জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় বিস্তারিত জানুন
জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় সে প্রসঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, থার্মোমিটার স্কেল কয় প্রকার ও কি কি সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন থার্মোমিটার এর কার্যকারিতা এবং ব্যবহার সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।।
জ্বর মাপার জন্য আমরা প্রায় সকলেই প্রথমে থার্মোমিটার এর সন্ধানে লেগে পড়ি। তবে কজনই বা থার্মোমিটারের তেল সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন। তাই আজকের পোস্টে জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ভূমিকা
আমাদের প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই অবশ্যকীয় জিনিস গুলোর মধ্যে একটি থার্মোমিটার এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। তবে থার্মোমিটার ব্যবহারের পূর্বে এর সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করে রাখা উচিত। তাই আজকে পোস্টার মাধ্যমে আমরা জানব থার্মোমিটার ব্যবহার, থার্মোমিটার এর কাজ কি, থার্মোমিটার স্কেল কয় প্রকার ও কি কি, থার্মোমিটার কিভাবে কাজ করে, থার্মোমিটার কতক্ষণ রাখতে হয়, জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় এবং ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার পদ্ধতি সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্ত।
থার্মোমিটার ব্যবহার
সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে থার্মোমিটার ব্যবহার করায়া হয়ে থাকে। মানব জীব সহ অন্যান্য প্রায় সকল প্রাণীর শরীরের তাপমাত্রা তার শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা ব্যক্ত করে। শরীরের তাপমাত্রা যখন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় তুলনায় অধিক পরিমাণে থাকে তখন একে শারীরিক অবস্থার অবনতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রার বেশি পরিমাণে নিরক্ষিত হলে তাকে জ্বর বলা হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এই সমস্যার জন্য নামকরণ হিসেবে জ্বর বলা হলেও এই সরাসরি ভাবে কোন রোগ কিংবা অসুখের নাম নয়। জ্বর কেবলমাত্র একটি লক্ষণ কিংবা সাম্প্রতিক অসুস্থতার মিলিত কোনো কারণ। থার্মোমিটার শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে মূল বিভাগ করণের মধ্যে গ্রিক ভাষার দুটি শব্দ পাওয়া যায়।
সে দুটি শব্দের বাংলা তাৎপর্য বের করলে পাওয়া যায় যথাক্রমে একটি অর্থ তাপ এবং অপরটির পরিমাপ। অর্থাৎ, যে যন্ত্রের দ্বারা তাপকে পরিমাপ করা হয়ে থাকে তাকে থার্মোমিটার বলে। থার্মোমিটার তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য নানারকম যুক্তি এবং সূত্র ব্যবহার করে থাকে। সর্ব শুরুতে গ্যালিলিও গ্যালিলি নামক একজন গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ থার্মোমিটারের সূত্রপাত ঘটান।
১৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত প্রথম থার্মোমিটার ছিল একটি জল থার্মোমিটার। এই জল থার্মোমিটার তাপমাত্রার পার্থক্যের ভিত্তিতে তাপমাত্রাকে পরিমাপ করতে পারত। পরবর্তীতে একা একা নতুন বিশেষজ্ঞদের হাত ধরে আধুনিক থার্মোমিটারের আবিষ্কার হতে থাকে। আবিষ্কার এবং পরিমাপক ধরনের ভিত্তিতে থার্মোমিটার কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে।
তবে সবগুলোর মধ্যে ফারেনহাইট পারদ থার্মোমিটার অন্যতম উল্লেখযোগ্য ভাবে ব্যবহৃত একটি থার্মোমিটার। থার্মোমিটার ব্যবহার এত সহজ হলেও এর সম্পর্কে সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এখনো জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় তা নিয়ে অনেকে নিশ্চিত নয়।
এনালগ থার্মোমিটার এর ক্ষেত্রে শারীরিক অবস্থা এবং বয়স ভেদে এটিকে তিনটি উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখের তাপমাত্রা নিয়ে, পায়ুপথ থেকে এবং বগলের তাপমাত্রা নিয়ে। নিম্নে থার্মোমিটার ব্যবহার নিয়ে কিছু কথা বলা হলো।
- যেকোনো থার্মোমিটার ব্যবহারের পূর্বেই জীবাণু নাশক কিংবা সাবান পানি ব্যবহারে থার্মোমিটার ভালোমতো পরিষ্কার করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে থার্মোমিটারে যেন কোন অবস্থায় পানি প্রবেশ না করতে পারে।
- থার্মোমিটাকে ঝাঁকিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে ৯৬.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট কিংবা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিম্নস্তরে যাওয়া অব্দি অর্থাৎ স্বাভাবিক তাপমাত্রার স্কেলে থার্মোমিটার স্থির হওয়া পর্যন্ত নাড়াতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় তাএ উত্তরে এই উভয় স্কেলেরই সম্পৃক্ততা রয়েছে।
- মুখের মাধ্যমে তাপ নির্ণয় করতে হলে জিহ্বার তলদেশে থার্মোমিটারটির নিব ধরে রাখতে হবে।
- পায় কথার মাধ্যমে তাপর্ণা করতে হলে থার্মোমিটারে ভ্যাসলিন জাতীয় কোন প্রসাধনী মেখে পায়ুপথে ২ সে.ম. থেকে ২.৫ সে.মি. পর্যন্ত ভেতরের রাখতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৫ বছরের নিম্নে থাকা শিশুদের জন্য এ পদ্ধতির ব্যবহার দেখা যায়।
- বগলের তাপের মাধ্যমে শরীরে তাপমাত্রা নির্ণয় করার জন্য ব্যক্তির বগলের মাঝ বরাবর তাপমাত্রা নির্ণয়ক এই ছোট যন্ত্রটির মুখ ধরে রাখতে হবে।
- ৩ টি উপায়ের ক্ষেত্রে দু বা তিন মিনিট পর্যন্ত সময় ধরে দেখতে হবে। এরপর থার্মোমিটারে উঠে আসা তাপমাত্রার স্কেল পর্যবেক্ষণ করুন।
- সাধারণত মুখের তাপ ৯৯.৫ ফারেনহাইটের নিম্নে, পায়ুপথ এর তাপমাত্রা ১০৪ এর নিম্নে এবং বগলে পরিমাপ করা তাপমাত্রা ৯৯ এর নিম্নতর বিভাগে থাকবে তখন এদিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার গণ্ডিতে গণ্য করা যায়। অন্যথায় বরাবর এই তিনটি তাপমাত্রার বরাবর কিছু পাওয়া গেলেও বুঝতে হবে দেখতে শরীরে জ্বর এর উপস্থিতি রয়েছে।
- ব্যবহার শেষে অবশ্যই মনে করে থার্মোমিটারটি ভালোমতো সাবান পানি ব্যবহার করে ধুয়ে কিংবা জীবাণুনাশুক ব্যবহার করে পরিষ্কার থাকতে হবে।
- তাছাড়া এক প্রকারের থার্মোমিটার আছে যা ইনফ্রারেড থার্মোমিটার হিসেবে পরিচিত। এটি ব্যবহারের জন্য কেবল চালু করে কপালের সম্মুক্ষে উদ্দেশ্য করে রাখলে থার্মোমিটারটি স্ক্রিনে শরীরের উপস্থিতি তাপমাত্রা দেখা দিবে।
- আর ডিজিটাল যে থার্মোমিটার রয়েছে সেটি চালু করার পর জিহ্বার তলদেশে অবস্থান দিয়ে থার্মোমিটার থেকে ফ্ল্যাশ আসা অব্দি সময় ধরে থাকতে হবে। পরবর্তীতে এর স্ক্রিনে নির্মুল তাপমাত্রাটি দেখা যাবে। অল্প সময়ে এবং নিখুঁতভাবে তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য এটি একটি ভালো বাছাই হতে পারে।
থার্মোমিটার এর কাজ কি
থার্মোমিটার সাধারণত তাপ পরিমাপক একটি ক্ষুদ্র আবিষ্কার হিসেবে পরিচিত। এই আবিষ্কারটির আকার আকৃতি ক্ষুদ্র হলেও এর বৈশিষ্ট্য আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে। বর্তমান সময়ে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে ধারণা নেয়ার জন্য ঘরে থাকা এ থার্মোমিটার অনেক ভূমিকা রাখছে।
সাধারণত থার্মোমিটার কে এর তাপ গতিবিদ্যার নীতি এবং বচনের উপর নির্ভর রেখে দুটি ভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা হয়। এ দুটি হলো প্রাথমিক থার্মোমিটার এবং সেকেন্ডারি থার্মোমিটার। উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে দু'রকমের থার্মোমিটারির কাজ একই। অর্থাৎ তাপমাত্রায় তারতম্য কিংবা তাপমাত্রা অবস্থা নির্ণয় করা।
তবে বৈশিষ্ট্য কত দিক এবং ব্যবহারের সরলতার পরিপ্রেক্ষিতে সেকেন্ডারি থার্মোমিটার তুলনামূলকভাবে বেশি পরিমাণে প্রচলিত। আবার থার্মোমিটার এর কাজের মধ্যে ভিন্নতা থাকার কারণে অনেক সময় জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় তা নিয়ে বিঘ্নতা ঘটতে দেখা যায়।
থার্মোমিটার স্কেল কয় প্রকার ও কি কি
সাধারণ হিসেবে থার্মোমিটারে জলের স্কেল ব্যবহার করা হয়। যেহেতু থার্মোমিটার জলের সাহায্যে আবিষ্কৃত তাই এটিকে সাধারণভাবে জলের দুটি স্কেলের পরিচয়ে অভিহিত করা হয়। জলের স্কুটনাঙ্ক স্কেল এবং জলের হিমাঙ্কোস স্কেলকে যথাক্রমে তাপমাত্রার সেলসিয়াস স্কেল এবং ফারেনহাইট স্কেল বলা হয়ে থাকে।
তবে এছাড়াও ভূ-জগতীয় তাপমাত্রার পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য সার্বিকভাবে ফারেনহাইট স্কেল এবং সেলসিয়াস স্কেলের সাথে কেলভিন স্কেল বেশ প্রচলিত। এস আই পদ্ধতিতে একটি একক হলো এই কেলভিন স্কেল। থার্মোমিটার এর ক্ষেত্রে ধরন ভেদে এই স্কেলের ভিন্নতা থাকে।
অর্থাৎ একেক রকম থার্মোমিটার একই রকম স্কেলের মাধ্যমে নিজের কার্য সাধন করে থাকে এবং সামনের তাপমাত্রা সম্পর্কে ব্যক্ত করে থাকে। তবে সহজ ভাবে উল্লেখ করলে বলা যায় থার্মোমিটারের নির্দিষ্ট কোন স্কেল নেই। তবে সার্বিকভাবে থার্মোমিটারের চারটি স্কেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। যার মধ্যে দুটি খুব জনপ্রিয় এবং বাকি দুটি এমন একটি গণহারে ব্যবহার দেখা যায় না। চারটি স্কেল গুলো হলঃ
- সেলসিয়াস স্কেল
- ফারেনহাইট স্কেল
- কেলভিন স্কেল এবং
- র্যাঙ্কাইন স্কেল।
এখানে উল্লেখ্য যে, র্যাঙ্কাইন স্কেল সাধারণত প্রকৌশলী কিংবা কারিগরি বিভাগে ব্যবহৃত একটি স্কেল। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন থার্মোমিটার স্কেল কয় প্রকার ও কি কি।
থার্মোমিটার কিভাবে কাজ করে
থার্মোমিটার হল আধুনিক পদ্ধতিতে শরীরের তাপ নির্ণয় করার একটি ক্ষুদ্র প্রযুক্তি বা যন্ত্র। চিকিৎসা পদ্ধতিতে হরদম এর ব্যবহার বিদ্যমান থাকে। বর্তমানে ব্যবহার করা প্রায় সবগুলি যন্ত্রই কোন না কোন ভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে নিজের কার্যকারিতা সম্পাদন করে। ঠিক একই বক্তব্যটি থার্মোমিটারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সবচেয়ে বেশি প্রচলিত থার্মোমিটার গুলির মধ্যে হল অ্যালকোহল থার্মোমিটার এবং পারদ থার্মোমিটার। পারদ থার্মোমিটার এবং অ্যালকোহলিক থার্মোমিটার উভয়েই পরমাণুগুলোর তাপমাত্রার তারতম্যের ওপর নির্ভরশীল। আবার উভয় ক্ষেত্রেই জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় তা একই স্কেলের ভিত্তিতে পরিমাপ করা হয়।
পারদ থার্মোমিটারঃ পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার সঙ্গে পারদ জাতীয় দ্রব্য এর এর আয়তন সংকুচিত কিংবা প্রসারণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই পারদ যখন আকারে তারতম্য এনে সরু ভাব ধারণ করে তখন এটি এই অবস্থায় লম্বা নলের নিকট বেগপ্রবণ হয়। থার্মোমিটারে থাকা পারদে উপরী স্থল নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে টইটম্বুর হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। অথবা পারদের উপরের অবস্থানটিতে চাপের পরিমাণ স্বাভাবিক এর তুলনায় নিম্ন স্তরের সম্ভাবনা রাখতে পারে।
এই নিম্ন স্তরের চাপ কিছুটা শুন্য মণ্ডলীয় চাপের ন্যায়। সাধারণত পারো থার্মোমিটার দিয়ে বর্তমানে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়। কেননা বর্তমানে কিছু দেশে বিষক্রিয়া এ প্রমাণ পাওয়ার কারণে ভারত থার্মোমিটারের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। সতর্কতা অবলম্বনে এই কারণে এর ব্যবহার প্রায় ২০১২ খ্রিস্টাব্দের দিক থেকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ডিজিটাল থার্মোমিটারঃ আধুনিক পর্যায়ের এ থার্মোমিটার সমূহ এক প্রকারের থার্মিস্টর এর সাহায্যে পরিচালিত হয়। থার্মিস্টর হলো এক প্রকার রেজিস্টর বা তাপের সংবেদনশীতা নিরোধক। এ রোধক ক্ষমতা তাপমাত্রার ওপরে নির্ভরশীল। এই থার্মোমিটার কে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার বলা হয়। এটি ব্যক্তি ত্বকের উপর এ এই ফ্লাশে কটি ফ্ল্যাশ বা প্রকাশ প্রদান করে।
এই ফোকাস কিংবা ফ্ল্যাশ থেকে পাওয়া তাপমাত্রার পরিমাণের সঙ্গে ব্যক্তি শরীরে এই ফোকাস পড়ার কারণে প্রতীকলিত হওয়া তাপমাত্রার পার্থক্য নির্ণয় করা হয়। এই পার্থক্যটি হলো ব্যক্তির শরীরের আসল তাপমাত্রা। অর্থাৎ আধুনিক থার্মোমিটার থেকে নির্গত ফ্ল্যাশ কিংবা প্রকাশের কারণে নির্ধারিত ব্যক্তির থেকে ফেরত পাওয়া সংকেত কে এই আধুনিক থার্মোমিটার তাপমাত্রার পরিমাপের এককে পরিণত করে। পরবর্তীতে এই পরিণত একককেই সরাসরি ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
থার্মোমিটার কতক্ষণ রাখতে হয়
সাধারণভাবে থার্মোমিটারের ব্যবহার মুখের মধ্যে তাপমাত্রা নির্ণয় করে করা হয়। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ মানুষ সাধারণত মুখের মধ্যে প্রায় এক মিনিটের মত থার্মোমিটারের অবস্থান রাখেন। এর পরে তা মুখ থেকে অর্থাৎ জিহ্বার নিজ থেকে বের করে দিয়ে থার্মোমিটারে উল্লেখ করা তাপমাত্রা কিংবা পারদ চিহ্ন পর্যবেক্ষণ করেন।
তবে বৈজ্ঞানিক এবং চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী উল্লেখিত নিয়মে থার্মোমিটার মুখে ব্যবহার করা হয় কিংবা বগলে কিংবা পায়ুপথে, এই এক মিনিটের পর্যবেক্ষণ কখনোই যথেষ্ট নয়। অর্থাৎ থার্মোমিটারে শরীরের নিখুঁত এবং নির্ভুল তাপমাত্রা পাওয়ার জন্য এটিকে শরীরের তাপের সঙ্গে প্রায় দুই হতে তিন মিনিট সময় পর্যন্ত অবস্থান দিয়ে রাখতে হবে।
এতে করে থার্মোমিটারের স্কেলে নির্ভুল তাপমাত্রা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তবে ডিজিটাল থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে এমন কোন অপেক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে না। এটির ফোকাস নির্ধারিত ব্যক্তির দিকে ধরলে তাপমাত্রা নির্ণয় হলেই একটি তরঙ্গায়ীত আওয়াজ বের হয়। এতে করে তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা যায় যে থার্মোমিটারের তাপমাত্রা পরিমাপ সম্পন্ন হয়েছে।
জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয়
এক কথায় বলতে গেলে জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা সেলসিয়াস স্কেলের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়। এগুলোকে বলা হয় ক্লিনিকাল থার্মোমিটার। শরীরে যখন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে তাপমাত্রার অনুভব হয় তখন একে আমরা অস্বাভাবিক অবস্থা বলে গণ্য করি। এই অস্বাভাবিক অবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি জ্বরের অপর পাশ।
সাধারণত জ্বর মাপার জন্য তাপমাত্রার পরিমাণ নির্ণয় করাই যথার্থ হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর উপরেও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তবে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রাথমিকভাবে একটি থার্মোমিটারের ব্যবহার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রয়েছে। আমাদের বাড়িতে হোক কিংবা ফার্মেসি বা হসপিটাল, সব ক্ষেত্রেই প্রাথমিকভাবে থার্মোমিটারের মাধ্যমে রোগীকে নিরীক্ষণ করা হয়।
একজন স্বাভাবিক এবং সুস্থ মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হলো ৯৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট। এই একই তাপমাত্রাকে অন্য একক বা স্কেলের মাধ্যমেও প্রকাশ করা সম্ভব। আমাদের পারিপাশের তাপমাত্রা ব্যতীত কেবলমাত্র ব্যক্তির শারীরিক তাপমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত স্কেলটির নাম হল ফারেনহাইট স্কেল। লিখিত অবস্থায় কিছু কিছু জায়গায় সেলসিয়াস স্কেল ব্যবহৃত হলেও এটি সব সময় উপযুক্ততা বজায় রাখে না।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে বড় কোন কার্যালয় কিংবা ক্লিনিকেউ সর্বদা থার্মোমিটারের ফারেনহাইট স্কেলের মাধ্যমেই তাপমাত্রার সঠিক পরিমাণ নির্ণয় করে থাকেন। এই দুটি স্কেলের মধ্যকার পার্থক্যের হিসেবে বলা যায় ফারেনহাইট স্কেল সেলসিয়াস স্কেলের পরিমাণের প্রায় ১.৮ গুণ আধিক্য রাখে। আশা করছি ইতোমধ্যে আমরা থার্মোমিটারের পদ্ধতি এবং থার্মোমিটার স্কেল কয় প্রকার ও কি কি তার ব্যাপারে জানতে পেরেছি।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে জ্বর মাপার থার্মোমিটারের তাপমাত্রা কোন স্কেলে মাপা হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে থার্মোমিটার এর কার্যকারিতা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url