কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন আমার এই পোস্টে। কিডনি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি অঙ্গ। ইংরেজী নাম কিডনি আর বাংলায় বলা হয় বৃক্ক। কিডনি দেখতে দুটি সিমের মত। কিডনির সমস্যা যখন শুরু হয় তখন কেউ জানতে পারে না। অর্ধেকের মত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর জানা যায়। তাই বলবো আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন আমার পোস্টের সব পয়েন্টগুলো পড়ে।
কিডনি ভালো রাখার অনেক উপায় আছে। কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন। যদি আমরা নিজেরা সচেতন না হই তাহলে কিন্তু নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনার মত হবে। তাই বলবো শুধু কিডনি বলে কথা নয়, মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গের প্রতি যত্ন ও ঠিক রাখার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা যেই অঙ্গই হউক, একবার ক্ষতিগ্রস্থ হতে লাগলে নিজেকে পঙ্গু করে ফেলবে।
ভূমিকা
কিডনি ভালো আছে কিনা এটা সহজেই বুঝা যায় না কিংবা তেমন কোন উপায়ও নেই। তবে কিছুটা বুঝা যায় যেমন- ফোলা ফোলা ভাব, প্রসাবের মধ্যে কিছুটা সমস্যা এবং শীত শীত ভাব অনুভাব করা। কিডনি আক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিক থেকে কোন লক্ষণ বা সমস্যা ধরা পড়ে না। তাই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করা, কিডনি ভালো রাখার খাবার, চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ, বেশী বেশী পানি পান করা ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
কিডনি রোগের কারণ
আমাদের শরীরের ২টি কিডনি দিন রাতে প্রায় ২০০ লিটার রক্ত পরিশোধন এবং রক্ত থেকে বর্জ্য অপসারণ করে থাকে। যে যে কারণে কিডনি অকার্যকর হয় সেই কারণেই মানুষের শরীরের অসুস্থতা সৃষ্টি করে। তাই যদি আপনি কিডনির সমস্যা জনিত প্রতিকার সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করে কিডনিকে এবং নিজেকে সুস্থ্য রাখুন।
যে যে কারণে কিডনি অকেজো হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- উত্তরাধিকার সূত্রে কিডনি রোগ থাকা।
- উচ্চ রক্তচাপ থাকলে।
- কারো ডায়াবেটিস থাকলে।
- গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস বা কিডনির ফিল্টারিং ইউনিটের প্রদাহ।
- পাইলোনেফ্রাইটিস।
- কিডনিতে পাথর, বর্ধিত প্রস্টেট, মূত্রনালীতে দীর্ঘস্থায়ী বাধা।
- জন্মগত কিডনি ও মূত্রনালির সমস্যা।
- অটোমুইন রোগ ইত্যাদি।
- প্রস্রাবের সময় যন্ত্রণা।
- প্রস্রাবের অভ্যাস পরিবর্তন।
- চামড়ায় দাগ হওয়া।
- প্রস্রাবের সাথে রক্তপাত হওয়া।
- বমন হওয়া।
- শ্বাসকষ্ট অনুভব হওয়া।
- শরীরের নিচের অংশ ব্যথা অর্থাৎ কমড়ে ব্যথা হওয়া।
- কাজ কর্মে অমনোযোগী ভাব।
কিডনি সুস্থ রাখার উপায়
কিডনি সম্পূর্ণভাবে অকেজো হওয়ার পূর্বেই যত্ন নেওয়া জরুরী। নিম্নে কিডনি যত্ন নেওয়ার কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো-
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
- প্রস্রাব চেপে রাখা যাবে না।
- শারিরীক পরিশ্রম করতে হবে।
- বেশী বেশী ঘুমানোর চেষ্টা করবেন অর্থাৎ পরিমিতি ঘুমাতে হবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- ব্যথানাশক ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকুন।
- নিয়মিত মাইক্রো অ্যালবুমিন টেস্ট করুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।
কিডনি সুস্থ্য রাখার খাবার
কিডনি সুস্থ্য রাখতে উপরোক্ত নিয়মের সাথে সাথে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নিম্নোক্ত খাবারগুলো যুক্ত রাখবেন। কেননা আপনি যদি নিম্নোক্ত খাবারগুলি নিয়মিত খান তাহলে কিডনি সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করবে।
- ফুলকপিঃ এটি পুষ্টিকর খাবার এবং এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বিসহ অনেক পুষ্টি পাওয়াা যায় এই ফুলিকপিতে। যেহেতু ফুলকপি শীতকালীন সবজি তাই শীলকালে নিয়মিত ফুলকপি খাওয়ার চেষ্টা করুন তাহলে আপনার কিডনি ভালো থাকতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
- লাল আঙ্গুরঃ লাল আঙ্গুরে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, সি, বি৬, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রণ ফসফরাস, ফলিত, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, ফ্ল্যাভনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তাই নিয়মিত লাল আঙ্গুর খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে কিডনি সুস্থ্য থাকবে।
- ডিমের সাদা অংশঃ ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে। এ জন্য নিয়মিত ডিমের সাদা অংশ খাবেন ফলে উচ্চমানের প্রোটিনের সরবরাহ পাওয়া যায় এবং কিডনি ভালো রাখার জন্য অতীব জরুরী।
- রসুনঃ প্রতিদিন গরম পানির সঙ্গে ২/৩ তিনটি রসুনের কোয়া খেলে শরীরের রক্তের সাথে মিশে থাকা বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান বের হয়ে যেতে থাকে এবং কিডনি ভালো রাখার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- অলিভ ওয়েলঃ অলিভ ওয়েল দিয়ে যে কোন খাবার রান্না করে খাবেন। তাহলে কিডনি ভালো থাকবে।
- বাঁধাকপিঃ বাঁধাকপিতে থাকা ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি থাকায় কিডনি সমস্যা প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করে। তাই শীতকালীন সবজি হওয়ায় বাঁধাকপির সময় নিয়মিত বাঁধাকপি খাবেন। বাঁধাকপিতে ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ ।
কিডনি রোগের প্রতিকার
যাদের কিডনির সমস্যা এখনও হয় নাই তাদেরকে অনুরোধ করছি কিডনিকে সুস্থ্য রাখতে উপরোক্ত তথ্যগুলো অনুযায়ী চলবেন এবং খাবার গ্রহণ করবেন এবং কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন আমার এই পোস্টে। তাহলে কিডনিকে সুস্থ্য রাখতে পারবেন।
আর যাদের কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে তারা নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন, ঔষধ সেবন করবেন এবং আমার পোস্টে যে তথ্য গুলো দেওয়া আছে সেভাবে মেনে চলবেন, তাহলে ইনশাআল্লাহ কিডনি যতটুকু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এর চেয়ে আর বৃদ্ধি পাবে না।
শেষ কথা
পরিশেষে বলবো কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন আমার এই পোস্টে। কিডনি সম্পর্কে যতটুকু তথ্য উপস্থাপন করেছি যদি আপনারা এই তথ্যের আলোকে নিয়ম অনুযায়ী চলেন কিংবা খাবার গ্রহণ করেন তাহলে আপনার কিডনিকে সুস্থ্য রাখতে পারবেন। তাই কিডনিকে সুস্থ্য রাখার চেষ্টা করুন তাহলে নিজের শরীর আজীবন সুস্থ্য থাকবে।
লেখকের মন্তব্য
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি বিস্তারিত জানুন আমার এই পোস্টে বিস্তারিত উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। যদি আমার এই পোস্টের লেখায় আপনার কিছুটা উপকার হয়ে থাকে তাহলে আমার এই সাইটটি ভিজিট করুন এবং নিয়মিত ভিজিট করলে আরো নতুন নতুন আপডেট তথ্য পাবেন।
ধন্যবাদ।
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url