ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, মোবাইল আসক্তির কুফল সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন। 

ছাত্র-জীবনে-মোবাইল-ফোনের-অপকারিতা-সম্পর্কে-বিস্তারিত-জানুন

শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ব্যাপার বা আসক্তি নিয়ে অভিভাবক এবং গুরুজনেরা উভয়েই খুবই চিন্তিত। তাই আজকের পোস্টে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতার বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে সকল তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা ধৈর্য সহকারে আজকের মোবাইল ব্যবহারে সম্মুখীন হয়ে থাকা অপকারিতা সমূহ সম্পর্কিত আলোচনা ভিত্তিক এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

ভূমিকা

মোবাইল ফোনের ব্যবহারে আমরা যেসকল উপকারিতা লাভ করি তারই সাথে মোবাইল ফোনে ব্যবহারের অনেক গুলো অপকারী দিকও রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার তাদেরকে অনেক রকম জটিলতার মুখোমুখি করে দেয়। তাই মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আজকে আমরা জানবো মোবাইল ফোন সম্পর্কে কিছু কথা যেমন- মোবাইল ফোন কি, দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত, মোবাইল আসক্তির কুফল, মোবাইল রেডিয়েশন কি, মোবাইল ফোনের ১০ টি ভালো দিক এবং ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে।

মোবাইল ফোন কি

মোবাইল ফোনকে মোটোফোন বা মুঠোফোন সহ হ্যান্ড সেট, হ্যান্ড ফোন, সেলফোন ইত্যাদি নামেও বলা হয়। মার্টিন কুপার নামক একজন নামকরা ইঞ্জিনিয়ার মোবাইল ফোনের আবিষ্কার করেন। সাধারণত এটি এমন একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা যার দরুন কোনো ক্যাবল ব্যতীত দূরত্বে থাকা আরেকটি মোবাইল ফোনের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ করে যোগাযোগ করা সম্ভব।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ করার জন্য বা সরাসরি বার্তা আদান-প্রদানের জন্য তার বিহীন তরঙ্গর ব্যবহার করে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এই পদ্ধতিটির কার্যক্রম চলমান রাখা হয়। মোবাইল ফোন সর্থর আছো স্থানান্তর যোগ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি অর্থাৎ এটি যে কোন সময় নিজের সাথে করে বহন করা সম্ভব।

মোবাইল ফোনের বাটন ডিজাইনটি ব্যতীত অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের অনেকগুলো মোবাইল ফোন বর্তমানে বাজারে চলছে। এই আধুনিক মোবাইল ফোন গুলোর মাধ্যমে কেবল যোগাযোগই নয় বড় বিভিন্ন রকম সেবা যেমন, ব্যাংকিং সেবা, ইমেইল পাঠানোর সরলীকরণ পদ্ধতি, ইন্টারনেটের ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম কার্য সম্পাদন করা সহ গেমিং বা মাল্টিমিডিয়ার বিভিন্ন রকম কাজ, ক্যামেরার ব্যবহার, কৃতীম আলোর ব্যবহার অর্থাৎ ফ্ল্যাশ লাইট ইত্যাদি করা সম্ভব এবং সহজতর হয়ে উঠেছে।

পূর্বের সময় প্রথম প্রথম যখন মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয় তখন যোগাযোগের জন্য এনালগ মাধ্যম ব্যবহার করা হতো। এ পরবর্তীতে প্রায় ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের চতুর্থ মাসের দিকে এসে প্রায় ৪.৪ পাউন্ডের গ্রহণযোগ্য একটি মোবাইল ফোনের আবিষ্কার হয়ে যা যোগাযোগের জন্য সরাসরি কল করার সমর্থ হয়েছিল।

মোবাইল ফোনের অন্যতম প্রধান উৎস হল মোবাইল ফোনের ব্যাটারি। বর্তমান সময়ে ক্ষুদ্র বার্তা সহ ছোট বড় যে কোন কাজের জন্য কিংবা যে কোন তথ্য খুঁজে বের করার জন্য মোবাইল ফোন অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রযুক্তি। এটি কেবল আমাদের সময়ই বাঁচায় না বরং আমাদের নতুনত্ব জানতে বা নতুনত্ব আবিষ্কার করতে সাহায্য করে।

মোবাইল ফোন বা মুঠোফোন আমাদের জীবনকে অতিমাত্রায় সহজ করে তুলেছে। তবে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনেকগুলো অপকারী দিক শিক্ষার্থীদের জীবনে ঢেউয়ের মতো ধেঁয়ে আসছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাদের ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের আসক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে। তাই মোবাইল ফোনে সুবিধাগুলো মাথায় রেখে এর ব্যবহারে সচেতন হওয়া উচিত যেন মোবাইল ফোন ব্যবহারে বেশি সময়ের অপচয় না হয়।

মোবাইল আসক্তির কুফল**

বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারের আসক্তি এত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে যে ছোট থেকে শুরু করে বড় পর্যন্ত যেকোনো বয়সের যে কোনো ব্যাক্তি মোবাইল ফোনের আসক্তি তে পরে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মূলত একজন ব্যক্তির মোবাইল ফোনের প্রতি তার আসক্তির জন্য দায়ী। বেশিরভাগ সমীক্ষাতে দেখা যায় ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা বিকৃতভাবে ছড়িয়ে থাকে।

ইউনাইটেড স্টেটস এর অনুসন্ধানী কর্মসূচির মাধ্যমে জানা যায় যে, গড় হিসেবের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর প্রতিদিন এর সময়ের মধ্যে প্রায় ১০ ঘন্টা সময় ব্যয় হয় মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থীর দিনের অধিকাংশ সময় মোবাইল ফোনের সাথে ব্যয় হয়।

এই পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা যায় শিক্ষার্থীরা তাদের দৈনন্দিন সময় যতটুকু সময় মোবাইল ফোনে সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোতে বা বিভিন্ন রকম বার্তার আদান-প্রদান করার মাধ্যমে কাটিয়ে দেয় ততটুকু পরিমাণ বার্তা আদান-প্রদান তারা সম্পূর্ণ দিনের সময়েও সামনাসামনি কারো সাথে করেন না।

অন্য আরেকটি অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে ইউনাইটেড স্টেটস এ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রতি পাঁচ জন ব্যবহারকারীর অধিকাংশই অর্থাৎ তিনজনের মতো এক ঘন্টার অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার ব্যতীত থাকতে পারেন না।

মোবাইল ফোনের অপব্যবহার এত পরিমাণে ছড়িয়ে পড়েছে যে এর সঠিক ব্যবহার না জানার কারণে মোবাইল আসক্তির কুফল আমাদের চারিদিকে কোথাও না কোথাও মোবাইল ব্যবহারকারী একজন ব্যক্তির মধ্যে দেখা যাচ্ছে। মোবাইল ফোন আসক্তির কারনে জনসাধারণ এক ধরনের মনোবিশেষায়ীত রোগ নোমোফোবিয়া তে ভুগছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নোমোফোবিয়া তে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার বিষয়টি একটি আতঙ্কের সমতুল্য। মোবাইল ফোন ব্যবহারের আরো একটি কুফল হিসেবে অনেকগুলো শারীরিক ক্ষতির তালিকা রয়েছে। মোবাইল আসক্তির কুফল গুলো নিম্নে ছোট করে তুলে ধরা হলো।

পিঠ ব্যথাঃ বিশেষজ্ঞদের গবেষণা অনুযায়ী, বিগত কিছু বছর যাবৎ বিশেষ করে অল্প বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পেট ব্যথা এবং মেরুদন্ডের বিভিন্ন রকম রোগ ব্যাধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হওয়া এক গণনা অনুসারে প্রায় বাল্যকাল থেকে ২৪ বছর বয়স পর্যন্ত বেশি ভাগ যুবক-যুবতীদের মধ্যে শতকরা প্রায় ৪৫ শতাংশ ব্যক্তিরাই পেট ব্যথা সহ মেরুদন্ডে বিভিন্ন রকম সমস্যাতে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে প্রায়ই বলা হয়।

দৃষ্টিশক্তিতে বাধাঃ মোবাইল ফোনে থাকা ক্ষতি কর রেডিয়েশন গুলো অতিরিক্ত সময় আমাদের চোখে পড়ার ফলে চোখে নানা রকম সমস্যার উদ্ভব হয়। ফলে ধীরে ধীরে এই সমস্যাগুলো মাথাব্যথার সৃষ্টি করে কিংবা দর্শন শক্তির বিলুপ্ত করতে থাকে। মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর রশ্মি চোখের রেটিনার জন্য বড়ই ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দৃষ্টি শক্তি লোক না পেলেও হ্রস্ব দৃষ্টি জনিত সমস্যা প্রায় অনেক সমীক্ষাতে পাওয়া যাচ্ছে।

স্নায়ু রোগঃ মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার বিভিন্ন রকমের স্নায়ুজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। মোবাইল ফোনের ব্যবহার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বেড়ে গেলে এটি আমাদের মেরুদন্ড সংযুক্ত স্নায়ু গুলোকে সংকুচিত করে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

উদ্বিগ্নতা ও নৈরাশাঃ মোবাইল ফোনের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্যবহার করার ফলে এটি কেবল শারীরিক সমস্যা তা থেমে থাকে না বড় ব্যবহারকারীকে মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্থ করে দেয়। পরিমাণের চেয়ে বেশি ব্যবহার করার ফলে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করার ফলে মিনিটে মিনিটে দেয়া আপডেট কিংবা অন্যান্য কারণে ব্যবহারকারী উদ্বিগ্নতা এবং হতাশায় আক্রান্ত হন।

ঘুমের সমস্যাঃ অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে এটি আমাদের স্নায়ুতে ব্যপক ভাবে প্রভাব ফেলে। তাছাড়া মোবাইল ফোনে থাকা নীল আলো বা মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন সরাসরি মানবদেহের ঘুমকে আঘাত করে ফলে তাদের মধ্যে ঘুমের অভাবজনিত সমস্যা দেখা দেয়।

শ্রবণ শক্তি হ্রাসঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহারে যোগাযোগ এবং সোশ্যাল ফাইট গুলোর মাধ্যমে মিডিয়া সম্বন্ধীয় শব্দ এবং ছবিগুলো আমরা দেখতে এবং শুনতে পাই। তাই মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে যেহেতু আমাদের দৃষ্টি শক্তিতে জটিলতা দেখা দেয় ঠিক সেভাবেই অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে আমাদের শ্রবণ শক্তিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে।

অকারনে স্ক্রলিং কিংবা অতিরিক্ত সময় ধরে ফোনে যোগাযোগ করা, দীর্ঘ সময় ধরে হেডফোন ব্যবহার বাহাই ভলিয়মে মোবাইল ব্যবহার করা ইত্যাদি কারণে আমাদের কানের অভ্যন্তরীণ পাতলা লোমগুলো ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে এবং শ্রবণ শক্তি হ্রাস পেতে থাকে।

মোবাইল রেডিয়েশন কি

মোবাইল ফোন স্বাভাবিকত রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ওয়েভ দ্বারা পরিচালিত হয়। এটি মোবাইল ফোনের অভ্যন্তরে অদৃশ্য রশ্মি দ্বারা প্রবাহিত একটি প্রক্রিয়া। এই রশ্মির মাত্রা এক্সরের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি কিংবা গামা রশ্মির তুলন্স্য স্বল্প কিন্তু তবুও মোবাইল ফোনে প্রবাহিত হওয়া রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী মানুষের উপর ক্ষতিকর প্রতিপত্তি স্থাপন করতে সক্ষম।

মোবাইল ফোনের এই তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রবাহের প্রক্রিয়াকে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন এর নির্গমন হওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়। এই প্রক্রিয়াতে প্রবাহিত হওয়া তরঙ্গের মাধ্যমে সিগনাল আদান-প্রদান হওয়ার ফলে আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ সাধারন করতে পারি।

মোবাইল ফোনের ১০ টি ভালো দিক

মোবাইল ফোনের ব্যবহার মানব জীবনে উপকারী এবং অপকারী দিক উভয় এনে দিয়েছে। ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলোর মধ্যে কিছু ভালো দিক ও রয়েছে যার পরিমাণ প্রায় অপকারিতার দিক গুলোর সমান সমান।মোবাইল ফোন আমাদের জীবনকে যেভাবে সহজ করেছে তার দশটি দৃষ্টান্ত বা ভালো দিকগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো।

যোগাযোগ স্থাপনাঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহারে আমাদের দূরত্ব পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপনে ব্যপক সহায়তা করে চলছে।

গণমাধ্যমঃ স্মার্ট মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া তথ্য দ্রুতই ধারণ করা সম্ভব হয়ে উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমঃ মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ তথ্য ও মতামত বিনিময় ইত্যাদি অনেক সহজ হয়ে উঠেছে।

ব্যবসায়িক সাফল্যঃ ব্যবসার উদ্দেশ্যে নতুন উদ্যোগ গ্রহনকারী ব্যক্তিদের জন্য মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহারের ফলে নিজের নতুন ব্যবসা প্রচার করা সহজ উঠেছে ফলে দ্রুতই সাফল্যের মুখ দেখা সম্ভব হয়।

সাহায্যের জন্যঃ এখনো নতুন জায়গায় পৌঁছানো কিংবা কারো থেকে তাৎক্ষণিক সাহায্য গ্রহণ করার জন্য বা ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে কোন কাজ সম্পন্ন করার জন্য মোবাইল ফোন মোটামুটি সবক্ষেত্রে সাহায্য করে আসছে।

ঠিকানার সন্ধানেঃ নতুন কোন জায়গাতে যাওয়ার জন্য কিংবা অজানা শহরে রাস্তা কিংবা কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য স্থল চেনার জন্য মোবাইল ফোন থেকে খুব সহজেই ঠিকানা খুঁজে বের করা সম্ভব।

স্ট্যাটাস দিতেঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় কিংবা অন্যান্য যোগাযোগ কিংবা কর্মস্থানের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্ট্যাটাস দিতে এবং দর্শকের স্ট্যাটাস দেখার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহ্রত হয়ে থাকে।

মনোরঞ্জনের মাধ্যমঃ মোবাইল ফোন ব্যবহার বর্তমান সময় অবসর সময় কাটানোর একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বর্তমানে অনেকেই টেলিভিশন এর বদলে মোবাইল ফোন থেকে নিজের মনোরঞ্জন এর মাধ্যমে বাছাই করে থাকেন।

কেনাকাটার উদ্দেশ্যেঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বর্তমানে বাজার করার ব্যাপারটি বর্তমানে খুবই সহজ হয়ে উঠেছে। হাতের মুঠো মোবাইল ফোন থাকার মাধ্যমে ঘরে বসেই বাসে করে যে কোন জিনিস ঘরে বসে কেনাকাটা করা সম্ভব।

সময় সঞ্চয়ঃ মোবাইল ফোন হাতে থাকার ফলে যেকোনো রকম তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে বের করে ফেলা সম্ভব। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিংবা কর্ম জীবনে নানা রকম জটিলতা সমাধানের জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এগুলো দ্রুত গতিতে সমাধান করা সম্ভব যার ফলে প্রাত্যহিক জীবনের অধিকাংশ সময় বেঁচে যায় এবং সময় সঞ্চয় হয়।

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা

বর্তমান সময়ে ছোট বড় প্রায় সকলের হাতেই স্মার্টফোন দেখতে পাওয়া যায়। এই মোবাইল ফোন ব্যবহারে উপকারের চাইতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ ক্ষতিগ্রস্তই হচ্ছে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে মোবাইল ফোন খুব খারাপ প্রভাব  ফেলে। যদিও বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা সকলেই অনেক দিক থেকে বা ভিন্ন ভিন্ন ভাবেই উপকৃত হয়ে থাকি।

কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটি একটি মারাত্মক বিপদের সূচনা করে। ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বপ্রথম উদ্দেশ্যই হওয়া উচিত তার পড়াশোনা। কিন্তু বর্তমানে পড়াশোনা করতে হলে অনেক ক্ষেত্রেই মোবাইল ফোনের প্রয়োজন হয়। এই প্রয়োজনটায় ধীরে ধীরে তাদের আসক্তিতে পরিণত হয়ে যায় এবং এই আসক্তি থেকে তৈরি হয় তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার সময়।

ফোনে একঘেয়ে ভাবে পড়াশোনা করতে করতে এক সময় মনে হয় একটু বিরতি নেওয়ার কথা। আর এই বিরতি হয় গেমস খেলা বা সোশ্যাল মিডিয়াতে জড়িত হওয়ার মাধ্যমে। এভাবেই মোবাইল ফোনের প্রতি একটু একটু করে ছাত্র-ছাত্রীদের আসক্তি জন্ম নেয়া শুরু করে। ফলে পড়াশোনাতে অমনোযোগী হয়ে নিজের ভবিষ্যৎ নিজের হাতেই নষ্ট করবে।

তাছাড়া ফোনে থাকা রেডিয়েশন এর কারণে চোখেরও ক্ষতি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহারের কারণে মানুষ নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এমন আরো অনেকগুলো অপকারিতা রয়েছে যা ছাত্রছাত্রীদের হাতে ফোন থাকার কারণে হয়ে থাকে। পড়াশোনার ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফিতেও আসক্ত হয়ে পড়ায় সেই ছাত্রের পাশাপাশি আমাদের সমাজের জন্যেও এটা  অনেক বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার

প্রায় প্রতিটি জিনিসেরই ভালো দিক এবং ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে সব সময় নিজের ভালোর জন্য চিন্তা করে এই দিক নির্ণয় করতে হবে এবং অবশ্যই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রত্যেকটি জিনিসের ভালো দিকগুলোই আমাদের জন্য ভালই হয়ে থাকে। ঠিক একইভাবে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের যেমন কিছু সুবিধা বা ভালো দিক রয়েছে। ঠিক তেমনি রয়েছে এর কুফল, অসুবিধা বা ক্ষতিকারক দিক। তাই আমাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের পূর্বে জেনে নিতে হবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম। নিম্নে মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।

  • সর্বপ্রথম শিশুদের কে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • প্রয়োজন না থাকলে ওয়াইফাই অথবা মোবাইল ডাটা অফ রাখতে হবে।
  • দীর্ঘ সময় থেকে ফোনে আলাপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ফোন কল করার চাইতে টেক্সট করে কথাবার্তা বলার চেষ্টা করতে হবে।
  • কথা বলার জন্য সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে স্পিকারে কথা বলা।
  • সিগনালবিহীন এলাকা থেকে দূরে থাকতে হবে বা এ ধরণের এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নেতিবাচক দিক সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url