ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনি কি সুস্থ থাকতে এবং দীর্ঘ জীবন যাপন করতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন। কারণ এই আর্টিকেলে ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যা আপনার জন্য অনেক উপকার হতে পারে। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
নিয়মিত ব্যায়াম আপনার শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। ব্যায়াম শুধু ওজন কমানোর জন্যই নয়, এটি আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। তবে, সব ব্যায়ামই কি সব সময় উপকারী? আসুন জেনে নিই ব্যায়ামের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভূমিকা
ব্যায়াম আমাদের শরীর ও মন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, এবং নিয়মিত ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওজন হ্রাস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর। ব্যায়ামের মাধ্যমে মাংসপেশি শক্তিশালী হয়, শারীরিক স্থিতিশীলতা বাড়ে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। তবে, অতিরিক্ত বা ভুল উপায়ে ব্যায়াম করলে কিছু অপকারিতাও হতে পারে, যেমন মাংসপেশির আঘাত, ক্লান্তি এবং হাড়ের সমস্যা। সঠিকভাবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা যেমন উপকারী, তেমনি এর অপকারিতাগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করা হলে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় আঘাতের ঝুঁকি কমে যায়। তাই, ব্যায়ামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া এবং সঠিক ব্যায়াম অভ্যাস গড়ে তোলাই সুস্বাস্থ্যের মূল চাবিকাঠি।
প্রতিদিন ব্যায়ামের উপকারিতা
রাতে ঘুমানোর সমস্যা কমবেশি অনেক মানুষেরই রয়েছে। অনেকেই রাতে ঘুম না হওয়ার কারণে বিভিন্ন ওষুধ সেবন করে থাকেন। আর আপনারা হয়তো জানেন ঘুমের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যা রয়েছে সেটা হল মারাত্মক। তাই ঘুম নিয়ে কখনোই দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কারণ যদি আপনি প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করেন তাহলে আশা করি আপনার রাতে সুন্দর ঘুম হবে।
প্রতিদিন ২০ মিনিট করে যদি আপনি হাঁটাহাঁটি করেন তাহলে এমনিতেই ঘুম আপনাকে খুজবে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল ব্যক্তিরা প্রতিদিন ২০ মিনিট করে ব্যায়াম করেন তাদের অন্যদের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম মানসিক চাপে ভোগেন। এছাড়াও আরও একটি গবেষণায় বলা হয়েছে শরীরের যে স্ট্রেস হরমোন রয়েছে সেটি করটিসোলের পরিমাণ কমিয়ে দিতে অনেক বেশি সাহায্য করে ব্যায়াম।
প্রতিনিয়ত নিয়ম করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ব্যায়াম করলে আপনার শরীর অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি আরাম দেখাবে এবং মেডিটেশন করলেও ভালো ফলাফল পাবেন। প্রত্যেকটা দিন শরীর চর্চা করা আমাদের প্রয়োজন কিন্তু আমরা বিভিন্ন কাজকর্ম করার কারণে শরীরের পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে পারে না।
বেশিক্ষণ না পারলে অল্প কিছু সময় কাজে লাগিয়ে প্রতিদিন ব্যায়াম করলে মন থাকে ফুরফুরে এবং শরীরের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও সাহায্য করে। শুধু তাই নয় শরীরে ফিট ও সুস্থ থাকতে অনেক বেশি সাহায্য করে ব্যায়াম। তাই ব্যায়াম প্রতিদিন করা ভালো। ব্যায়াম করলে আপনার শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন প্রতিদিন ব্যায়ামের উপকারিতা কতটুকু রয়েছে।
সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম
সাধারণত আমরা অনেকেই সবচেয়ে ভালো এবং উপকারী ব্যায়াম করতে চাই এখন কথা হল কোন ব্যায়াম সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম। অন্যান্য ব্যায়ামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম ব্যায়াম হলো সাঁতার কাটা। যদি আপনার শরীর সুস্থ ও ঝরেঝরে রাখতে চান তাহলে এই ব্যায়ামটি আপনার জন্য অত্যন্ত উপকারী। শুধু তাই নয় প্রতি সপ্তাহে ১০০ থেকে ১৫০ মিনিট সাঁতার কাটলে শরীরের হৃদপিণ্ড ভালো থাকে।
এছাড়াও শরীরের বাড়তি চাপ দূর করতে সাহায্য করে পাশাপাশি রক্তচাপ ডায়াবেটিস এবং রক্তের চর্বিও থাকে নিয়ন্ত্রণে। তাই প্রত্যেকটা মানুষের কমবেশি সাঁতার কাটা উচিত। শরীর সুস্থ রাখার জন্য এবং স্মার্ট থাকার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী এই সাঁতার কাটা। গ্রামগঞ্জের দিকে একটু খেয়াল করলে দেখা যায় অনেক মানুষ সাঁতার কাটেন।
যদি একটু খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন শহরে তুলনায় গ্রাম অঞ্চলের মানুষের রোগে আক্রান্ত খুব কম হয়। তার কারণ হলো প্রায় সকলেই কোন না কোন কাজ করেই থাকে। সেই কাজগুলোর মধ্যে দেখবেন কোন না কোন একটি ব্যায়াম রয়েছে যা তার শরীরের জন্য কার্যকারী। বিশেষ করে একজন মানুষ যদি ব্যায়াম না করে তাহলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে।
তাই প্রত্যেকটা মানুষের উচিত বিভিন্ন ধরনের। তবে সবচেয়ে সাঁতার কাটা অনেক বেশি ভালো এতে করে শরীর সবসময় ঝরঝরে এবং অনেক সুন্দর থাকে। তাহলে আশা করি সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম কোনটি সেই বিষয়ে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা
শক্তি বৃদ্ধি বা স্ট্রেংথ ট্রেনিং এমন এক ধরনের ব্যায়াম, যা শরীরের পেশির শক্তি, ক্ষমতা এবং স্থিতিশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে। বর্তমান জীবনযাত্রায় স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিদের মধ্যে এই ব্যায়ামটি বেশ জনপ্রিয়। এটি শুধু পেশি গঠনের জন্য নয়, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বজায় রাখার জন্যও অত্যন্ত কার্যকর।
শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়ামের উল্লেখযোগ্য উপকারিতাঃ
পেশি শক্তিশালীকরণঃ স্ট্রেংথ ট্রেনিং পেশির গঠন ও শক্তি বৃদ্ধি করে, যা শরীরকে স্থিতিশীল ও কার্যক্ষম রাখে। এটি দেহের কর্মক্ষমতা উন্নত করে এবং দৈনন্দিন কাজে শক্তি দেয়।
বাড়তি ক্যালোরি পোড়ানোঃ এই ধরনের ব্যায়াম করলে ক্যালোরি খরচ বেড়ে যায়, যা ওজন কমাতে সহায়ক। নিয়মিত স্ট্রেংথ ট্রেনিং করলে মেটাবলিজম দ্রুত হয় এবং শরীর অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সক্ষম হয়।
হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধিঃ স্ট্রেংথ ট্রেনিং হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়, যা বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হাড়ের ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। এটি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক।
হার্টের স্বাস্থ্য উন্নতকরণঃ এই ব্যায়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিঃ শক্তি বৃদ্ধি ব্যায়াম স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমাতে সহায়ক। এটি এন্ডরফিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে এবং মনোবল বৃদ্ধি করে।
স্ট্রেংথ ট্রেনিং নিয়মিত চর্চা করলে শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী থাকে। এজন্য সঠিক পদ্ধতিতে ও পর্যবেক্ষণে এই ব্যায়াম করা উচিত।
সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা
এমন অনেকে রয়েছেন যারা প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকেন। আবার কেউ কেউ রয়েছে সারাদিন শুয়ে বসে কাটিয়ে দিন পার করেন। নিজের শরীর সুস্থ রাখার জন্য এবং ঝরঝরে রাখার জন্য ব্যায়াম করা খুবই প্রয়োজন। এতে করে সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। প্রতিনিয়ত যদি ব্যায়াম করা হয় তাহলে পেটের চর্বি এবং ক্যালরি করে সুখী হরমোন নিঃসরণ করে যার ফলে মন মেজাজ সবসময় ভালো থাকে।
সকালে ব্যায়াম করলে আপনি প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা পাবেন। অনেকেই সকালে ঠান্ডার কারণে বা অলসতার কারণে ঘুম থেকে ওঠেন না। এই অভ্যাসটি বাদ দিয়ে সকালে খুব তাড়াতাড়ি উঠে ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। অনেকেই রয়েছেন তারা আবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন কাজ শেষ করে ব্যায়াম করেন। সন্ধ্যাবেলা হোক কিংবা সকালে হোক শরীর ভালো রাখার জন্য ব্যায়াম নিয়মিত করা অত্যন্ত ভালো। তবে আপনি যদি সকালে ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে অবশ্যই কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন। যেমন-
- মন মেজাজ সবসময়ই ভালো থাকবে
- সারাদিন কাজ করার জন্য অনেক শক্তি পাওয়া যাবে
- যে কোন কাজের ব্যাপারে নির্দিষ্ট একটি ফোকাস খুব সহজেই দিতে পারবেন
- খোদার হরমোন কমিয়ে খোদার নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করবে
- ভালো ঘুম হতে সাহায্য করবে
- ভোরবেলা শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়
- সকালে ব্যায়াম করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
উপরে উল্লেখিত যে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো সকালে ব্যায়াম করলে উপকার পাবেন। তাই আপনি এখন ডিসাইড করুন সকালে ব্যায়াম করবেন না সন্ধ্যায় করবেন। যদি অতিরিক্ত কাজ থাকে তাহলে সন্ধ্যায় করতে পারেন সমস্যা নাই। যদি আপনি বাড়িতে বসে দিন কাটান তাহলে অবশ্যই ভোরে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করাটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিয়মিত ব্যাংক শুধুমাত্র ফিট থাকা বা ওজন কমানোর জন্য নয় এটি আপনার শারীরিক শক্তি ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্য সঠিকভাবে বজায় রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। আজকাল অনেক মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় হবেন তার একটি সমস্যা অধিকাংশ মানুষ শারীরিক ব্যায়াম করেন না। সুতরাং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা একজন মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করলে শরীরের জন্য কতটা উপকারী তা হয়তো অনেকেই জানেন না তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আসুন বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।
রোগ প্রতিরোধ করেঃ প্রত্যেকটা মানুষেরই বড় শত্রু হলো রোগ। পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ নেই যার কোন প্রকার রোগ হয় না। মানুষ হিসেবে একটু পরে প্রচেষ্টা হচ্ছে রোগমুক্ত থাকা। অনেকেই রোগমুক্ত থাকার জন্য বিভিন্ন ওষুধ সেবন করেন বা অন্যান্য উপায় অবলম্বন করেন কিন্তু আপনারা কি জানেন আপনাদের শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ব্যায়াম কতটা উপকারী? শরীরে ফিটনেস ও ভালো স্বাস্থ্যের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ধরনের বড় বড় রোগ দূর করতেও অনেক বেশি কার্যকারী যেমন উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ক্যান্সার ডায়াবেটিস ইত্যাদি। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় ফলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়।
সহনশক্তি বাড়ায়ঃ অনেক সময় বিভিন্ন কাজ করার পরে শুধুই আমার ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তবে এই ক্লান্ত দূর করার জন্য প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন। কারণ ব্যায়াম করলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় এবং ক্লান্তি কম লাগার কারণে অধিক পরিমাণে কাজ করতে পারবেন।
ব্যায়াম মনকে চাঙ্গা করেঃ প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করলে নানারকম রাসায়নিক পদার্থ মস্তিষ্ক থেকে নির্গত হয়। ফলে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি আপনারা অনেক উজ্জল ও লাবণ্য হয়ে উঠে। তাই নয় প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করলে হতাশা এবং বিষন্নতা থেকে খুব সহজেই দূরে থাকা যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ সুস্থ থাকার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো শরীরের বাকি ওজন ও মেদ ঝরিয়ে ফেলা। যদি আপনি প্রতিদিন ব্যায়াম করেন তাহলে আপনার শরীরের বাড়তি ওজন সহজেই কমে যাবে এবং শারীরিক চর্চা করলে ক্যালোরি খরচ হবে ফলে শরীরে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
শরীরের নমনীয়তা বাড়ায়ঃ আমাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও মাংসপেশী নমনীয় হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। তাহলে শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং ছোটখাটো কোন আঘাত কিংবা ভেঙ্গে যাওয়া বা মচকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। তাই প্রতিদিন ব্যায়াম করুন এবং শারীরিক সুস্থ থাকুন।
শরীরকে করে শক্তিশালীঃ শরীরের মাংসপেশীর গাঁথুনি যার যত ভালো সে ততো বেশি শক্তিশালী। প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করলে পেশিকে আলাদা আলাদা ভাবে গড়ে তুলতে অনেক বেশি সহায়তা করে। যদি আপনার বেশি শক্তিশালী করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে এবং স্বাস্থ্যমতো খাবার গ্রহণ করতে হবে।
কর্মস্পৃহা বাড়ায়ঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেক রয়েছে যারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। আর এগুলো হওয়ার কারণে কোন কাজ সঠিকভাবে করতে পারে না এবং কোন কাজের প্রতি আগ্রহ থাকে। তাই প্রতিদিন যদি আপনি ব্যায়াম করেন তাহলে শরীরের প্রতিটি কোষে অতিরিক্ত অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ হয় ফলে শারীরিক ও মানসিক সুস্থ থাকা সম্ভব হয়।
সুনিদ্রায় সহায়কঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যাদের বিভিন্ন কাজ করার ক্ষেত্রে ক্লান্ত মনে হয় এবং খুব ঘুম পায়। তাই যাদের ঘুমের সমস্যা হয়েছে তারা প্রতিদিন অন্তত ব্যান করা প্রয়োজন। এতে করে অনিক দা দূর হবে এবং ক্লান্ত দূর হবে। শুধু তাই নয় মানসিক ভাবে সুস্থ রাখতেও অনেক বেশি উপকারী ব্যায়াম। তাই নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন এবং সুস্থ থাকুন।
যৌন জীবনের জন্য উপকারীঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা দাম্পত্য জীবনে অসুখী। তাই যাদের যৌন জীবনে জড়তা কিংবা অনাগ্রহ এসেছে, তাদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে যৌনস্পৃহা বাড়ে, যৌন মিলনের স্থায়ীত্বকাল বৃদ্ধি পায় এবং দাম্পত্য জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।
ব্যায়াম করার অপকারিতা
শারীরিক সুস্থ ও মানসিক সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়াম করাটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে ব্যায়াম করার উপকারিতার পাশাপাশি আবকারিতাও রয়েছে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে প্রেম করার অপকারিতা সম্পর্কে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করব যা আপনার জন্য জানা খুবই জরুরী। তাই আসুন আর দেরি না করে জেনে নিন।
যদি আপনি অতিরিক্ত মাত্রায় পরিশ্রম করেন তাহলে আপনার হৃদরোগ এবং স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
এছাড়াও যারা অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন তাদের সারা রাত খুব অস্থিরতার মধ্যে কাটে এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।
এক গবেষণায় জানা যায় সপ্তাহের মধ্যে সাড়ে সাত ঘন্টার চেয়ে বেশি শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করলে হতাশা মানসিকভাবে দুর্বল ইত্যাদির সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।
সাঁতার কাটা সাইকেল চালানো ইত্যাদি কাজে যদি আপনার কোন কর্ম ক্ষমতার ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে অতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব পরিশ্রম নেওয়াটা জরুরী।
শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করার পরে প্রস্রাবের রং পরিবর্তন দেখতে পান তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে এটা 'Rhabdomyolysis' অবস্থার লক্ষণ। এতে করে আপনার ক্ষতিগ্রস্ত পেশির কোষ রক্তে মিশে যায় ফলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা
নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়াম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অভ্যাস, যা শরীরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সহায়ক। এই ব্যায়ামগুলো শারীরিক শক্তি, স্থিতিস্থাপকতা, এবং সামগ্রিক ফিটনেস বজায় রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন কিংবা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন, তাদের জন্য নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী।
নিয়মিত নমনীয়তা ব্যায়াম করলে শরীরের মাংসপেশিগুলো শিথিল হয়, যা ব্যথা এবং স্ট্রেন কমাতে সাহায্য করে। এই ধরনের ব্যায়াম শরীরের জয়েন্টগুলোকে আরো মজবুত করে এবং হাঁটু, কাঁধ, ও পিঠের ব্যথা দূর করতে সহায়ক। এছাড়াও, নমনীয়তার মাধ্যমে শরীরের রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়, যা মাংসপেশিগুলোর অক্সিজেন গ্রহণ বাড়িয়ে দেয় এবং শারীরিক পরিশ্রমের সহনশীলতা বৃদ্ধি করে।
নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়াম স্ট্রেস কমাতে সহায়ক। বিভিন্ন স্ট্রেচিং এবং যোগব্যায়াম অনুশীলন মনের চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এটি শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে দৈনন্দিন কাজকর্মে শারীরিক ক্লান্তি কম হয় এবং মেজাজ ভালো থাকে। এছাড়া, এটি শরীরের মোট সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে সহায়ক, যা বয়স বৃদ্ধির সাথে শরীরের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে।
সঠিকভাবে এবং নিয়মিত নমনীয়তা ব্যায়াম করলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব, যা আমাদের জীবনের মান উন্নত করতে সহায়ক। আশা করি নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য | ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো পড়ে আপনি হয়তো ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। শারীরিক ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ব্যায়াম করার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিজের শরীরের প্রতি সচেতন হয়ে, সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করলে তা শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url