চোখের দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে রয়েছে কুরআন হাদিসের আমল
চোখের দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে রয়েছে কুরআন হাদিসের আমল জানতে পারবেন আমার এই পোস্টে। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। চোখ তন্মধ্যে উন্নতম। যদি আপনি আমার পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে সব কিছুই পরিস্কার হয়ে যাবে। তাই অনুরোধ করবো আমার এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য, কারণ আপনার চোখের দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে রয়েছে কুরআন হাদিসের আমল।
প্রিয় পাঠক, অনেকের জন্মের পড় থেকেই চোখের দৃষ্টি শক্তির সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেকের বয়স ৩/৪ বছর পার হওয়ার পর দেখা দেয়। আবার অনেকের বয়স কিশোর থেকে যুবকে পদার্পণ করলে এই রোগ দেখা দেয়। আবার বয়সের সাথে সাথে চোখের দৃষ্টি শক্তি কমে আসে কিন্তু খেয়াল করছেন কি? অনেক মানুষ বৃদ্ধ হয়ে যাবার পরও চশমার ধারই ধারে না। তবে নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না কি কারণে চোখের দৃষ্টি শক্তি লোপ পায়। চলুন জেনে নেই কিভাবে চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
ভূমিকাঃ
চোখের দৃষ্টি শক্তি লোপ পায় কিছু কিছু খাদ্যাভ্যাসের কারণে। যদি আমরা নিয়মিত কিছু কিছু খাবার গ্রহণ করি তাহলে চোখের দৃষ্টি ভালো থাকবে। অথচ এই খাবারগুলি কিন্তু মোটেই বেশী দাম নয় বরং অনেক দাম কম এবং সহজেই পাওয়া যায়। আমরা নিজেরাই অলসতা করে অনেক সুষম ও পুষ্টিকর খাবার এরিয়ে চলি যার ফলে আমাদের দেহের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়।
নিয়মিত পাঠ করবেনঃ
আল্লাহম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি, সাময়ি ওয়া শাররি, বাসারি ওয়া শাররি, লিসানি ওয়া শাররি, ক্বালবি ওয়া শাররি মানিয়্যি।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার কানের অপকারিতা, চোখের অপকারিতা, জবানের অপকারিতা, অন্তরের অপকারিতা এবং বীর্জের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। (মিশকাত ও আবু দাউদ)।
শুধুমাত্র যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে, তাহারা আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি বাসারি বললেই চলবে। অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি আমার চোখের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।
আরেকটি কথা মনে রাখবেন, যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন, নামাজ শেষে অর্থাৎ সালাম ফিরার পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করে দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীতে ফু দিয়ে দুই চোখে ছোয়াবেন তিন বার করে ইনশাআল্লাহ আরোগ্য লাভ করবেন।
যে সব খাবার গ্রহণ করলে দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখেঃ
- গাজরঃ আমরা যদি নিয়মিত গাজর খাই তাহলে চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এটি চোখের ভেতর দিয়ে আলোর প্রবাহকে শোষণ করে এবং রাতের বেলায় কম আলোতেও দেখার সাহায্য করে এবং সব কমলা রঙের সবজি ও ফলই চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধির জন্য সহায়ক ভূমিকা আলো করে। কেননা এতে বিটা-ক্যারোটিনা থাকে।
- তৈলাক্ত মাছঃ স্যামন, টুনা, ম্যাকেরেলের মত মাছে ওমেগা-৩ অ্যাসিড বেশী থাকে। সামুদ্রিক মাছ, চর্বি জাতীয় মাছ খেলে চোখের জন্য অনেক উপকার হয়ে থাকে। চোখ শুষ্ক রাখার বিষয়ে অনেক সহায়তা করে।
- ডিমঃ চোখের সুস্থ্যতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ডিম খাবেন, কেননা ডিমে রয়েছে লুটেইন, জিক্সানথিন, ভিটামিন-ই ও জিঙ্কের উৎস।
- ফলমূলঃ ভিটামিন-সি জাতীয় ফলমুল বেশী বেশী করে খাবেন। এতে করে চোখের ছানি হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং বয়সজনিত কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সম্ভাবনাও কম থাকে।
- বাদামঃ বাদামে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। তাই সামগ্রিক দিক থেকে এই পুস্টিগুলো চোখের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং বয়সের বৃদ্ধির সাথে সাথে চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- কচুর শাক অথবা লতিঃ নিয়মিত কচুর শাক ও কচুর লতি খাবেন। এতে করে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পাবে।
চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে করণীয়ঃ
- ভিটামিন-এ জাতীয় খাবার বেশী বেশী করে খাবেন।
- ছোট মাছ, ডিম, গাজর, পাকা আমা, মিস্টি কুমড়া, গাজর, কমলা লেবু এ জাতীয় নিয়মিত খাবেন।
- রৌদ্রে গেলে সানগ্লাস ব্যবহার করা। কেননা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি চোখের শত্রু।
- কাজের কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ ঠান্ডা ও পরিস্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন।
- ব্যবহৃত ফোন, কম্পিউটারের আলো লো বা হাই না করে মিডিয়াম পর্যায়ে রাখবেন।
- লেখাপড়া করার সময় কম আলোতে পড়বেন না।
- দীর্ঘসময় কম্পিউটার কিংবা মোবাইল চালাবেন না।
- মাঝে মাঝে ১০-১৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে চোখকে বিশ্রাম দিন।
চোখের যত্ন কিভাবে নিবেনঃ
নিয়মিত চোখের যত্ন নিলে সহজেই যে কোন সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। চোখের যত্ন কিভাবে নিবো, চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, দৃষ্টি শক্তি তীক্ষ্ণ রাখতে কিছু টিপস নিম্নে উল্লেখ করা হলো যা দৈনন্দিন পালনীয় এবং পালন করা উচিত।
- চোখ ঘসাঃ চোখ ঘসা থেকে বিরত থাকুন। কেননা হাতে প্রচুর পরিমাণে ধূলিকণা ও ব্যাকটেরিয়া থাকে ফলে চোখ ঘসলে তা চোখের সংস্পর্শে গেলে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন।
- হাত ধোয়াঃ ঘন ঘন হাত ভালো ভাবে ধোয়ার অভ্যাস করুন। চোখকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত রাখুন।
- সূর্যের আলোঃ সূর্য থেকে চোখকে রক্ষা করুন। সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি চোখের অবক্ষয়ের জন্য ঝুঁকি বাড়ায় এবং কর্নিয়া সানবার্ন বা ফটোকেরাটাইটিস হতে পারে। সে জন্য সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
- হাইড্রেটড থাকুনঃ চোখসহ শরীরের সকল কিছু সুস্থ্য রাখতে নিয়মিত তরল খাবার গ্রহণ করুন। আপনি যদি অধিক পরিমাণ হাইড্রেটেড হন, তাহলে নিজের চোখকে শুস্ক ও বিরক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখুন।
- ধূম পানঃ ধূম পান করা থেকে বিরত থাকুন। ধূমপান অপটিক স্নায়ুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য চোখের দৃষ্টিশক্তির উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে।
- আলো থেকে দূরে থাকাঃ মোবাইল, কম্পিউটার কিংবা টেলিভিশনের স্ক্রীনের আলো থেকে ২০ ডিগ্রি নীচে অথবা উপরে অবস্থান করুন। এতে করে স্ক্রীনের আলো সরাসরি আপনার চোখে পরবে না।
- দৃষ্টি পরিবর্তনঃ আপনি যে কাজই করুন না কেন কিছুক্ষণ পর পর চোখের দৃষ্টি অন্যদিকে রাখবেন অন্ততঃ ১৫/২০ মিনিট।
- ঘুমঃ চোখকে আরামদায়ক রাখতে এবং চোখের দৃষ্টি ভালো রাখতে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান।
- নিয়মিত ডাক্তার দেখাঃ চোখের দৃষ্টি শক্তি কিংবা বেশী পরিমাণের সমস্যা দেখা দিলে নিয়মিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় গ্রাহক আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এমন আরো নতুন পোস্ট পেতে হলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। এতক্ষণ ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url