পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয়
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন পুরুষদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়ার কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।মানুষের শরীরে অনেক ধরনের রোগের প্রকোপ ঘটে। যেসব অবহেলা করলে প্রাথমিক লক্ষণগুলো আমলে না নিলে অনেক সময় এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই আজকের পোস্টে পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ভূমিকা
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া একটি অস্বস্তিকর ও বিরক্তিকর সমস্যা যা অনেক পুরুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এটি প্রায়শই প্রস্রাবের সময় বা পরে একটি তীব্র জ্বালাপোড়ার অনুভূতি তৈরি করে, যা দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের আজকের পোস্টে আমরা যা কিছু জানবো তা হল- প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কি, পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ, প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা, পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয়, পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া ঔষধ এ সকল বিষয়ের তথ্য সম্পর্কে।
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কি
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হলো এমন একটি শারীরিক সমস্যা, যেখানে প্রস্রাব করার সময় প্রস্রাবের রাস্তায় তীব্র জ্বালা বা পোড়ার অনুভূতি হয়। এটি মেডিক্যাল পরিভাষায় ডিসইউরিয়া (Dysuria) নামে পরিচিত। এই সমস্যা সাধারণত প্রস্রাবনালী, মূত্রথলি, প্রস্টেট বা কিডনির সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য কিছু কারণও এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে, যেমন প্রস্রাবে পাথর, ডায়াবেটিস, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার।
নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে, তবে নারীদের ক্ষেত্রে এটি তুলনামূলক বেশি হয়। নারীদের মূত্রনালীর গঠন ছোট হওয়ার কারণে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যাও এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হলে কিছু লক্ষণ সাধারণত দেখা যায়,যার মাধ্যমে পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় নির্দেশনা পাওয়া যাবে।
যেমন ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন অনুভব করা, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন, এবং পেটে বা কোমরে ব্যথা। এই ধরনের সমস্যায় দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসার জন্য প্রস্রাব পরীক্ষা বা অন্যান্য ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা প্রয়োজন হতে পারে। সংক্রমণ থাকলে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
তবে জীবনধারার পরিবর্তন, পর্যাপ্ত পানি পান, এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধের জন্য মূত্রনালীর সঠিক যত্ন নেওয়া এবং প্রস্রাব চেপে না রাখা জরুরি। যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে সেটি অন্য কোনো জটিলতার ইঙ্গিত হতে পারে, যা অবহেলা করলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ অবস্থা বা জীবাণুর উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে মূত্রনালীর সংক্রমণ বা প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা অবহেলিত থাকলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়ার কারণ বিভিন্ন হতে পারে। প্রধান কারণগুলো হলো।
- প্রস্রাবনালী বা মূত্রথলিতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এটি সাধারণত মলমূত্রের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা হয়।
- প্রস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ বা সংক্রমণ পুরুষদের প্রস্রাবে জ্বালা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। এটি তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
- মূত্রনালীতে পাথর বা ক্যালসিয়াম জমা হলে তা প্রস্রাব করার সময় ঘর্ষণ ও জ্বালার কারণ হতে পারে।
- ক্ল্যামিডিয়া, গনোরিয়া বা হের্পিসের মতো যৌনবাহিত সংক্রমণ পুরুষদের প্রস্রাবের রাস্তায় প্রদাহ এবং জ্বালা তৈরি করে।
- পর্যাপ্ত পানি না খেলে প্রস্রাব ঘন হয়ে যায়, যা প্রস্রাব করার সময় জ্বালা সৃষ্টি করে।
- কিছু সাবান, শ্যাম্পু, বা প্রসাধনী মূত্রনালীতে সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে, যার ফলে জ্বালা অনুভূত হয়।
- মূত্রনালীর কোনো অংশ সরু হয়ে গেলে প্রস্রাবের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যা জ্বালার কারণ হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিসের কারণে মূত্রনালীতে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।যদি এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে এটি কিডনি বা প্রস্টেটের জটিল সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় হিসেবে তাই সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ বা প্রদাহের ইঙ্গিত দেয়। সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।
- এটি প্রস্রাবনালী বা মূত্রথলিতে প্রদাহের প্রধান লক্ষণ।
- প্রস্রাবে রক্তের মিশ্রণ, ঘন প্রস্রাব, বা তীব্র গন্ধ হলে এটি সংক্রমণ বা পাথরের কারণে হতে পারে।
- মূত্রথলি বা কিডনির সমস্যার কারণে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
- এটি ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের (UTI) অন্যতম প্রধান লক্ষণ।
- মূত্রনালী সরু হয়ে গেলে বা প্রদাহ থাকলে প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়।
- যদি মূত্রতন্ত্রে সংক্রমণ কিডনিতে পৌঁছে যায়, তবে জ্বর, কাঁপুনি বা ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।
এসব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য কিছু নির্দেশনা পালন করতে হয়। পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় হচ্ছে প্রথমে প্রস্রাব পরীক্ষা ও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সংক্রমণ থাকলে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, এবং রাসায়নিক পণ্য এড়িয়ে চলা সহায়ক। সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী হলে কিডনি, প্রস্টেট বা মূত্রনালীর জটিলতর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। যা জীবন সংশয়ের কারণ হতে পারে।
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা
প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া একটি অস্বস্তিকর সমস্যা, যা প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে উপশম করা সম্ভব। পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় জানা থাকলে। তার থেকে পরিত্রাণের উপায় সহজেই পাওয়া যাবে। নীচে কিছু কার্যকর ঘরোয়া চিকিৎসার কথা উল্লেখ করা হলো।
- পানি পান বৃদ্ধি করুনঃ দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এটি প্রস্রাবের রাস্তাকে পরিষ্কার রাখে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
- নারকেলের পানিঃ নারকেলের পানি শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে ডিটক্সিফাই করে এবং প্রস্রাবে জ্বালা কমায়।
- গরম সেঁকঃ তলপেটে হালকা গরম সেঁক দিলে প্রদাহ কমে এবং অস্বস্তি দূর হয়।
- মেথি বীজ ভিজিয়ে খাওয়াঃ মেথি বীজ প্রস্রাবের রাস্তায় প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি সকালে খালি পেটে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- দুধ ও হলুদঃ দুধে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করলে প্রদাহ কমে। হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
- ক্র্যানবেরি জুসঃ ক্র্যানবেরি জুস প্রস্রাবে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি নিয়মিত পান করলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
- পুদিনার চাঃ পুদিনার চা শরীরকে শীতল করে এবং পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় এই ঘরোয়া চিকিৎসা প্রস্রাবে জ্বালা কমাতে কার্যকরী পদ্ধতি।
- আপেল সিডার ভিনেগারঃ এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করলে সংক্রমণ দূর হতে সাহায্য করে।
- প্রাকৃতিক ফলের রসঃ তাজা কমলালেবু বা লেবুর রস ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ক্যাফেইন, মসলাদার খাবার এবং অ্যালকোহল পরিহার করুন। প্রস্রাব চেপে রাখবেন না এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে আরাম না পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা বা তীব্র সংক্রমণের ক্ষেত্রে মেডিক্যাল চিকিৎসা অপরিহার্য। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে বড় ধরনের জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয়
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে দ্রুত এবং সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, কারণ এটি প্রাথমিক অসুস্থতা বা বড় কোনো জটিলতার ইঙ্গিত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে নিম্নলিখিত করণীয়গুলো অনুসরণ করা উচিত।
পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
ডাক্তারের পরামর্শ নিনঃ যদি জ্বালাপোড়ার পাশাপাশি জ্বর, পেটে বা কোমরে ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত দেখা যায় বা সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুনঃ মূত্রনালী সংক্রমণ এড়াতে প্রতিদিন সঠিকভাবে মূত্রনালীর পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। প্রতিবার প্রস্রাবের পরে এবং যৌন কার্যকলাপের পরে মূত্রনালী ধুয়ে ফেলুন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুনঃ বেশি মশলাদার খাবার, ক্যাফেইন, এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। এগুলো মূত্রনালীতে সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
পেশাগত পরীক্ষা করানঃ সংক্রমণ, পাথর বা প্রস্টেটের সমস্যার কারণ নির্ণয়ের জন্য ইউরিন টেস্ট, রক্ত পরীক্ষা, বা প্রস্টেট পরীক্ষা করান।
ওষুধ সেবন করুনঃ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক বা প্রদাহরোধী ওষুধ ব্যবহার করুন।
প্রাকৃতিক প্রতিকার অনুসরণ করুনঃ নারকেলের পানি, মেথি বীজ, এবং দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করলে জ্বালাপোড়া কমতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়ঃ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। যৌনবাহিত রোগ (STD) প্রতিরোধে সুরক্ষিত যৌন অভ্যাস অনুসরণ করুন। প্রস্রাব চেপে না রেখে সময়মতো প্রস্রাব করুন। রাসায়নিক পদার্থযুক্ত সাবান বা প্রসাধনী এড়িয়ে চলুন।
সচেতনতার গুরুত্বঃ পুরুষদের মধ্যে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া অনেকসময় অবহেলা করা হয়, যা কিডনি সংক্রমণ, মূত্রনালীতে পাথর, বা প্রস্টেটের দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের কারণ হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে বড় ধরনের জটিলতা এড়ানো সম্ভব। তাই উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সচেতনতা এবং সময়মতো চিকিৎসা পুরুষদের প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া সমস্যা প্রতিরোধ ও নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া ঔষধ
পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর সমস্যা, যা সঠিক চিকিৎসা দ্বারা নিরাময় সম্ভব। পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি প্রথমে ঘরোয়া প্রতিকার অনুসরণ করতে হবে। যাতে যদি উপশম না পায় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন অত্যন্ত জরুরি। এই সমস্যার কারণ অনুযায়ী চিকিৎসক বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করতে পারেন। সাধারণত ব্যবহৃত ঔষধগুলোর মধ্যে রয়েছে।
- অ্যান্টিবায়োটিকঃ যদি সমস্যা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়, তবে অ্যান্টিবায়োটিক সবচেয়ে কার্যকর।
- সিপ্রোফ্লক্সাসিনঃ এটি সাধারণ ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) এবং অন্যান্য সংক্রমণে ব্যবহৃত হয়।
- নলিডিক্সিক অ্যাসিডঃ ইউরিনারি ইনফেকশনের চিকিৎসায় কার্যকর। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে প্রস্রাব পরীক্ষা করে সঠিক ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা জরুরি।
- পেইন কিলার বা ব্যথানাশক ঔষধঃ প্রস্রাবের সময় ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহৃত হয়। এটি শুধুমাত্র অস্বস্তি কমায়, মূল কারণ দূর করতে সহায়ক নয়।
- অ্যালকালাইন মিশ্রণঃ প্রস্রাবের জ্বালা কমাতে অ্যালকালাইন সিরাপ বা ট্যাবলেট দেওয়া হয়। এটি প্রস্রাবের অম্লত্ব কমিয়ে ক্ষারত্ব বাড়ায়, যা জ্বালা কমাতে সহায়ক।
- প্রস্টেটের জন্য ঔষধঃ যদি জ্বালাপোড়ার কারণ প্রস্টেটের সমস্যা হয়, তবে ট্যামসুলোসিন (Tamsulosin) বা অন্য প্রস্টেটের জন্য নির্ধারিত ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এটি প্রস্টেটের মাংসপেশি শিথিল করে প্রস্রাবের প্রবাহ সহজ করে।
- অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধঃ ফাঙ্গাল সংক্রমণ থাকলে চিকিৎসক অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ দিতে পারেন।
- ক্র্যানবেরি বা ইউরোসোলভিং ঔষধঃ ইউরিনারি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ক্র্যানবেরি নির্যাসযুক্ত ঔষধ বা সাপ্লিমেন্ট প্রায়ই দেওয়া হয়।
- সতর্কতাঃ কখনো নিজের ইচ্ছায় বা পরামর্শ ছাড়াই ঔষধ গ্রহণ করবেন না। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক ডোজ মেনে চলা জরুরি।
- পরীক্ষাঃ দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা বা জটিলতা এড়াতে প্রস্রাব পরীক্ষা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডায়াগনস্টিক টেস্ট করানো উচিত। সঠিক ঔষধের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা ও পর্যাপ্ত পানি পানও সমান গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চললে দ্রুত আরোগ্য লাভ সম্ভব।
অনেক পুরুষ মানুষ পরিপাটিভাবে থাকার পরও তাদের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করা উচিত নয়। সঠিক চিকিৎসা এবং যত্নই এর সমাধানের পথ। তাই প্রতিদিনের জীবনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণ করে এই সমস্যাকে দূরে রাখা সম্ভব। শরীরের সামান্য পরিবর্তনকেও গুরুত্ব দিন, কারণ এটি ভবিষ্যতের বড় সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে পুরুষদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়ার কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url