বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তার সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দর কোনটি সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন বেনাপোল বর্ডার এর সময়সূচি সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে ভারত যাওয়ার জন্য কিংবা তদ্বিপরীত ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য বেনাপোল বর্ডার সর্বাধিক পরিচিতি পাওয়া বর্ডার। তবে ভারত এবং বাংলাদেশ দুটি দেশের দুপাক্ষিক অথরিটির কারণে এ সময় বন্টন নিয়ে ঘুরপাক অবস্থা বিদ্যমান থাকে। তাই আজকের পোস্টে বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ভূমিকা
ভারত এবং বাংলাদেশের অন্য একটি জনপ্রিয় সংযোগ স্থলের নাম হলো বেনাপোল বর্ডার। সাম্প্রতিক কিছু বছর পূর্বে বেনাপোল বর্ডারকে পরীক্ষামূলক কিছু কাজের জন্য বন্ধ ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এরপর থেকেই এর সময়সূচি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। তাই আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমরা জানবো বেনাপোল বর্ডার, বেনাপোল সীমান্ত কোন জেলায়, বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দর কোনটি, ঢাকা থেকে বেনাপোল কত কিলোমিটার, বেনাপোল থেকে কলকাতা কত কিলোমিটার, বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে, বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার উপায় সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্ত।
বেনাপোল বর্ডার
বেনাপোল বর্ডার বাংলাদেশ এবং ভারত (পশ্চিমবঙ্গ) এর মধ্যে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত। এটি বাংলাদেশের যশোর জেলার বেনাপোল এবং ভারতের পেট্রোপোল শহরের মধ্যে অবস্থিত। ১৯৪৭ সালের ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির পর এটি আগের সীমান্ত হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। এটির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনৈতিক সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে।
বর্ডারটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সুযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দেশটির বৃহৎ অংশের সঙ্গে ভারতের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। বেনাপোল বর্ডার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য একটি প্রধান কেন্দ্র। এখানে কৃষি পণ্য, শিল্পপণ্য এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হয়। সীমান্তের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সহজেই বিনিয়োগ ও পণ্য সরবরাহ করতে পারেন।
সরকারের বাণিজ্য সম্পর্কিত নীতিমালার কারণে এই বন্দর মুখ্য বাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বর্ডারের মাধ্যমে যেমন ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি এখানে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ও ঘটে। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সীমান্ত এলাকাতে অনুষ্ঠিত হয় যা দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ককে গভীর করে। সীমান্তে পণ্য ও মানুষের আদান-প্রদান তাদের মধ্যে যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি করে।
সাথেই বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য উভয়পক্ষে ছড়িয়ে পড়ে যাওয়া পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা এবং সহনশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাছাড়া আগামী দিনে বেনাপোল বর্ডারের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। এই পরিবর্তনের মাঝে বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তা সাম্প্রতিক সময়ের জন্য নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। সরকারি নীতিমালা ও সহযোগিতার ফলে সীমান্ত অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ করা হতে পারে, যা সকলের জন্যই নতুন সুযোগের সৃষ্টি করবে।
বেনাপোল সীমান্ত কোন জেলায়
বেনাপোল সীমান্তটি বাংলাদেশের যশোর জেলার বেনাপোল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল এর মধ্যে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত পয়েন্ট যা দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও জনগণের চলাচলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বেনাপোল সীমান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য।
এই সীমান্তের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হয়ে থাকে। ভারত থেকে আশা পণ্যের মধ্যে খাদ্য দ্রব্য, শিল্প পণ্য, টেক্সটাইল এবং নানা ধরনের উপকরণ অন্তর্ভুক্ত থাকে। এটি বড় প্রান্তিক বাণিজ্য সহজ এবং দ্রুততার সাথে করার সুযোগ তৈরি করে যা স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কৃষকদের জন্য লাভজনক। বেনাপোল সীমান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের মানুষ সামাজিকভাবে যুক্ত হয়।
সীমান্তে অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় যেখানে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশের মানুষ ভারতের বিভিন্ন উৎসব উদযাপনে অংশ নেয় এবং ভারতীয়রা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও নীতির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। এর ফলে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হয়। যদিও বেনাপোল সীমান্তের গুরুত্ব অপরিসীম, তবে এখানে কিছু চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান রয়েছে।
অর্থাৎ অবৈধ প্রবেশ মাদক পাচার এবং নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সীমান্ত এলাকায় উদ্বেগের কারণ হয়। তাই বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্নতা দেখা যায়। একারণেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রতিপালন ও নজরদারি করতে হয় যাতে নিরাপত্তা বজায় রাখা যায়।
বেনাপোল সীমান্ত ভবিষ্যতে আরও উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ যেমন অবকাঠামগত উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সম্পর্কের সম্প্রসারণ কালে কালে আরো উন্নয়নের নতুন রূপ নিতে পারে। এটি শুধু বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নয়, বরং মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে সক্ষম।
বেনাপোল সীমান্ত বাংলাদেশের যশোর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণী। এটি অর্থনৈতিক সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধ্যায় রচনা করে, যা দুটি দেশের নাগরিকদের মধ্যে বহুবিধ সম্পর্ক এবং সহযোগিতা প্রতিষ্ঠিত করে। ভবিষ্যতের উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে বেনাপোল সীমান্তের গুরুত্ব নিশ্চিত করা হলে এটি আমাদের জন্য আরও এক উন্নত এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দর কোনটি
আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বা ল্যান্ড পোর্টের পরিচয় হিসেবে যশোর জেলার হাজিরা উল্লেখ করা হয়। যশোর জেলাতে উপস্থিত শার্শা নামও বেনাপোল শহর এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। ভারত রাষ্ট্রের সঙ্গে আমদানি রপ্তানি সম্বন্ধ বজায় রাখতে বেনাপোল বন্দরটি পেট্রাপোল এর সীমারেখা হতে চলাচল করে।
ভারতীয় পেট্রাপোলের সীমানায় অবস্থিত বন্দরটি নাম পেট্রাপোল বন্দর। আর ভারতের বাংলা অঞ্চলের কৃষ্ণনগর নামক স্থল বন্দরে সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আমাদের দেশের চুয়াডাঙ্গা শহরের দর্শনার স্থল বন্দর। তাছাড়াও তৎকালীন সময়সূচীর সাথে বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তার মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। ২০০২ সালের ১২ ই জানুয়ারি এ দুটি জায়গার সংযোগ ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
এই ২০০২ খ্রিস্টাব্দে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এর অন্তর্ভুক্ত থাকা কর্তৃপক্ষ কে বেনাপোল শহরের এই শূল্ক ঘাঁটি তথা ঘোষিত বন্দরের দেখা শোনার দায়ভার প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া আমাদের সিলেট শহরে তামাবিল বন্দরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ভারতের মেঘালয় অঞ্চলের ডাউকি বন্দর। আর আমাদের চাপাই নবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ এর সঙ্গে সংলগ্ন বন্দর এর নাম হল ভারতের মোহাদিপুর বন্দর।
এটি ভারতের বাংলা প্রদেশের পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত। প্রথম দিকে এই জায়গাটি কাস্টমস স্টেশন এর চিহ্নের মত করে প্রবর্তন করা হয়। পরবর্তীতে একে স্থল এর কাস্টমস স্টেশন ই বলা হয়। কিছু সময় অন্তরে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের দিকে বেনাপোলের এই স্থানটিকে কাস্টমস শাখায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে বেনাপোল এর এই কাস্টমস শ্রেণির সারবস্তুর পরিবর্তন এনে কাস্টম হাউস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
সর্বশেষ ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে এখানে এই কাস্টম হাউসের বাহ্যিক বা গাঠনিক পরিবর্তন এবং আকার নির্মাণের উদ্দেশ্যে নব স্থাপত্য গঠন করা হয়। তখন থেকেই বেনাপোলের কাস্টম অফিসের যাবতীয় কার্য কলাপ জারি করা হয়। এই সাথে সেখানে ইমিগ্রেশন এর চেকপোস্ট কার্যকর করা হয় যা বর্তমানেও দিব্যি হারে চলমান অবস্থাতে রয়েছে।
বেনাপোল থেকে কলকাতা কত কিলোমিটার
আমাদের অঞ্চলের ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য নিকটতম একটি জায়গার বাছাই করলে কলকাতার নামতে আসে। তবে বেনাপোল মাধ্যমে ভ্রমণ করার জন্য বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দর কোনটি তা জেনে রাখাও ভালো। বাংলাদেশের বেনাপোল বর্ডার হতে অতি নিকটে এই শহরের অবস্থান।
তাছাড়াও বাংলাদেশ থেকে ভারত রাষ্ট্রের অনেকগুলি জায়গায় যেতে হলে এই কলকাতা শহরটিকে পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। তবে বাংলাদেশ হতে কলকাতা যেতে হলে কোন পথ সহজ ভাবে পৌঁছানো যাবে তা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তার সম্পর্কে।
তাছাড়াও যাওয়ার জন্য কত খরচ এর সম্মুখীন হতে হয় কিংবা কিভাবে বাংলাদেশ হতে কলকাতা যাওয়া উত্তম হবে তা নিয়েও এক বিপুল পরিমাণ ভ্রমণকারী বিভ্রান্তিতে ভোগেন। এ সকল প্রশ্নের উত্তর সহজ হয়ে যাবে যদি আপনি জানতে পারেন আপনার গন্তব্য স্থান আপনার বর্তমান স্থান হতে কতটুকু দূরত্ব অবস্থিত।
যেহেতু বাংলাদেশের বেশিরভাগ বহিরাস্থল পায়ে দেয়ার চিহ্নিত স্থান হিসেবে বেনাপোল বর্ডার কে চিহ্নিত করা হয়। তাই বাংলাদেশ হতে কলকাতা শহরে যাওয়ার জন্য বেনাপোল থেকে আপনার দূরত্ব পরিমাপ করা সহজ হবে। তবে এখন মূল কথায় আসা যাক। সর্বপ্রথমে বলে রাখা যায়, রাজধানী ঢাকা হতে বেনাপোলের বর্ডার অবস্থিত শহর সড়কপথে প্রায় ৩১৯ কি.মি. দূরে অবস্থিত।
আবার রাজধানী ঢাকা হতে চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ বন্দর সড়ক পথে প্রায় ২২০ কি.মি. দূরে অবস্থিত। এগুলো বলার কারণ হলো দুটি বন্দর হতে কলকাতা শহরের দূরত্ব নির্ণয় করা। বাংলাদেশের এই দুই বন্দর হতে কলকাতা শহর যথাক্রমে প্রায় ৮৮ কি.মি. এবং ৮৪ কি.মি. এর সড়ক পথ দূরে রয়েছে। অর্থাৎ সূক্ষ্ম হিসেবে বেনাপোল শহর থেকে কলকাতার দূরত্ব প্রায় ৮৩.০ কিলোমিটার পথ।
কলকাতা যাবার জন্য সহজতম কিছু মাধ্যমের মধ্যে একটি হলো ঢাকা থেকে বিমান সফর করে কলকাতা পৌঁছানো। এর জন্য ঢাকার সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় বিমানবন্দর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে কলকাতায় পৌঁছানোর জন্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দ এর মাধ্যমে ঢাকা টু কলকাতা সফর করা। তবে বর্তমানে প্রসঙ্গ উঠেছে বেনাপোল থেকে কলকাতা পৌঁছানোর ব্যাপারে।
ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতা যাওয়ার জন্য হলেও বেনাপোল বর্ডার অতিক্রম করে এরপরেই কলকাতায় নিশ্চিত করা গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। আকাশ পথে এই বর্ডার অতিক্রম করা সরাসরি ভাবে সম্ভব না তবে সড়ক পথে এটি একটি বাধ্যগত পথ এবং নিয়ম। এর জন্য প্রথমে ঢাকা হতে বেনাপোল পৌঁছানোর জন্য এতোটুকু পথের জন্যই বাসে করে পৌঁছাতে হবে।
ঢাকা থেকে বেনাপোল পৌঁছানোর জন্য একটি নন এসি বাসের ভাড়া ৫০০ টাকা থেকে ৫৫০ বাংলাদেশি টাকা পর্যন্ত রাখতে পারে। এই একই গন্তব্যে এসি বাসের ভাড়া বড়জোর ১০০০ টাকা হতে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এরপরে ইমিগ্রেশনের খরচের জন্য বেনাপোল এর কাস্টমস স্টেশন থেকে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রায় ২০-৩০ টাকার মতো প্রয়োজন হয়।
যাবতীয় সকল নিয়ম মেনে বেনাপোলের এই বর্ডারটি অতিক্রম করে ফেললে পরবর্তীতে ছোট গাড়ি কিংবা অটো ভাড়া করে হরিদাসপুর ইমিগ্রেশন অফিসে পৌঁছাতে হয়। সেখান থেকে ভারতের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পর বনগাঁও রেইল স্টেইশন হতে দমদম কিংবা শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছাতে হবে। ওখান থেকে মেট্রোতে করে কলকাতা নিউ মার্কেট বা কলকাতা পার্ক স্ট্রিট এ নেমে যাওয়া যায়।
এভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে কলকাতা যাওয়ার পদ্ধতিটি হল ঢাকা থেকে কলকাতা যাওয়ার সবচেয়ে কম খরচের একটি পদ্ধতি। তবে এগুলো ছাড়াও সরাসরি বাস কিংবা ট্রেন এর টিকিট কেটে এক শহরে কলকাতা পৌঁছানো সম্ভব হয়। যেহেতু কলকাতার দূরত্ব বেনাপোল থেকে কেবল ৮৩ কিলোমিটার তাই সেখানে যাওয়ার জন্য বেশি একটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে
বেনাপোল বর্ডার শুধুমাত্র যাত্রীদের জন্যই নয় বরং পণ্য পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেনাপোল বর্ডার সাধারণত সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এই সময়ের মধ্যে যাত্রীরা পাসপোর্ট এবং ভিসার মাধ্যমের সীমান্ত পারাপার করতে পারেন। তবে বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে যেমন সরকারি ছুটি উৎসব অথবা আন্তর্জাতিক কারণে এই সময়ের পরিবর্তন ঘটতে পারে। হলে যাত্রার আগে সর্বদা বর্তমান নিয়মাবলী সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।
বেনাপোল বর্ডারে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। সীমান্তে প্রবেশের সময় যাত্রীদের নথিপত্র সঠিকভাবে যাচাই করা হয়। বৈদেশিক ভ্রমণের জন্য নিশ্চিত করণের জন্য ভিসা, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। কিছু কিছু বিশেষ সময় যেমন কোভিড-১৯ এর মত মহামারীর প্রভাবের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত নিয়ম থাকতে পারে যেমন টিকা বা সনদ যাচাই করা।
সীমান্ত পারাপারের জন্য যাত্রীদের প্রস্তুতি নিতে হবে। বৃহস্পতিবার এর মতো ব্যস্ত দিনে দলবদ্ধভাবে ভ্রমন করা এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য সংগ্রহ করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা বর্ডার অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। তাছাড়াও বেনাপোল বর্ডারের সময়সূচী বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দর কোনটি তা থেকেও জানা যায়।
বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার উপায়
কলকাতা ভারত রাষ্ট্রের একটি শহর হলেও বাংলাদেশ থেকে এই শহরে যাওয়ার চাহিদা যেন আমাদের পার্শ্ববর্তী কোন শহরে যাওয়ার চাহিদার মত। বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য যেকোনো শহর থেকে যেতে হলেও সর্বপ্রথম প্রয়োজন ভারতীয় একটি ভিসার। ইতোমধ্যে তো আমরা জানলাম বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
এখন আলোচনা করছি বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে। কলকাতা আমাদের নিকটবর্তী একটি শহর। তবু অন্য দেশের আওতাধীন হওয়ার কারণে সেখানে যেতে হলে প্রথমেই পাসপোর্ট এবং ভিসা এর প্রয়োজন পড়ে। বর্তমানে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা গ্রহণ করার জন্য যমুনা ফিউচার পার্কে থাকা ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বা আইভ্যাক এর দপ্তর যেতে হয়।
ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে গিয়ে তাদের ওয়েবসাইট থেকে ভিসার আবেদন ফরম সম্পন্ন করতে হয়। সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদন করার পর এবং সকল শর্তাবলী অনুযায়ী কাজ হয়ে থাকলে সাধারণত সাত দিনের মাথায় আবেদনকৃত ভিসা প্রদান করা হয়ে থাকে। এরপরে সেই ভিসা সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার বন্দর কিংবা বেনাপোল এর বন্দর অতিক্রম করে কলকাতা যাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ থেকে অনেকগুলো উপায় কলকাতা দেওয়া সম্ভব। বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার উপায় হিসেবে সড়ক কথা বললাম ফোন করতে হয়। পেরাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ঢাকা বা অন্যসহ থেকে বেনাপোল এ পৌঁছাতে হবে। তবে সাধারণত শ্যামলী, বিটিআরসি, সৌহার্দ্য ইত্যাদি বাস এর যাত্রাতে ঢাকা কিংবা বেনাপোল হতে কলকাতা যাওয়ার জন্য ভালো বাছাই এর মধ্যে হতে পারে।
তবে এই বাসগুলো শুধু দিবা ক্ষেত্রের জন্যই কার্যকরী। তাছাড়া আরো কিছু মাধ্যমের জন্য উল্লেখ্য হলো গ্রীন লাইন, শ্যামলী, রয়েল এবং সোহাগ। এগুলো ব্যতীত আরও কিছু বাস আছে যা ঢাকা থেকে কলকাতা সড়ক পথে যাওয়া আসা করে। বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে রওনা দেয়া বাস গুলো ব্যবহারযোগ্য।
কেননা এগুলো স্টেশনে থেমে বেনাপোল থেকে যাত্রী তুলতে পারে। তবে সার্বজনীন ক্ষেত্রে বিআরটিসি বাস বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে এই গাড়ি ছাড়ে এবং বেনাপোল হয়ে কলকাতা পর্যন্ত থেমে থাকে। তবে এভাবে সরাসরি যাত্রা অবলম্বন করতে না চাইলে বেনাপোল থেকে ভেঙে ভেঙে কলকাতা যাওয়া সম্ভব।
এতে খরচটাও খুবই সামান্য আকার হয়ে থাকে। এর জন্য প্রথমেই বেনাপোল বর্ডার এর ইমিগ্রেশন এবং পরবর্তীতে হরিদাসপুর হতে ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। এর জন্য প্রথমে বেনাপোলের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পর অটোতে করে সাবানে কিছু রুটি খরচ করে ভারতের ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
সেখান থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য পুনরায় অটোতে করে সামনে কিছু রুটি খরচ করার পর বনগাঁও রেল স্টেশনে পৌঁছানোর জন্য উদ্দেশ্য করতে হবে। এই স্টেশন থেকে ট্রেনে করে শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত থামতে হবে। শিয়ালদহ থেকে পুনরায় মেট্রো ধরতে হবে। মেট্রোরেল এর যাত্রা করে এসপ্ল্যানেড এ কিংবা কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের নিকট যেতে হবে।
এভাবেই ভেঙ্গে ভেঙ্গে একজন ভ্রমণকারী বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়ার উপায় হিসেবে এই সহজ পদ্ধতিতে অবলম্বন করতে পারে। এ সকল পদ্ধতি ব্যতীত বেনাপোল এর ইমিগ্রেশন এর কাজ সম্পন্ন করার পর ভেঙ্গে ভেঙ্গে ট্রেনের যাত্রা না করে সরাসরি বাসের যাত্রা নিয়ে কলকাতা শহরে পৌঁছানো সম্ভব। এর জন্য বড়জোর ১৫০ থেকে ২৮০ রুপি এর বাস ভাড়া খরচ হবে।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে বেনাপোল বর্ডার কয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে বেনাপোল বর্ডার এর সময়সূচি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ।
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url