তা সম্পর্কে আপনারা জানতে পারবেন। এটি এমন একমাত্র মেঘ, যা শিলাবৃষ্টি তৈরির জন্য উপযুক্ত। এই মেঘটি বিশেষত উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় তৈরি হয়। এর ভেতরের শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ এবং নিম্ন তাপমাত্রা শিলাবৃষ্টি তৈরির জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
- শিলাবৃষ্টি কেন হয় তা বোঝার জন্য কিউমুলোনিম্বাস মেঘের গঠন এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই মেঘের ভেতরে বিদ্যমান আর্দ্রতা এবং উচ্চ গতির বায়ুপ্রবাহ বরফের টুকরোগুলির গঠনকে ত্বরান্বিত করে। পাশাপাশি, মেঘের উচ্চতায় তাপমাত্রার তীব্র হ্রাস বরফের কণাগুলিকে আরও কঠিন করে তোলে।
- শিলাবৃষ্টি শুধু প্রাকৃতিক কারণেই ঘটে না, বরং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও এই ধরনের আবহাওয়া ঘটনার ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাপমাত্রার বৃদ্ধির ফলে মেঘের আকার এবং তীব্রতা বাড়তে পারে, যা শিলাবৃষ্টির ঘটনাকে আরও প্রবল করে তোলে। সুতরাং, কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে এবং এই প্রক্রিয়াটি কেন ঘটে, তা বোঝা শুধু বৈজ্ঞানিক দিক থেকে নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
শিলাবৃষ্টি কখন হয়
শিলাবৃষ্টি সাধারণত গ্রীষ্মকালে বা বর্ষার শুরুর দিকে হয়। এই সময় আবহাওয়ার মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে, যা শিলাবৃষ্টির জন্য আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি করে। বিশেষত দিনের বেলা যখন তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে, তখন মাটির কাছাকাছি স্তরের গরম বাতাস উপরের দিকে উঠে যায়।
এই গরম বাতাস ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে মিশে গেলে বজ্রঝড়ের সৃষ্টি হয়। এই বজ্রঝড়ের সঙ্গেই শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সন্ধ্যার দিকে, যখন দিনের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে এবং ঠান্ডা বাতাস গরম বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়, তখন শিলাবৃষ্টির ঘটনা ঘটতে পারে। আবহাওয়ার এই আকস্মিক পরিবর্তন কিউমুলোনিম্বাস মেঘ তৈরির জন্য আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে।
কিউমুলোনিম্বাস মেঘের অভ্যন্তরে শক্তিশালী উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ জলকণাগুলিকে উচ্চতার ঠান্ডা স্তরে নিয়ে যায়, যেখানে তারা বরফে পরিণত হয় এবং পরে শিলাবৃষ্টি হিসেবে মাটিতে পড়ে। শিলাবৃষ্টি সাধারণত দিন শেষে বা সন্ধ্যার দিকে বেশি হয়। তবে শীতকালে শিলাবৃষ্টি তুলনামূলক বিরল, কারণ এই সময় মাটির কাছাকাছি স্তরে পর্যাপ্ত তাপ থাকে না যা গরম বাতাসের উত্থান ঘটাতে পারে।
শিলাবৃষ্টির সময় বজ্রঝড়ের উপস্থিতি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। বজ্রঝড়ের সময়ই মেঘের অভ্যন্তরে জলের কণা হিমায়িত হয়ে শিলায় পরিণত হয়। শিলাবৃষ্টি কখন হয়, তা নির্ধারণ করার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আবহাওয়ার রিপোর্টে বজ্রঝড় বা কিউমুলোনিম্বাস মেঘ গঠনের কথা বলা হয়, তখন শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষত উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া শিলাবৃষ্টির জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও শিলাবৃষ্টির সময় ও ঘনত্বের ওপর প্রভাব ফেলছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আবহাওয়ার মডেলে পরিবর্তন আসছে, যা শিলাবৃষ্টির সময়কালকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং, শিলাবৃষ্টি সংগঠিত হবার সময় এবং কারণ জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত কৃষি এবং পরিবেশগত দিক থেকে।
শিলাবৃষ্টির ক্ষেত্রে জলকণা গুলি কোন প্রক্রিয়ায় বরফের টুকরো তে পরিণত হয়
শিলাবৃষ্টি একটি আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক ঘটনা, যেখানে জলকণাগুলি শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে বরফের টুকরোতে পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয় যখন মেঘের ভিতরে জলকণা একটি বিশেষ তাপমাত্রায় পৌঁছায়। শিলাবৃষ্টির সময়, যখন গরম বাতাস উপরের দিকে ওঠে, তখন মেঘের ভেতরে থাকা জলকণাগুলি ক্রমাগত ঠান্ডা স্তরে চলে যায়। এই স্তরের তাপমাত্রা অত্যন্ত কম থাকে, যার ফলে জলকণাগুলি দ্রুত হিমায়িত হয়ে বরফের আকার ধারণ করে।
শিলাবৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয় যখন মেঘের মধ্যে শক্তিশালী উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ জলকণাগুলিকে উপরের দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। এই সময়, জলকণাগুলি মেঘের ঠান্ডা স্তরে চলে যায় যেখানে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে থাকে। জলকণাগুলি যখন এই স্তরে পৌঁছায়, তখন তারা দ্রুত বরফে পরিণত হয়।
বরফের এই কণাগুলির চারপাশে আরও জল জমতে থাকে এবং তারা বড় হতে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় বরফের আকার বৃদ্ধি পায়। যখন শিলাগুলির আকার এত বড় হয়ে যায় যে উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ আর সেগুলিকে মেঘে ধরে রাখতে পারে না, তখন তারা মাটিতে পড়ে। মাটিতে পড়ে আসা এই বরফের টুকরোগুলিই শিলাবৃষ্টি হিসেবে পরিচিত।
এই প্রক্রিয়া ঘটতে থাকে কিউমুলোনিম্বাস মেঘের মধ্যে, যা বজ্রঝড়ের সময় তৈরি হয়। কিউমুলোনিম্বাস মেঘে থাকা উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহের কারণে জলকণাগুলি উপরে ওঠে এবং শিলাবৃষ্টির সৃষ্টি হয়। কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে জানা থাকলে বলতে পারবেন, কিউমুলোনিম্বাস মেঘটি এই কাজের জন্য দায়ী। এই মেঘে শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ এবং তীব্র তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে জলকণাগুলি বরফে পরিণত হয়ে শিলাবৃষ্টি সৃষ্টি করে।
শিলাবৃষ্টির সময় মেঘের ভেতর থেকে জলকণাগুলি বরফে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া প্রকৃতির এক অবিশ্বাস্য বৈজ্ঞানিক রহস্য। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হওয়া শিলাগুলি মাটিতে পড়ে কৃষিকাজ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, তাই এর কার্যকারিতা এবং প্রক্রিয়া বোঝা জরুরি।
কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে
প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলাবৃষ্টি একটি বিরল এবং শক্তিশালী আবহাওয়া ঘটনা যা কিছু নির্দিষ্ট ধরনের মেঘ থেকেই সৃষ্টি হয়। এই মেঘের নাম হলো কিউমুলোনিম্বাস মেঘ। কিউমুলোনিম্বাস মেঘ একটি অত্যন্ত ঘন, শক্তিশালী এবং বিশাল আকারের মেঘ যা সাধারণত বজ্রঝড় এবং শিলাবৃষ্টি সৃষ্টি করে। এই মেঘের ভেতরে অনেক উঁচু স্তর থাকে যেখানে তাপমাত্রা অত্যন্ত কম, এবং সেখানে শক্তিশালী উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহও থাকে যা জলকণাগুলিকে খুব দ্রুত উপরে নিয়ে যায়।
কিউমুলোনিম্বাস মেঘ সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ার সময় তৈরি হয়। বিশেষত গ্রীষ্মকাল বা বর্ষাকালে তাপমাত্রা উচ্চ এবং বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে এই মেঘ সৃষ্টি হয়। এই মেঘের গঠন এবং তার ভিতরে থাকা জলকণাগুলির অবস্থা শিলাবৃষ্টি তৈরির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। কিউমুলোনিম্বাস মেঘের ভেতরের শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ জলকণাগুলিকে অত্যন্ত ঠান্ডা স্তরে নিয়ে গেলে তা হিমায়িত বরফের আকারে বড় হতে থাকে।
কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে, এর উত্তর হলো, কিউমুলোনিম্বাস মেঘের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটি ঘটে। এই মেঘের শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ এবং ঠান্ডা তাপমাত্রা জলকণাগুলিকে বরফের টুকরোতে পরিণত করার জন্য আদর্শ পরিবেশ প্রদান করে। যখন এই বরফের টুকরোগুলি এত বড় হয়ে যায় যে উর্ধ্বমুখী বায়ু তাদের আর ধরে রাখতে পারে না, তখন তারা মাটিতে পড়ে।
শিলাবৃষ্টি তখনই হয়, যখন কিউমুলোনিম্বাস মেঘে জলকণাগুলি বরফে পরিণত হয় এবং সেগুলি মাটিতে পড়ে। এই প্রক্রিয়াটি বজ্রঝড়ের সঙ্গেও ঘটে, কারণ বজ্রঝড়ের সময়ে মেঘের ভিতরে আর্দ্রতা এবং শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ থাকে যা শিলাবৃষ্টির সৃষ্টি করতে সহায়ক। অতএব, শিলাবৃষ্টি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা যা কেবল কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে ঘটে এবং এই মেঘের গঠন, তাপমাত্রা এবং বায়ুপ্রবাহের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি
শিলাবৃষ্টি কৃষকদের জন্য একটি বড় ধরনের আতঙ্ক হতে পারে, কারণ এটি কৃষিজমির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। শিলাবৃষ্টির সময় বড় আকারের শিলাগুলি মাটিতে পড়ে এবং ফসলের গাছপালা ভেঙে দেয়, জমিতে ক্ষত তৈরি করে, এবং এর ফলে ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। শিলাবৃষ্টি এমন এক প্রাকৃতিক ঘটনা যা কৃষকের জন্য মারাত্মক আর্থিক ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষত যখন তা প্রয়োজনীয় সময়ে ঘটে। শিলাবৃষ্টির ফলে গাছের পাতা, ফুল এবং ফল নষ্ট হয়ে যায়। বড় আকারের শিলাগুলি যখন গাছের উপর পড়ে, তখন তা গাছের ডালপালা ভেঙে দেয় এবং ফলের গায়ে গভীর ক্ষত তৈরি করে। শিলাবৃষ্টির কারণে গাছের বেঁচে থাকা অংশও দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে পরবর্তী সময়ে ফসলের ফলন অনেক কমে যায়।
- শিলাবৃষ্টির কারণে শাকসবজি যেমন পেঁয়াজ, টমেটো, এবং গাজরের মতো ফসলও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদের সঠিক পরিপক্বতা না হওয়া পর্যন্ত শিলাবৃষ্টি ঘটলে এসব ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যায়।
- বিশেষত গম, ধান, ফল এবং শাকসবজির মতো ফসল শিলাবৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গমের ক্ষেত্রেও শিলাবৃষ্টি কৃষকের জন্য এক বড় বিপদ হতে পারে। গমের কঞ্চি শিলাবৃষ্টির আঘাতে ভেঙে পড়ে, ফলে খড় এবং বীজের ক্ষতি হয়।
- ধানের ক্ষেতেও শিলাবৃষ্টির ফলে ধান পেকে যাওয়ার আগেই সেগুলোর শীষ ভেঙে যায়, যার ফলে ধানের উৎপাদন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষকরা বীজ, সময় এবং পরিশ্রমের অপচয় সহ আরও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
- কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে তা জানার মাধ্যমে কৃষকরা আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন। যখন কিউমুলোনিম্বাস মেঘের গঠন শুরু হয় এবং আবহাওয়া খারাপ হতে পারে, তখন কৃষকরা শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস অনুযায়ী তাদের জমিতে প্রস্তুতি নিতে পারেন।
- তারা ক্ষেতের উপর নেট বা বিশেষ ধরনের আবরণ ব্যবহার করতে পারেন যাতে শিলাবৃষ্টি থেকে ফসলের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। এর ফলে ফসলের ক্ষতি কিছুটা কমানো সম্ভব। এছাড়া, কৃষকরা শিলাবৃষ্টির পর ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতগুলির যথাযথ যত্ন নিলে কিছুটা পুনরুদ্ধার সম্ভব।
- তবে, শিলাবৃষ্টির সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের যে আর্থিক ক্ষতি হয়, তা অনেক সময় পূরণ করা সম্ভব হয় না। তাই শিলাবৃষ্টির মত প্রকৃতিক বিপদ থেকে বাঁচতে সতর্কতা ও প্রস্তুতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
- শিলাবৃষ্টি একটি প্রকৃতির অভূতপূর্ব ঘটনা হলেও, এটি মানুষের জীবনে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রতি নজর রাখা জরুরি। শিলাবৃষ্টি কখন হয় এবং কোন মেঘ থেকে হয়ে থাকে, এ বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব।
- এই তথ্যগুলি জেনে এবং শিলাবৃষ্টির বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থেকে আমরা এ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে আরও ভালোভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারব।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে কোন মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে শিলাবৃষ্টি কি, কখন, কোন প্রক্রিয়ায় হয় এবং এতে ফসলের ক্ষতি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url