গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি? বিস্তারিত জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি? এই প্রশ্নটি অনেক গর্ভবতী মহিলার মনে হয়তো ঘুরপাক খায়। করলা একটি জনপ্রিয় সবজি যদিও গর্ভাবস্থায় এর ব্যবহার নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা এই প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেবো।
শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় মহিলাদের কি কি খাবার খাওয়া জরুরি তা সবকিছু এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি সমস্ত বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় মায়েদের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর সবজি রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আর করলা একটি পুষ্টিকর সবজি হিসেবে পরিচিত। তবে করলা বা উচ্ছে খাওয়া নিয়ে গর্ভবতী নারীদের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। করলা ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রনের ভালো উৎস হলেও অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থায় করলা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া শরীরে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। তবে করলার কিছু কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যা গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে পেটের অস্বস্তি বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি না এবং গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খাওয়া যাবে কি না এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। তবে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখবেন। গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার আগে সবার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি
গরমের সময় শরীরকে ঠান্ডা করতে ও সতেজ রাখতে শসা বেশ সাহায্য করে। বিশেষ করে গরমে গর্ভবতী মহিলারা প্রচুর পরিমাণে পেন এর মধ্যে থাকে। যদি একটু কারেন্ট চলে যায় তাহলে গরমে গর্ভবতী নারীর শরীর থেকে ঝরতে থাকে ঘাম। তবে এই সময় যদি আপনি শসা খেতে পারেন তাহলে আপনার গরমে সুস্থ থাকতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
বিশেষ করে প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল ও শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা। গর্ভাবস্থায় বিভিন্নভাবে শসা উপকার করে। ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি, আয়রন জিঙ্কের মতো খনিজসমৃদ্ধ শসা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের একটি দুর্দান্ত উৎস।
এই পুষ্টি উপাদান গুলো গর্ভাবস্থায় গ্রহনকে সুস্থ রাখতে এবং বিকাশের জন্য অনেক বেশি সাহায্য করে। শুধু তাই নয় শশাই উপস্থিত ভিটামিন বি ৬ এবং ভিটামিন বি নয় মানসিক চাপ, উদ্বেগ, মুড ভালো রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের মুড সবসময় পরিবর্তন হয়। আর এই সময় পরিমাণমতো শসা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়াও শসাতে পটাশিয়ামের মত ইলেকট্রোলাইট থাকে যার কারণে গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি সহায়তা করে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হর মনে পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় রক্তচাপের ওঠানামা হয় সে ক্ষেত্রে শসা খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। এমনকি গর্ভাবস্থায় শসা খেলে রক্তচাপের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতেও অনেক বেশি সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের মাত্রা ঠিকভাবে রাখা মা এবং গর্ভ থাকা শিশুর জন্য খুবই ভালো। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত খেলে ঘন ঘন প্রস্রাবের মত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এর কারণ হলো শশায় পানির পরিমাণ ও লবণ বেশি থাকে। এছাড়াও অনেকের আবার বদহজম কিংবা এলার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই তারপরে শসা খাওয়া উচিৎ।
গর্ভাবস্থায় পটল খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় পটল খাওয়া মায়ের ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। সাধারণত আমরা সকলেই জানি গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা একজন গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজন। পটল একটি হালকা সবজি, যা সহজপাচ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর।
এই পটলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং আঁশ সরবরাহ করে, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের পটল খাওয়ার কিছু উপকারিতা রয়েছে যা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলায় হজমজনিত সমস্যায় ভুগেন। যেমন- গ্যাস বা কোষ্ঠকাঠিন্যপটলে প্রচুর পরিমাণে আঁশ খায়বার রয়েছে যা হজম হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ পটেল একটি হালকা ক্যালরিযুক্ত সবজি হওয়ায় একটি ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধির বিষয়টি স্বাভাবিক হলেও অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে তা নানা স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। পটল মায়ের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমাতে দেয় না। ফলে গর্ভবতী মায়ের ওজন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডিহাইড্রেশন রোধ করেঃ পটলে প্রায় ৯৯% পানি থাকে যা গর্ভাবস্থায় শরীরকে হাইড্রেট রাখতে করে সাহায্য করে। ডিহাইড্রেশন গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিপদজনক হতে পারে তাই পর্যাপ্ত পানি গ্রহণের পাশাপাশি পটল খাওয়াও শরীরের জলীয় ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ পটলে পচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা গর্ভাবস্থায় মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
শারীরিক ফোলা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় অনেক সময় হাত পা বা মুখ ফোলা দেখা যায় যাকে বলা হয় এরিমা। পটলে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান শারীরিক ফোলা কমাতে সাহায্য করে।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ পটল রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক। যা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি গ্লুকোজের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে যা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
মুত্রাশয়ের সমস্যা দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় অনেক মেয়ে মুত্রাশয়ের সংক্রমণে ভুগেন। পটেল একটি প্রাকৃতিক ডায়ারেটিক হিসাবে কাজ করে যা মূত্রের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত তরল বের করে দিয়ে মুমুত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহযোগিতা করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অনেক মেয়ের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। পটল থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টউপাদান ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হতে পারে। যা গর্ভবতী মা ও শিশুর উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। পটল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর হার্ট ও দাঁতঃ পটলে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা হাত ও দাঁতের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি শিশুর হাটের বিকাশেও সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় পটল খাওয়া মায়ের জন্য নিরাপদ এবং উপকারী। এটি শুধুমাত্র পুষ্টি যোগায় না বরং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধের সাহায্য করে। তবে অন্যান্য খাবারের মতো পটলও পরিমান মতো খাওয়া উচিত এবং কোন সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় বেগুন খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত এবং কোনগুলো খাওয়া উচিত নয় এই নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে থাকেন। তবে গর্ভকালীন সময়ে কিছু কিছু মানুষ বলেন বেগুন খেতে আবার কিছু কিছু মানুষ বেগুন খেতে না করে। তবে গর্ভাবস্থায় বেগুন খাওয়া যাবে কি না চলুন এই আর্টিকেল এর অংশটুকু থেকে জেনে নিন।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা বেগুন খেলে গর্ভস্থ শিশুর জন্য খুবই ভালো। এটি খাওয়ার ফলে গর্ভে থাকা সন্তানের রোগ জ্বালার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। শুধু তাই নয় শরীরের লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হয়। তবে শুধু যে বেগুন খেলে তা হবে এটি নয় আপনাকে অন্যান্য সবজি জাতীয় খাবার গুলো খেতে হবে।
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ভিটামিন এ বি কমপ্লেক্স ও নিয়াসিন রয়েছে। এছাড়াও এদের প্রচুর পরিমাণে খনিজ রয়েছে আর এটি যদি গর্ভবতী মহিলারা খায় তাহলে ভ্রূণের রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি হবে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলারা ডায়াবেটিস সমস্যায় ভোগেন। নানা কারণে গর্ভকালীন সময়ে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়।
তবে গর্ভকালীন সময়ে খাদ্য তালিকায় বেগুন রাখলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতী মায়েরা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন সঠিকভাবে হজম হয় না তবে বেগুনের থাকা ডায়াবেটিস ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং গর্ভস্থ সন্তানের পুষ্টি দিতে সহায়তা করে। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম হয়ে যায়।
যার কারণে বিভিন্ন রোগ গর্ভকালীন সময়ে বাসা বাধে। তবে এই সমস্যা এড়াতে প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায় বেগুন রাখা উচিত। কারণ বেগুন খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় ফলে বিভিন্ন রোগ গর্ভবতী মায়েদের কাছে ভিড়তে পারে না। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি?
গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি
গর্ভকালীন অবস্থায় নারী ও শিশু উভয়ের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরী। তবে এই সময় তাদের স্বাস্থ্য তালিকায় কি কি খাবার রাখবেন এটা নিয়েও অনেক গর্ভবতী মায়েরা চিন্তার মধ্যে থাকেন। গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সুষম খাদ্য খাওয়ার ফলে শিশু সুস্থ বৃদ্ধি ও বিকাশ নিশ্চিত করে। এরকমই পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার হল করলা। করলা স্বাদী তেতো হলেও এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। গর্ভাবস্থায় করলা খেলে পাওয়া যাবে নানা ধরনের উপকার। চলুন তাহলে কি কি উপকার রয়েছে জেনে নেওয়া যাক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ করলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্ডঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রোগের সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যাবে।
হজমের সমস্যা দূর করেঃ গর্ভকালীন সময়ে হজমের সমস্যা প্রায় গর্ভবতী মহিলার হয়ে থাকেন। যেমন- পেট ফোলা ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম ইত্যাদি। খুলনাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা হজমের সমস্যা দূর করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করেঃ করলাতে ক্যালরি পরিমাণ অনেক কম রয়েছে এবং ফাইবার বেশি রয়েছে যার কারণে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে না খেয়ে পরিমাণমতো খাওয়াটাই গর্ভবতী মায়ের উচিত।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ গর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতী মায়েরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ফলে রক্তের শর্করা মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যায়। তবে করলাতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি সাহায্য করে।
গর্ভবতী মায়েদের প্রয়োজনে পুষ্টি যোগায়ঃ ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনের মত প্রয়োজনীয় পুষ্টি যা শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি ও বিকাশে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।
স্বাস্থ্যকর ত্বকঃ গর্ভকালীন সময়ে অনেক মায়েদের ত্বকে বিভিন্ন ব্রণ বা পিগমেন্টেশনের সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যা সমাধান করতে পারে করলা। কারণ করলাতে রয়েছে ভিটামিন সি যা স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আশা করি গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি না তা সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মায়ের স্বাস্থ্য এবং গর্ভের শিশুর সঠিক বিকাশে সহায়ক। সজনে ডাঁটা একটি পুষ্টিকর সবজি, যা গর্ভবতী নারীদের জন্য বেশ উপকারী হতে
পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, এবং ফাইবার রয়েছে যা মায়ের শরীরকে পুষ্টি জোগায় এবং গর্ভাবস্থার বিভিন্ন সমস্যায় সহায়তা করে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় সজনে খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলিঃ
- শিশুর জন্মগত ত্রুটি রোধ করতে সাহায্য করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নতি করতে সাহায্য করে।
- পেট ব্যাথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করে।
- গর্ভবতী মায়ের প্রাতঃকালীন অসুস্থতা কমাতে সহায়তা করে।
- গর্ভবতী মায়ের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে।
- প্রসবের জন্য সহায়তা করতে পারে।
- রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- হজমের সমস্যা দূর করে।
উপরে উল্লেখিত যে উপকারিতাগুলি দেওয়া হয়েছে সেগুলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো সজনে ডাটা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আশা করি গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খাওয়া যাবে কি না তার সঠিক উত্তর ওপরে উল্লিখিত বিষয়গুলোর মাধ্যমে জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় ঢেঁড়স খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢেঁড়স, যা ভিটামিন, খনিজ, এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ, গর্ভবতী মায়েদের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৯ (ফোলেট) এবং আয়রন রয়েছে, যা গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহে সহায়ক।
গর্ভাবস্থায় ঢেঁড়স খাওয়ার উপকারিতাঃ
ফোলেটঃ ঢেঁড়সে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট রয়েছে, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে এবং জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে কার্যকর।
আয়রনঃ ঢেঁড়সে থাকা আয়রন গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করতে সহায়ক। এটি হিমোগ্লোবিন তৈরি করে যা মা এবং শিশুর জন্য জরুরি।
ফাইবারঃ ঢেঁড়সে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি গর্ভাবস্থায় প্রায়শই দেখা দেওয়া পেটের সমস্যার সমাধানে কার্যকর।
ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণে সহায়ক।
সতর্কতা
- যদিও ঢেঁড়স পুষ্টিকর, তবুও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত ঢেঁড়স খেলে পেটে অস্বস্তি হতে পারে। এছাড়া, ঢেঁড়স ভালোভাবে ধুয়ে এবং সঠিকভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত, যাতে এটি নিরাপদ থাকে।
লেখকের মন্তব্য | গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি?
আজকের এই আর্টিকেল পড়ে আশা করি গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এবং গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খাওয়া যাবে কি না এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। যদি আপনাদের কাছে এই বিষয়গুলো ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। আর এই আর্টিকেল আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের কাছে শেয়ার করবেন। এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url