গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় জেনে নিন
প্রিয় বন্ধুরা গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এই সম্পর্কে জানতে চান? যদি আপনারা এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেল ধৈর্য সহকারে পড়ুন। কারণ সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়লে আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পাঠক আপনারা আর দেরি না করে এই আর্টিকেল একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আশা করি আপনারা যারা গর্ভাবস্থায় এই পোষ্ট পড়তে এসেছেন বা যাদের পরিবারে গর্ভবতী মায়েরা রয়েছে তাদের জন্য অবশ্যই এই আর্টিকেলটি অনেক উপকার হতে চলেছে। তাই দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
ভূমিকা
অনেক গর্ভবতী মায়েরা রয়েছে যারা গর্ভে থাকা শিশুর বুদ্ধি বা মেধা ভালো করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে থাকেন। মূলত গর্ভে থাকা শিশুর সম্পূর্ণ মেধা আল্লাহ তায়ালার ওপর নির্ভর করে। যদি আল্লাহতালা চান তাহলে আপনার বাচ্চা এমনিতেই বুদ্ধিমান হবে। শুধু বিশ্বাস রাখতে হবে। তবে এর বাইরেও কিছু প্রচলিত কথাই গর্ভবস্থায়ী কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এবং গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা কালো হয় এই বিষয়গুলো জানতে চান। তাই আজকে আমি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাই আর দেরি না করে আসুন আলোচনায় যাওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। তার কারণ হলো গর্ভে থাকা শিশু সুস্থ ও সবল ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য। সাধারণত গর্ভাবস্থায় মায়ের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই অজানা। অনেকেই গর্ভাবস্থায়ী খেজুর খেলে কি হয় তা জানেন না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আসুন কি কি উপকারিতা রয়েছে তার সঠিকভাবে জেনে নেওয়া যাক।
প্রসব বেদনার ব্যাথা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেজুর খেলে প্রসব বেদনার ব্যথা অনেকটা কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনারা যারা গর্ভবতী মায়েরা রয়েছেন তারা খাবারের তালিকায় খেজুর রাখতে পারেন।
হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়তা করেঃ খেজুরের রয়েছে ভিটামিন কে ও ম্যাগনেসিয়াম যা গর্ভাবস্থায় খেলে শরীরের হাড় ও দাঁতের গঠনে অনেক বেশি সহায়তা করে।
গর্ভে থাকা শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেঃ অনেক গর্ভবতী মায়েরা রয়েছে যারা তাদের গর্ভে থাকা সন্তানের ওজন নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে থাকেন। তবে আপনারা দুশ্চিন্তা না করে প্রতিদিন পরিমাণ মতো খেজুর খেতে পারেন। কারণ গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
শরীরের রক্ত উৎপাদন করেঃ গর্ভে থাকা শিশু যখন জন্ম দেয় তখন মায়েদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত বের হয়ে যায়। এতে করে গর্ভবতী মায়েদের শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যায় শুধু তাই নয় পাশাপাশি নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে খেজুর খেলে শরীরের দ্রুত রক্ত তৈরি হয় এবং শক্তির সঞ্চার তৈরি করতে সাহায্য করে।
সার্ভিক্স নরম করেঃ গর্ভকালীন সময়ে শেষের দিকে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৮০ গ্রাম খেজুর খেলে সার্ভিক্স নরম হতে অনেক বেশি সাহায্য করে। আর এটি প্রস্রাবের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সহায়তা করে। ফলে অনেক সময় কৃত্রিমভাবে বা ওষুধ দিয়ে প্রসব ব্যথা সৃষ্টি করার কোন রকম প্রয়োজন পড়ে না।
চুল পড়ার সমস্যা রোধ করতেঃ গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদের চুল পড়ার সমস্যাটি দেখা যায়। তবে চুল পড়া রোধ করতে হতে পারে উপকারী খেজুর। কারণ খেজুরে থাকা আইরন রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ফলে চুল পড়া কম হয়।
জরায়ুর পেশি শক্তিশালী করেঃ খেজুরে অক্সিটোসিন (oxytocin) নামক এক ধরনের হরমোন থাকে। যা জরায়ুর পেশি সংকোচন নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এই হরমোন গর্ভবতী মায়েদের প্রস্রবের সময় প্রসব বেদনা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং স্বাভাবিক প্রস্রাবের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর এই জন্যই গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন খেজুর খেতে বলা হয়।
হাঁপানি ও কাশির সমস্যা দূর করেঃ অনেক গর্ভবতী মায়েরা রয়েছে যারা হাঁপানি ও কাশির সমস্যায় ভুগেন। যদি আপনাদের এই ধরনের সমস্যা হয় তাহলে তিনটা না করে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। কারণ খেজুর খেলে এর সমস্যা খুব সহজেই দূর করা সম্ভব হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করেঃ মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য প্রতিদিনখেজুর খেতে পারেন। কারণ খেজুর খেলে শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে এবং গর্ভবতী মায়ের মন মানসিকভাবে আনন্দময় থাকতে সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় নিজের শরীর এবং গর্ভে থাকা শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন সবজি খেতে মানা করেন সকল ডাক্তাররা। তাই গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা এই সকল বিষয়েই আজকের এই আর্টিকেল। আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান তারা অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে তথ্যগুলো জানবেন। গর্ভকালীন সময়ে একটু উনিশ বিশ হলেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
কাঁচা পেঁপেঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের কাঁচা পেঁপে অথবা আধা কাঁচা পেঁপে একদমই খাওয়া উচিত নয়। পেঁপে অন্যান্য সময় আমাদের শরীরের পুষ্টিকর সবজি হিসেবে পরিচিত হলেও গর্ভাবস্থায় তা হতে পারে নানা ধরনের সমস্যার কারণ। কাঁচা পেঁপে উচ্চ মাত্রায় ল্যাটেক্স থাকে।
আমেরিকান যে সকল গবেষক দলগুলো রয়েছে তারা ইঁদুরের ওপর করা গবেষণা করে দেখেন যে ল্যাটেক্স জরায়ুর শক্তিশালী পেশি ও গ্রন্ধি সংকোচন করে থাকে। তাই অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে কাঁচা পেঁপে খেলে সেটা গর্ভে থাকা শিশুর জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে।
তবে গর্ভকালীন সময়ে পাকা পেঁপে খেলে কেমন কোন সমস্যা নেই। কারণ পাকা পেঁপেতে ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
বেগুনঃ আপনারা হয়তো অনেকেই বেগুনের সাথে পরিচিত। তার কারণ হলো এলার্জি। বিভিন্ন খাবারে বেগুন রান্না করার ফলে অনেকেই এটি খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যায় ভুগেন। তবে গর্ভাবস্থায় বেগুন না হয় ভালো।
গর্ভাবস্থায় শুধু যে এলার্জির সমস্যা হবে তা নয় বেগুন খেলে আরো অনেক ধরনের মারাত্মক ক্ষতির প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় যদি নারীরা বেগুন খায় তাহলে ঋতুস্রাব হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই এটি মজার খাবার হলেও গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত।
সজিনাঃ সজিনাতে রয়েছে আলফা সিটেস্টেরল (Alpha-citesterol) নামক এক ধরনের উপাদান। যা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অন্যান্য সময় এই খাবারটি অনেক পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় সবজি হলেও গর্ভকালীন সময়ে এটি না খাওয়াই উচিত।
করলাঃ মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ করলা হলেও গর্ভাবস্থায় এটি হতে পারে মারাত্মক ক্ষতির কারণ। তার একটাই কারণ সেটি হল করলাতে গ্লাইকোলাইসিস, সেপোনিক, মারোডিসিন নামক পদার্থ থাকে যা গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই অন্যান্য সময় করলা পুষ্টিকর সবজি হলেও গর্ভাবস্থায় খাওয়া একদমই উচিত নয়।
কাঁচা মুলাঃ গর্ভাবস্থায় কাঁচা মুলার সালাত খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এগুলোতে সালমোনিয়া লিস্টেরিয়ার মত ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যা গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস শুধু শরীরের যত্নই নয়, গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান শিশুর বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় কী খেলে শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও মস্তিষ্কের বিকাশ সঠিকভাবে হয়।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডঃ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শিশু মস্তিষ্কের কোষের বিকাশে সহায়ক। মাছ ও বাদামে প্রচুর ওমেগা-৩ থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যতালিকায় নিয়মিত ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার থাকলে শিশুর দৃষ্টি, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু ব্যবস্থার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ফল এবং শাকসবজিঃ বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শিশুর মস্তিষ্কের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটায়। বিশেষ করে, বেরি, আঙুর, টমেটো, এবং গাজর খাওয়া শিশুর বুদ্ধি এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
ডিমঃ ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলিন থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্কের বৃদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। নিয়মিত ডিম খাওয়া শিশুর কগনিটিভ ডেভেলপমেন্টে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে, রান্না করা ডিম খাওয়া উচিত এবং অতিরিক্ত কাঁচা ডিম থেকে বিরত থাকা ভালো।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারঃ প্রোটিন শিশুর মস্তিষ্কের কোষের গঠন এবং পুনর্গঠনে সহায়ক। মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, বাদাম এবং দই প্রোটিনের ভালো উৎস। গর্ভাবস্থায় মায়ের পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সহায়ক।
আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিডঃ আয়রন শিশুর মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আয়রনের ঘাটতি হলে শিশুর সঠিক মস্তিষ্ক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। পালং শাক, লাল মাংস, এবং ডাল আয়রনের ভালো উৎস। ফলিক অ্যাসিড মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন, যা গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে শিশুর মস্তিষ্কের এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে।
দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যঃ দুধে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন বি-১২ থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্কের উন্নয়নে সহায়ক। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য যেমন দই, পনির খাওয়া শিশুর স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শস্যদানাঃ গর্ভাবস্থায় গ্লুকোজ মস্তিষ্কের শক্তির প্রধান উৎস। তাই শস্যদানা যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস, এবং গোটা গমের রুটি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এগুলো মায়ের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখতে সহায়ক এবং শিশু মস্তিষ্কের বিকাশে অবদান রাখে। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা কালো হয়
গর্ভাবস্থায় সন্তানের গায়ের রং নিয়ে অনেক মিথ প্রচলিত আছে, যেমন কিছু খাবার খেলে বাচ্চা কালো হতে পারে। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস সন্তানের ত্বকের রং নির্ধারণ করে না। শিশুর ত্বকের রং নির্ভর করে মূলত জিনের ওপর, যা বাবা-মায়ের জিনগত বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণে গঠিত হয়। তাই, কোনো খাবার খেলে বাচ্চা কালো বা ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা বাস্তবে নেই।
শিশুর ত্বকের রং প্রধানত মেলানিন নামক একটি পিগমেন্টের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে, যা জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যদি বাবা-মায়ের মেলানিনের ঘনত্ব বেশি হয়, তবে তাদের সন্তানও তুলনামূলক গাঢ় রঙের হতে পারে, এবং মেলানিন কম থাকলে শিশু হতে পারে তুলনামূলক ফর্সা। এই জিনগত প্রভাব খাদ্যাভ্যাস দ্বারা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন খাবার খেলে সন্তানের ত্বকের রং কালো হবে এমন কিছু সাধারণ মিথ প্রচলিত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বলা হয় মায়েরা যদি বেশি কফি বা চা পান করেন, তাহলে তাদের শিশু কালো হতে পারে।
আবার, কিছু প্রচলিত ধারণা বলে কালো আঙুর বা জাম খেলে সন্তানের ত্বক গাঢ় হবে। কিন্তু এই সব ধারণার পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা কালো হয় উল্লেখিত বিষয়গুলো পড়ে আপনি এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার টকজাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। এটি সাধারণ এবং প্রায়শই প্রাকৃতিক শারীরিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। টকজাতীয় খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা মায়ের জন্য পুষ্টিকর। তবে এটি নিয়ন্ত্রিতভাবে খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অতিরিক্ত টক খাবার কখনও কখনও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় টক খাওয়ার কিছু উপকারিতাঃ
ভিটামিন সি সরবরাহঃ টকজাতীয় ফল যেমন লেবু, কমলা, আমলকি প্রভৃতি খাবার গর্ভবতী নারীদের জন্য ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের এবং শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বমিভাব কমায়ঃ গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে বমিভাব বা মর্নিং সিকনেস খুব সাধারণ সমস্যা। এই সময়ে সামান্য লেবুর রস পান করলে বা টকজাতীয় ফল খেলে বমিভাব অনেকাংশে কমানো যায়, যা মায়ের আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।
হজমে সহায়তা করেঃ টকজাতীয় খাবার হজমে সহায়ক। অনেক সময় গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনজনিত কারণে পাচনতন্ত্রের গতি কমে যায়, ফলে গ্যাস এবং অম্বলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। টকজাতীয় খাবার এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে সহায়ক হতে পারে।
আয়রন শোষণে সহায়কঃ গর্ভাবস্থায় আয়রনের প্রয়োজন বেড়ে যায়, এবং ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ বাড়ায়। তাই আয়রনের সঠিক পরিমাণ শোষিত হতে সাহায্য করে টকজাতীয় খাবার।
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কি
অনেক গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন যারা গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কি না এই সম্পর্কে জানতে চান। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। মূলত গর্ভাবস্থায়ী লেবু খাওয়া অনেক উপকারী। কারণ লেবু খেলে বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রণাতে অনেক বেশি সাহায্য। গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটা মহিলারে বমি বমি ভাব হয়ে থাকে।
তবে লেবু বা লেবুর রস খেলে বমি হওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং মা ও গর্ভস্থ শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। এছাড়া লেবুর মধ্যে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সহায়ক।
লেবুর এই উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়েদের ত্বক সুস্থ রাখতে এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শোষণে সহায়তা করে, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে কার্যকর। গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পান জরুরি, তবে অনেক সময় পানির চাহিদা পূরণে কষ্ট হয়। লেবু পানি পান করলে তা শুধু শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে না, বরং ত্বকও সতেজ থাকে। এটি গরমকালে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সহায়ক।
লেবু খাওয়া নিরাপদ হলেও অতিরিক্ত খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। লেবুতে অ্যাসিড থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে অম্বল বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই প্রতিদিন অতিরিক্ত লেবু না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। লেবুর জুস খাওয়ার সময় চিনি এড়ানো ভালো, কারণ চিনি গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
লেখকের মন্তব্য | গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
প্রিয় ভিজিটর আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এবং গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা কালো হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আশা করি আপনারা যারা এই বিষয়গুলো পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছেন তারা অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং নিজের মতামত কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিন। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে জানাই অভিনন্দন।
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url