বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে

বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, সিজিপিএ কত হলে ভাল সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন বিদেশে মাস্টার্স সম্পন্ন করার বিষয় সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন। 
বিদেশে-মাস্টার্স-করতে-কত-সিজিপিএ-লাগে
বর্তমানে বিভিন্ন দেশে চলমান বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম রয়েছে যা অনেকেই করতে আগ্রহী। তবে শুধু আগ্রহ থাকলেইতো হবে না, এর জন্য থাকতে হবে এর সম্পর্কে জ্ঞান। তাই আজকের পোস্টে বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

ভূমিকা

পড়াশোনার জন্য এবং ভালো চাকরির জন্য আমাদের বিভিন্ন স্কলারশিপ এর প্রয়োজন হয়।অনেক সুযোগ সুবিধা স্কলারশিপ প্রোগ্রাম বর্তমানে বিভিন্ন দেশে চলমান রয়েছে।আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমরা জানবো সিজিপিএ মানে কি, সিজিপিএ কত হলে ভাল, মাস্টার্স স্কলারশিপ, বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা, বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে, বিদেশে মাস্টার্স করতে কত টাকা লাগে সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য সমূহ।

সিজিপিএ মানে কি

সিজিপিএ বা Cumulative Grade Point Average হল আপনার সকল কোর্সের গড় গ্রেড পয়েন্ট, যা আপনার একাডেমিক কর্মক্ষমতা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ৪ পয়েন্টের স্কেলে নির্ধারিত হয়। প্রতিটি কোর্সের মধ্যে আপনি যে গ্রেডটি পান, তা একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট হিসেবে গণনা করা হয়। সেগুলির গড় হিসাব করলে আপনি আপনার সিজিপিএ জানতে পারবেন।

যেমন, যদি আপনি একটি কোর্সে A+ (৪.০), অন্য একটি কোর্সে A (৩.৭) এবং তৃতীয় কোর্সে B (৩.০) পেয়ে থাকেন, তবে আপনার সিজিপিএ হবে (৪.০ + ৩.৭ + ৩.০) / ৩ = ৩.৫। এটি আপনার একাডেমিক পারফরম্যান্সের একটি সাধারণ পরিমাপক হিসেবে কাজ করে। সিজিপিএ এমন একটি পদ্ধতি যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং বিভিন্ন বিষয়ে আপনার অগ্রগতি এবং সফলতার পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত একাডেমিক স্কোর, ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্য এবং যোগ্যতার মূল্যায়ন করার জন্য একটি বিশ্বস্ত পদ্ধতি।

সিজিপিএ কত হলে ভাল

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিজিপিএর মান এবং মূল্যায়ন কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, দেশে এবং বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেতার ধারণা থাকতে হবে। তবে সাধারণভাবে ৪.০ স্কেল অনুযায়ী সিজিপিএর ভালো মান প্রায় ৩.৫ বা তার উপরে গণনা করা হয়। এটি নির্দেশ করে যে আপনি আপনার পাঠক্রমে ভালো পারফর্ম করেছেন এবং আপনার শিক্ষার মান উচ্চ।

অন্যদিকে, যদি সিজিপিএ ৩.০ বা তার নিচে থাকে, তবে তা সাধারণত মধ্যম মান হিসেবে গণ্য হয় এবং এতে কিছু ক্ষেত্রে উন্নতির প্রয়োজন হতে পারে। তবে, কিছু প্রতিষ্ঠানে ২.৫ বা ৩.০ সিজিপিএও গ্রহণযোগ্য হতে পারে, যদি অন্যান্য কার্যক্রম যেমন গবেষণা, ইন্টার্নশিপ বা অতিরিক্ত যোগ্যতার সাথে এটি সমর্থিত থাকে। যে কোনো ক্ষেত্রে, সিজিপিএ একটি একক পরিমাপক হলেও, এটি একমাত্র বিষয় নয়। গবেষণা, প্রোজেক্ট, এক্সট্রা-ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটি এবং অন্যান্য দক্ষতাও একাডেমিক মানের বিচার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মাস্টার্স স্কলারশিপ

মাস্টার্স স্কলারশিপ হল একটি বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তা যা ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের উচ্চতর শিক্ষার খরচ পূরণ করার জন্য প্রদান করা হয়। এই স্কলারশিপগুলি সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাগুলি প্রদান করে।

আরো পড়ুনঃ স্কলারশিপ মানে কি

মাস্টার্স স্কলারশিপের জন্য বিভিন্ন মানদণ্ড রয়েছে এবং সেগুলি নির্ভর করে স্কলারশিপের ধরন ও প্রদানকারী সংস্থার ওপর।স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে জানতে হবে বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে? হ্যাঁ জানব। মাস্টার্স স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে হয়।

উচ্চ সিজিপিএঃ অধিকাংশ স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারীর সিজিপিএ অবশ্যই ভালো হতে হবে, সাধারণত ৩.৫ বা তার বেশি।

ভালো গবেষণা প্রস্তাবনাঃ গবেষণামূলক স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারীর একটি শক্তিশালী গবেষণা প্রস্তাবনা বা প্রজেক্ট আইডিয়া থাকতে হবে।বিদেশে মাস্টার্স করতে কত টাকা লাগে তার ধারণা থাকতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশাধিকারঃ আবেদনকারীকে সাধারণত একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হওয়ার প্রমাণ প্রদান করতে হয়।

ভাষার দক্ষতাঃ বিদেশে মাস্টার্স করার জন্য প্রায়ই ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ পেশ করতে হয়, যেমন TOEFL বা IELTS স্কোর।

অতিরিক্ত কার্যক্রমঃ স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারীকে সমাজসেবা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বা অন্যান্য এক্সট্রা-ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে অংশগ্রহণের প্রমাণ দিতে হতে পারে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্কলারশিপ: সুযোগ ও প্রক্রিয়া

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা হল আর্থিক সঙ্কট। অনেক শিক্ষার্থী যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ পায় না। তবে, এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংস্থাগুলি শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা বা স্কলারশিপ প্রদান করে। 

আরো পড়ুনঃ  বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা

স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বল্প খরচে অথবা বিনা খরচে বিদেশে পড়াশোনা করতে পারে। স্কলারশিপের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা থাকে, যেমন আবাসন ভাতা, যাতায়াত ভাতা, বিমান টিকিট এবং মাসিক ভাতা।বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরেই স্কলারশিপ প্রোগ্রাম সম্পর্কে এগোতে হবে।এখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় স্কলারশিপ প্রোগ্রামগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

১) ফুলব্রাইট স্কলারশিপ, যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট স্কলারশিপ একটি বিশেষ ধরনের স্কলারশিপ যা বিশ্বের ১৫৫টি দেশ থেকে নির্বাচিত প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয়। এই স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াত খরচ, টিউশন ফি, আবাসন খরচ, খাদ্য খরচ, স্বাস্থ্য বিমা এবং মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়। ফুলব্রাইট স্নাতকে প্রথম শ্রেণী থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে, এবং যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকতে পারবে না। এছাড়া, আবেদনকারীর কমপক্ষে দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা এবং আইইএলটিএস-এ ন্যূনতম ৭ স্কোর থাকতে হবে।

২) শেভেনিং স্কলারশিপ ও কমনওয়েলথ মাস্টার্স স্কলারশিপ, যুক্তরাজ্য
শেভেনিং স্কলারশিপ ও কমনওয়েলথ স্কলারশিপ যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করে। শেভেনিং স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি, মাসিক ভাতা, যাতায়াত খরচ, ভিসা আবেদনের খরচ এবং আরও অনেক সুবিধা পায়। এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে ন্যূনতম ৬০% নম্বর সহ স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করতে হবে এবং দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আইইএলটিএস স্কোর ন্যূনতম ৬.৫ (প্রতি সেকশনে ৫.৫ এর নিচে নয়) থাকতে হবে।

কমনওয়েলথ স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ভাতা পেতে পারেন। তবে, এই স্কলারশিপের জন্যও দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং পড়াশোনা শেষে আপনাকে দুই বছরের মধ্যে দেশে ফিরে আসতে হবে। বাংলাদেশের ইউজিসি এই স্কলারশিপের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে থাকে এবং আবেদনকারীদের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

৩) ডিএএডি স্কলারশিপ, জার্মানি
জার্মানভিত্তিক ডিএএডি স্কলারশিপটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।এখন যেহেতু আমরা জানি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে এবং তারপরে কোথায় কোন ধরনের স্কলারশিপ করা যায়? সেটা সহজেই নির্ধারণ করতে পারবো। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে এই স্কলারশিপের আবেদন নেওয়া হয়। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে জার্মানিতে মাস্টার্স বা পিএইচডি করার সুযোগ পাওয়া যায়। জার্মানি শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে এবং ডিএএডি স্কলারশিপ এই সুযোগটিকে আরও প্রসারিত করেছে। স্কলারশিপটি আবেদনকারীদের টিউশন ফি, আবাসন খরচ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান করে থাকে।

৪) ইরাসমুস মুন্ডুস, ইউরোপ
ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ দেয়।এই স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি, বিমান খরচ, ৫০% আবাসন ও খাদ্য খরচ এবং অন্যান্য সুবিধা পায়। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়। ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন।

৫) অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ
অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, ভ্রমণ ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা সহ প্রতি মাসে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ভাতা প্রদান করে। এই স্কলারশিপের আওতায় অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি করা যায়। প্রতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয়।

৬) জাপানের মনবুকাগাকুশো (MEXT) স্কলারশিপ
জাপানের মনবুকাগাকুশো বা MEXT স্কলারশিপটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য উপলব্ধ। এই স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি, আবাসন খরচ, যাতায়াত ভাতা এবং মাসিক ভাতা পেয়ে থাকে। জাপানে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি চমৎকার সুযোগ। MEXT স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারীদের উচ্চতর একাডেমিক যোগ্যতা এবং কিছু ভাষাগত দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়।

৭) চীনের সিএসসি স্কলারশিপ
চীনও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে, যা চীনা স্কলারশিপ কাউন্সিল (CSC) দ্বারা পরিচালিত। সিএসসি স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে পারে। সিজিপিএ কত হলে ভাল তার মাধ্যমে তোর মাস্টার্স পিএইচডি প্রোগ্রাম সম্পর্কে এগিয়েছি।তবে স্কলারশিপের মধ্যে টিউশন ফি, আবাসন খরচ, বিমানের টিকিট, এবং মাসিক ভাতা অন্তর্ভুক্ত থাকে। চীন একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় এই স্কলারশিপটি অনেক শিক্ষার্থীর জন্য একটি আকর্ষণীয় সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

৮) রাশিয়া ও কোরিয়ার কেজিএসপি স্কলারশিপ
রাশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কেজিএসপি স্কলারশিপও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি জনপ্রিয় বিকল্প। এই স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা রাশিয়া ও কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে পারেন। কেজিএসপি স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীদের পূর্ণ অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তাদের পড়াশোনা নির্বিঘ্নে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।

বিদেশে পড়াশোনার খরচ কমাতে এবং আর্থিক সঙ্কট কাটাতে স্কলারশিপ একটি অসাধারণ উপায়।বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে জানা থাকলে কাঙ্খিত ফলাফলের পর সেই প্রত্যাশিত স্কলারশিপ প্রোগ্রামের অংশগ্রহণ করা যাবে। বিভিন্ন দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উচ্চমানের শিক্ষা লাভ করতে পারে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে পারে। তবে, স্কলারশিপ প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, দক্ষতা এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা জরুরি। আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে এই সুযোগগুলো থেকে লাভবান হোন এবং আপনার বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন পূরণ করুন।

বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা

বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, যার মধ্যে সিজিপিএ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে, সিজিপিএ কত হলে ভাল হয় তা একমাত্র মানদণ্ড নয়। অতিরিক্ত কিছু কার্যক্রমও আয়ত্তে রাখতে হয়, বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে, আর কত হলে স্কলারশিপ পাওয়া যাবে। বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলির প্রয়োজন।
  • আপনার সিজিপিএ ভাল হতে হবে, তবে অতীতের একাডেমিক রেকর্ড, কোর্সের ধরন এবং পরীক্ষার ফলাফলও গুরুত্বপূর্ণ।
  • বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রায়ই আন্তর্জাতিক ভাষার দক্ষতা যেমন ইংরেজি (IELTS, TOEFL) থাকতে হয়।
  • বিশেষ কিছু স্কলারশিপে গবেষণার প্রস্তাবনা বা কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হতে পারে।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক বা কাজের সহকর্মীদের কাছ থেকে সুপারিশপত্র সংগ্রহ করা প্রয়োজন।
  • বিদেশি স্কলারশিপের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া সময়সীমা অনুসারে সম্পন্ন করতে হয়। কিছু স্কলারশিপের জন্য অনেক আগে থেকে আবেদন করতে হয়, তাই সময়সীমা সম্পর্কে সচেতন থাকাও গুরুত্বপূর্ণ।

বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে

বিদেশে মাস্টার্স করতে সিজিপিএ এর প্রয়োজনীয়তা দেশের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে, ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হতে হলে সিজিপিএ ৩.৫ বা তার বেশি থাকা দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে কিছু নামকরা প্রতিষ্ঠান যেমন হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, এমআইটি ইত্যাদির ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৩.৭ বা ৪.০ এর কাছাকাছি হতে পারে।

তবে, যদি আপনার সিজিপিএ কম থাকে, তবে আপনি অন্যান্য দক্ষতা যেমন গবেষণা অভিজ্ঞতা, লিডারশিপ কোর্স বা অ্যাকাডেমিক অ্যাচিভমেন্টের মাধ্যমে আপনার আবেদন শক্তিশালী করতে পারেন। আবার, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সিজিপিএ ৩.০ বা তার কমেও বিদেশী ছাত্রদের ভর্তি গ্রহণ করে, তবে এতে আরও বেশি পরিমাণে অন্যান্য যোগ্যতা যেমন অভিজ্ঞতা, পরীক্ষার ফলাফল (GRE, GMAT) এবং ব্যক্তিগত অর্জন প্রয়োজন।

বিদেশে মাস্টার্স করতে কত টাকা লাগে

বিদেশে মাস্টার্স করার খরচ নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ে, যেমন বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে জানা থাকলে কোন প্রতিষ্ঠানে কত সিজিপিএ জন্য কত খরচ হবে তা জানা যাবে।তাছাড়া আপনার পছন্দের দেশ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্সের ধরন এবং আপনি কোন ধরনের জীবনযাপন পছন্দ করেন। নিম্নলিখিত খরচগুলি সাধারণভাবে প্রযোজ্য।
  • টিউশন ফিঃ মাস্টার্স কোর্সের টিউশন ফি বিভিন্ন দেশে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন হতে পারে। যেমন, ইউরোপের কিছু দেশে টিউশন ফি কম (অথবা নেই), কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে এটা প্রায় ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ ডলার বা ইউরো হতে পারে।
  • বাসস্থান খরচঃ বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য বাসস্থান খরচও একটি বড় খরচ। শহরের ওপর নির্ভর করে, এটি বছরে ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ ডলার হতে পারে।
  • খাদ্য ও অন্যান্য খরচঃ প্রতিদিনের খরচ, পরিবহন এবং অন্যান্য সেবা পেতে প্রায় ৩,০০০ থেকে ১০,০০০ ডলার অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
  • বিমান টিকিট ও ভিসাঃ বিদেশে যাওয়ার জন্য বিমান টিকিট ও ভিসার খরচ আলাদা হতে পারে, যা ৫০০ ডলার থেকে ২,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
মোট খরচ প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৬০,০০০ ডলার বা ইউরো হতে পারে, তবে স্কলারশিপ পেলে অনেক খরচ কভার করা যায়।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে বিদেশে মাস্টার্স করতে কত সিজিপিএ লাগে বা সিজিপিএ কত হলে ভাল তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে বিদেশে মাস্টার্স করার বিষয় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url