বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি তার সম্পর্কিত বিস্তারিত জানুন

বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি তার সম্পর্কিত বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়ে আজকের আমাদের মূল আলোচনার প্রেক্ষাপট। সাথেই আপনাদের জন্য এই আলোচনায় আরও থাকছে, বি এস এস অনার্স এর বিষয় সমূহ নিয়ে কিছুটা বিস্তারিত তথ্য। তাই আজকের পোস্টের সাথে থাকুন এবং পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন বি এস এস অনার্স সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।

বি-এস-এস-এর-পূর্ণরূপ-কি-তার-সম্পর্কিত-বিস্তারিত-জানুন

লেখাপড়ায় উচ্চশিক্ষার বিষয় বহু ভাগে বিভক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়পক্ষ বিষয় নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী উচ্চশিক্ষার বিষয়বস্তু সম্পর্কে সঠিক তথ্য সন্ধানে বিভ্রান্তিতে ভুগেন। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিজেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিষয় নির্বাচনে ডামাডোল অবস্থাতে থাকেন। তাই তাদের উদ্দেশ্যেই অনার্সের একটি বিভাগ বি এস এস অনার্স এর বিষয় সমূহ নিয়ে আজকের আমাদের পোস্টে সঙ্গে বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ভুমিকা

বি এস এস অনার্স বলতে বুঝায় সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের নির্বাচিত বিষয়ের উপর ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করার প্রক্রিয়াকে। বি এস এস কে সম্পূর্ণরূপে লিখলে আসে - ব্যাচেলর অব সোস্যাল সায়েন্স। বি এস এস অনার্স এর মধ্যে সামাজিক বিজ্ঞান সম্পৃক্ত কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে বিভাগটি গঠিত হয়। অনেকেই আবার বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি জানার আগ্রহের সমতুল্য আগ্রহ নিয়ে ডিগ্রি বি এস এস এর বিষয় সমূহ এবং বি এস এস অনার্স এর বিষয় সমূহ এর পার্থক্য ও সম্পৃক্ততা সম্পর্কে খুঁজে থাকেন। তাই আজকের পোস্টে আমরা জানব, বিএসএস অনার্স মানে কি, বি এস এস অনার্স এর ভবিষ্যৎ, বি এস এস অনার্স এর বিষয় সমূহ, বি এস এস কোন বিভাগ এবং বি এস এস এর বিষয় সমূহ সম্পর্কে।

বিএসএস অনার্স মানে কি

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তে থাকা নানা রকম ডিগ্রির এবং বাংলাদেশী শিক্ষা পদ্ধতির দৃশ্যপটে অনার্স জাতীয় ডিগ্রির নানা রকম মর্ম রয়েছে। বি এস এস অনার্স অর্থ হলো মূলতঃ সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ সংবলিত আরো রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, অর্থনীতি, নৃ-বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ সম্বন্ধীয় বিষয়গুলোর অধীনস্থ দীর্ঘ চার বছর ব্যাপী সময় নিয়ে গঠিত একটি কোর্স এর বিভাগ। 

বি এস এস অনার্স কে সহজ ভাবে বুঝাতে বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি তা ব্যাখ্যা করে ব্যাচেলর অব সোস্যাল সায়েন্স বলা যায়। যার অর্থ দাঁড়ায় সমাজকর্ম ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দিকে। বি এস এস কোর্সটি দুটি প্রসঙ্গে বিভক্ত হয়ে আছে। বি এস এস স্নাতক সম্মান এবং বি এস এস স্নাতক। 

বি এস এস স্নাতক এবং স্নাতক সম্মান উভয়ই যথাক্রমে ৩ বছর মেয়াদী এবং চার বছর মেয়াদী হিসেবে সম্মান নির্দেশক ডিগ্রি। বি এস এস ধারণ করার জন্য সমাজবিজ্ঞানের সাথে অর্থনীতি, গণ যোগাযোগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি কয়েকটি প্রসঙ্গ কে নির্দেশ করা হয়।

বি এস এস অনার্স এর ভবিষ্যৎ

বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি তা জেনে নিলে বি এস এস অনার্স সম্পর্কিত সকল তথ্যের বিশ্লেষণ দেয়া তুলনামূলক সহজ হয়ে পড়ে। যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তৈরি করে রাখলে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পথ নির্বাচন করা সহজ হয়ে পড়ে। অনার্সের বিভাগ এবং বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রথমেই আপনার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কি সেটি আবিষ্কার করে নেওয়া জরুরী।

যেন বি এস এস অনার্স বিভাগকে নির্বাচন করার পেছনের কারণ এবং মূল উদ্দেশ্য নিজেকে ঠিকঠাক ভাবে বোঝানো যায়। কোন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করলে সে বিষয়টি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কতটুকু কার্যকারী তা জানার জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের সাথে বিষয়টির সংযোগ খুঁজে বের করতে হবে যেন সামনের দিকে অগ্রসর হতে এটি প্রেষণার যোগান দিতে সক্ষম হয়।

বি এস এস অনার্স কিংবা বি এস এস ডিগ্রি প্রাপ্তির পরবর্তী সময়ে আপনার বিভাগ অনুযায়ী যে কোন বিষয় নির্বাচন করে তা পরবর্তী শিক্ষার উদ্দেশ্যে বা কর্মজীবনে প্রয়োগ করা সম্ভব। সাধারণত ডিগ্রি বা সাধারণ স্নাতক থেকে বিএসএস করলে পায় পাশে সম্বন্ধীয় কমবেশি সকল বিষয়েই ধারণা অর্জিত হয়। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি এই কথাটির সাথে বি এস এস নিয়ে পড়ে ভবিষ্যৎ কতটুকু গড়ে ওঠে এমন অনুচ্ছেদের সম্পর্ক কি।

তাই বি এস এস অনার্স করে কর্মক্ষেত্রে কোন কোন শাখায় সুযোগ পাওয়া যায় সেদিকে একটু চোখ বুলিয়ে দেখলেই বুঝা যাবে বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি প্রশ্নের সম্পৃক্ততা। বি এস এস অনার্স বা সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা করে ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য কর্মজীবন বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভাজিত আকারে পাওয়া যেতে পারে।

বি এস এস থেকে সার্টিফিকেট অর্জন করে এটি কর্মজীবনে বিভিন্ন রকম সামাজিক গবেষণা শাখা, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুযোগ, শিক্ষকতা, ব্যাংক বীমা বা বিভিন্ন রকমের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, সম্প্রদায়ের উন্নয়ন সম্পৃক্ত কাজে, প্রশাসনের বা আইন বিভাগে, ওকালতি, সামাজিক পরিসেবা শাখা বা মানব সম্পদ শাখা গুলো সহ নানারকম ক্ষেত্রে কর্মজীবন ও ভবিষ্যৎ গঠন করা সম্ভব।

বি এস এস অনার্স এর বিষয় সমূহ

বি এস এস অনার্স বা ব্যাচেলর অব সোস্যাল সায়েন্স এর স্নাতক সম্মান ডিগ্রিতে ছয়টি বিষয় নিয়ে বিভাগটি গঠিত করা হয়েছে। বি এস এস অনার্স এর বিষয় গুলোর মধ্যে অন্যান্য বিভাগের মতোই কিছু আবশ্যকীয় বিষয় দেয়া থাকে এবং এর সাথে নির্বাচিত প্রধান বিষয়টির সাথে সংযোগ রেখে কিছু বিষয় নির্বাচন করে নিতে হয় যেগুলোকে সচরাচর ঐচ্ছিক বিষয় বলে চেনা হয়। ঐচ্ছিক বিষয় গুলোর মধ্যে পাঁচটি গুচ্ছ আকারে থাকে।

যার মধ্যে প্রতিটি গুচ্ছে কিছু সংখ্যক বিষয় ইতোপূর্বে দেয়া থাকে। এই পাঁচটি গুচ্ছ হতে যেকোনো তিনটি থেকে একটি একটি বিষয় তুলে নিয়ে নিজের ঐকিক বিষয় নির্বাচন করতে হবে। এবং শুরুতে দেয়া আবশ্যকীয় বিষয় থেকে প্রথম পর্বের দিকে তিনটি আবশ্যকীয় বিষয় দেয়া হয়। তা হলো- স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস, বাংলা জাতীয় ভাষা এবং ইংরেজি যার প্রতিটি যথাক্রমে অনার্সের বর্ষ অনুযায়ী নতুন করে সংযুক্ত হতে থাকে।

বি এস এস কোন বিভাগ

বি এস এস অর্থাৎ ব্যাচেলর অব সোস্যাল সায়েন্স ডিগ্রিটি সামাজিক বিজ্ঞান অর্থাৎ সমাজবিজ্ঞান বিভাগীয় কার্যধারা। তাই বি এস এস সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের উচ্চশিক্ষার একটি স্বল্প-দীর্ঘ মেয়াদী কার্যধারা। বি এস এস বিভাগ এর বিষয় সমূহ সামগ্রিকভাবে বিজ্ঞান সম্বন্ধীয় বিষয়বস্তু নিয়ে সীমাবদ্ধ।

এক্ষেত্রে বি এস এস অনার্স বা স্নাতক সম্মান এর ডিগ্রি প্রাপ্তির সময় কাল প্রায় চার বছর। যা অনার্স এর অন্যান্য বিভাগীয় ডিগ্রী অর্জনের সময় কালের সমতুল্য সময় এবং একইসাথে বি এস এস ডিগ্রি স্নাতক এর সময় কাল প্রায় তিন বছর ব্যাপী। বি এস এস অনার্স একটি উচ্চ মন্মান নির্দেশক রূপ সংক্রান্ত বিভাগ।

সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অংশগ্রহণ করে পাশ করার পর অনার্সে পড়াশোনার চলমান রাখার জন্য অনার্সে যেকোনো একটি বিভাগ বাছাই করে নেয়া হয়। বি এস এস অনার্স একইভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর সাধারণ স্নাতক এর ক্ষেত্রে প্রায় তিন বছর মতন এবং বি এস এস অনার্স এর ক্ষেত্রে প্রায় চার বছর মতন সময় নিয়ে অর্জন করা একটি কোর্স।

বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি

বি এস এস ইংরেজি B.S.S. থেকে নিয়ে উচ্চারিত হয় যা স্নাতক সম্মানের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ডিগ্রি থেকে ইংরেজির প্রথম অক্ষর গুলো তুলে বলা হচ্ছে। সম্পূর্ণরূপে এটি কে ব্যাচেলর অব সোস্যাল সায়েন্স বলে। তাই বি এস এস এর পূর্ণরূপ ইংরেজি শব্দে 'Bachelor of Social Science' আকারে বলা এবং লেখা হয়।

আর যে সকল শিক্ষার্থী বি এস এস অনার্স নিয়ে পড়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে তাদের বি এস এস ডিগ্রি ধারী শিক্ষার্থী বলা হয়। তাই কেবল সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ছায়ায় অর্জন করা শিক্ষার্থীদের বি এস এস স্নাতক ডিগ্রি দেয়া হয়। পূর্ণরূপে লিখিত বি এস এস অনার্স এর ডিগ্রি কে বাংলায় সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের উপর অর্জন করা স্নাতক ডিগ্রী বা সম্মান ডিগ্রী কে সম্বোধন করা হয়।

বি এস এস এর বিষয় সমূহ

ইতোমধ্যে আমরা জানলাম বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি এবং তার বিস্তারিত। ব্যাচেলর অব সোস্যাল সায়েন্স এর স্নাতক ডিগ্রি এবং স্নাতক সম্মান এর বিষয় সমূহ প্রায় একই ধরনের। এই বিষয়গুলোর প্রথম ধারা গুলো সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, অর্থনীতি, নৃবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ। বি এস এস এর এই বিষয়গুলো থেকে যেকোনো একটি নির্বাচন করে অনার্স পড়তে হয়। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বিষয়ের সাথে অত্যাবশ্যকীয় ভাবে তিনটি বিষয় দেয়া হয়। এই বিষয়গুলো কি তা নিম্নে দেওয়া হলো।

  • স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের ইতিহাস
  • বাংলা জাতীয় ভাষা এবং
  • ইংরেজি।

এই বিষয়গুলোর সাথে কিছু ঐচ্ছিক বিষয় দেয়া হয় যেগুলো উপরোক্ত ছয়টি বিষয়ের মধ্যে নির্বাচিত একটি বিষয় যেটি নিয়ে অনার্স কোর্সটি করা হবে সেটির সাথে সম্পৃক্ততা রেখে বাছাই করা উত্তম। এই বিষয়গুলো পাঁচটি গুচ্ছ আকারে দেয়া হয়।

  • প্রথম গুচ্ছ বা ক-গুচ্ছঃ বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, আরবি, পালি, ড্রামা এন্ড মিডিয়া স্টাডিস।
  • দ্বিতীয় গুচ্ছ বা খ-গুচ্ছঃ ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি।
  • তৃতীয় গুচ্ছ বা গ-গুচ্ছঃ দর্শন, ভূগোল ও পরিবেশ, গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি।
  • চতুর্থ গুচ্ছ বা ঘ-গুচ্ছঃ সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি।
  • পঞ্চম গুচ্ছ বা ঙ-গুচ্ছঃ মনোবিজ্ঞান, গণিত, ইসলাম শিক্ষা, পরিসংখ্যান।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা বি এস এস এর পূর্ণরূপ কি এবং বি এস এস অনার্স এর শিক্ষাধারা সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু জানতে পেরেছেন। আজকের পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকলে পোস্ট সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা আপনার গুরুত্বপূর্ণ কোন মতামত আমাদের জানাতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে সকলকে বি এস এস সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url