কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার - নষ্ট কিডনি ভালো করার ১৪ উপায়

প্রিয় বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম আশা করি আল্লাহর রহমতে সকলে ভালো আছেন? আজকে আপনাদের সামনে আলোচনা করব কিডনি রোগ ও কিডনিতে পাথর অপসারণ নিয়ে। আশা করি আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়বেন এবং জেনে নেবেন কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার - নষ্ট কিডনি ভালো করার  ১৪ উপায় সম্পর্কে।
কিডনি রোগের লক্ষন গুলো কি প্রতিকারের উপায়
আমাদের পরিবারে কারো না হলেও আশেপাশের অনেক ব্যক্তি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাই না বন্ধুরা। কিডনির সম্পর্কে জানা প্রতিটি মানুষের দরকার কেননা সকলেরই কিডনি রয়েছে আর এই কিডনিকে সুস্থ রাখতে সকলেরই কিছু টিপস এবং ট্রিকস জানা জরুরী। তো চলুন মূল আলোচনায় যায়।

কিডনি কি-ভূমিকা

কিডনি (kidney) হচ্ছে ইংরেজি নাম এর বাংলা হচ্ছে বৃক্ক।  মেরুদন্ডী প্রাণীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের নাম কিডনি যা রেচনতন্ত্রের প্রধান অংশ। কিডনির কাজ হচ্ছে দেহ থেকে অর্থাৎ রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ পৃথকীকরণ ও মূত্র উৎপাদন। মানব দেহের সকল রক্ত দিন রাতে 40 বার কিডনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

এছাড়াও কিডনির মূল কাজ হচ্ছে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং অন্তক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে হরমোন নিঃসরণ করা যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানবদেহের ভেতরে উদার গহবরের পশ্চাৎ ভাগে মেরুদন্ডের দুই পাশে দুইটি কিডনি বা বৃক্ক রয়েছে। প্রতিটি কিডনির দৈর্ঘ্য চার থেকে পাঁচ ইঞ্চি।

এরা দেখতে অনেকটা সিমের মত এবং এদের কালার অনেকটা লালচে বাদামী আকারের। বৃক্ষ বা কিডনি সাধারণত স্বচ্ছ ও পাতলা পেরিট্রোনিয়াম পর্দা বা ঝিল্লি দ্বারা আবৃত। কিডনির ভেতরের দিক দিয়ে ইউরেটার ও রেনাল শিরা বের হয় এবং রেনাল ধমনী ও স্নায়ু বৃক্কে প্রবেশ করে। লিভার বা যকৃতের অবস্থানের কারণে ডান বৃক্কের অবস্থান বাম বৃক্ক অপেক্ষা একটু নিচে অবস্থান করে।

কিডনি রোগের কারণ

তো চলুন বন্ধুরা এখন আমাদের জেনে নেই কিডনি রোগের কারণ গুলো সম্পর্কে অর্থাৎ কি কি কারণে কিডনি রোগ হতে পারে সেগুলো সম্পর্কে এখন আমরা জেনে নেব।

  • ডাইবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কিডনির রোগ হতে পারে
  • ইউরিন ইনফেকশনের কারণে কিডনির রোগ হতে পারে
  • কিডনিতে পাথর সহ আরো বিভিন্ন কারণে কিডনি রোগ হতে পারে
  • নিয়মিত পরিশ্রম অর্থাৎ অতিরিক্ত বিশ্রাম করলে কিডনি রোগ হতে পারে
  • নিয়মিত ব্যায়ামের অভাবে অর্থাৎ কায়িক পরিশ্রম না করলে কিডনি ড্যামেজ হতে পারে
  • পরিমাপ মতো পানি পান না করলে এবং ধূমপান করলে কিডনি ড্যামেজ হতে পারে।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজনের কারণেও কিডনি রোগ হতে পারে
  • প্রচুর পরিমাণে ওষুধ পান করার ফলেও কিডনির রোগ হতে পারে
  • কিডনির সমস্যা জন্মগত হতে পারে এবং ষাট বছরের উর্ধ ব্যক্তিদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 
প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিডনি ড্যামেজ হওয়ার কারণ সম্পর্কে।

কিডনি রোগের লক্ষণ

দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে কিডনি। কিডনি রোগ খুব নীরবে মানুষের অজান্তে শরীরের ক্ষতি করে এবং খুব জটিল অবস্থায় না পাওয়া পর্যন্ত কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় না। তো চলুন বন্ধুরা দেখে নিই কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো-

  • কিডনি রোগের সবচেয়ে বড় লক্ষণ হচ্ছে প্রসবের পরিবর্তন। আপনার কিডনির সমস্যা হলে প্রসবের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হবে অথবা কম হবে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই সমস্যা বেশি দেখা দেয় এবং প্রসাবের রং গারো হয়.আবার অনেক সময় প্রসাবের বেগ আসলেও প্রসব হয় না।
  • কিডনি রোগ হওয়ার আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে প্রসাবের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া। প্রসাব করার সময় যদি ব্যথা অনুভূত হয় , জ্বালাপোড়া করে তবে আপনি বুঝে নেবেন এটা ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন এর লক্ষণ। এই ব্যথা কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে পিঠে ব্যথা অনুভূত হয় এবং জ্বর অনুভূত হয়।
  •  কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে প্রসবের সাথে রক্ত যাওয়া। যদি প্রসবের সাথে রক্ত যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কারণ এটি কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় লক্ষণ।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে কাজে মনোযোগ কম আসা। শরীরের লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ কমে যায়। যার ফলে অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা কমে যায় এবং কাজে মনোযোগ কম আসে।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে আবহাওয়া গরম থাকা সত্বেও শীত অনুভূত হয়।
  • বমি বমি ভাব হয়।
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রাতে ঘুমের সমস্যা হয়। কিডনির শরীর থেকে পানি নিঃসরণ করতে পারে না যার ফলে শরীর পানি জমে ফুলে যায় এবং এ কারণে ঘুমের সমস্যা হয়।
  • ক্ষুধামন্দ দেখা দেবে , শরীরের ওজন দ্রুত হ্রাস পাবে এবং অসুস্থ বোধ লাগবে, শরীরের ব্যথা অনুভূত হয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থান চুলকাবে। পিঠের পাশের নিচ দিকে ব্যথা হয়।
  • মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা অনুভূত হবে এবং ক্লান্ত মনে হবে।

কিডনি রোগের প্রতিকার

এতক্ষণ আমরা জানলাম কিডনি রোগের কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে এখন আমরা জানবো কিডনি রোগের প্রতিকার সম্পর্কে। 

 তো চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে আলোচনায় যাই-

  • কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। তাই যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে জীবন যাপন করা ওষুধ সেবন করা বাধ্যতামূলক যেন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ সব সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেননা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আপনার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে একসময় আপনার কিডনি ড্যামেজ হতে পারে । তাই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
  • নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করতে হবে যেন শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি জমে না থাকে। অতিরিক্ত ওজন থাকে তাহলে সেটা দ্রুত কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে কারণ ধূমপানের কারণে কিডনির সমস্যা হতে পারে
  • খাবারের অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে এবং রক্তে যেন কোলেস্টেরলের পরিমাণ সব সময় ঠিক থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • নিয়মিত সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে বাইরের ফাস্টফুড থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • তবে যাদের কিডনি রোগ আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ফলমুল খাবেন।
  • কিডনি রোগীদের অবশ্যই নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে এবং রুটিন অনুযায়ী চলাফেরা করতে হবে উপরের এই নিয়মগুলো মেনে চলতে সক্ষম হলে কিডনি রোগের প্রতিরোধ করা সম্ভব।

কিডনি রোগের ঔষধের নাম

চলুন বন্ধুরা এখন আমরা জেনে নেই কিডনি রোগের ঔষধের নাম-

  • মুত্র বর্ধক বা জলের বড়ি- এই ওষুধ আপনার কিডনিকে অতিরিক্ত লবণ ও জল থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে এবং আপনার প্রসাব স্বাভাবিক হতে সাহায্য করবে।
  • এলডোইস্টরন রিসেপ্টর-এই ওষুধটি ব্ল্রকা হল কনজে্সটিভ হার্ট ফেলিওর অর্থাৎ (CHE) চিকিৎসার জন্য এক ধরনের মূত্রবর্ধক ওষুধ.
  • AEC ইনহিবিটরস (এনজিও টেনসিন-কনভার্টিং এনজইম ইনহিবিটরস) এই ওষুধটি উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে কিডনির রোগ ভালো করতে সাহায্য করে।

কিডনি ভালো আছে কিনা কিভাবে বুঝবেন

কিডনি ভালো আছে কিনা কিভাবে বুঝবেন তা বুঝার জন্য আপনাকে রক্তে ইউরিয়া ও সিরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করতে হবে। কিডনি যদি ড্যামেজ হয়ে যায় তাহলে এই দুটির পরিমাণ বেড়ে যাবে। আপনার রক্তে এই দুটি উপাদানের পরিমাণ যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় তাহলে বুঝে নিতে হবে কিডনি ভালো নেই। আপনার কিডনির কতটা ড্যামেজ হয়েছে তা বোঝা যাবে গ্লোমেরুলাস ফিলট্রেশন রেট সংক্ষেপে জিএফ আর এবং ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স রেট অর্থাৎ সি সি আর টেস্ট দ্বারা। 

যদি আপনার রক্তে জিএফআর 90 এর উপরে হয় তাহলে আপনি নিশ্চিতে থাকবেন আর যদি ১৫ এর নিচে চলে যায় তাহলে আপনার কিডনি ড্যামেজ শেষ পর্যায়ে। কিডনের আকার, কিডনির পাথরের আকার, টিউমার, মূত্র তন্ত্র ও প্রোটেস্টের অবস্থা বোঝার জন্য সবচেয়ে কার্যকারী পরীক্ষা হচ্ছে আল্ট্রাসাউন্ড। 

কিডনির ফেইলিউরে কোন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা দেখতে রক্তের হিমোগ্লোবিন, ইলেক্ট্রোলাইট, ক্যালসিয়াম , ফসফেট ও ভিটামিন ডি ইত্যাদি পরীক্ষা করতে পারেন। সুস্থ মানুষেরই নিয়মিত রক্তের শর্করা ও রক্তচাপ মাপা উচিত।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা অনুভূত হয়

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা অনুভূত হয় এখন আমরা সেই সম্পর্কে জানব। কিডনির সমস্যা হলে শরীর থেকে প্রোটিন বের হয়ে যায় যার ফলে কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়। মেরুদন্ডের দুই পাশ থেকে একটু দূরে ডান দিকে কিংবা বাম দিকে ব্যথা অনুভূত হয়। কিডনের সমস্যা হলে পাঁজরের নিচের অংশেও ব্যথা অনুভূত হয়। 

এই ব্যথা কোমরের দুই পাশেও আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ এই ব্যথা এক জায়গায় স্থির থাকে না এর আশপাশে নড়াচড়া করে। কিডনির সমস্যা জনিত ব্যথা মাঝেমাঝে আসা-যাওয়া করে নির্দিষ্ট সময় পর পর অনুভূত হয় শোয়া- বাসা, হাটা চলা কোন কিছুতেই এই ব্যথার আরাম পাওয়া যায়না।

নষ্ট কিডনি ভালো করার  ১৪ উপায়

চলুন বন্ধুরা এখন আমরা জেনে নেই নষ্ট কিডনি ভালো করার ১৪ টি উপায় সম্পর্কে। প্রথমে আমরা জানবো ঘরোয়া উপায়ে কিডনি পাথর দূর করার দশটি উপায়ঃ

প্রচুর পরিমাণ পানি পান করার মাধ্যমে কিডনির পাথর সারিয়ে তোলা সম্ভব। যখন পাথরের পরিমাণ বা আকার ছোট থাকে তখন পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে এই পাথরকে দূর করা সম্ভব। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

তুলসী পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যাসিটিক অ্যাসিড যা আপনার কিডনির পাথর ভেঙে ফেলতে সাহায্য করবে ।তাই আপনি যদি আপনার কিডনির পাথর ঘরোয়া উপায় ভালো করতে চান তাহলে প্রতিদিন অন্তত দুইবার করে তুলসী পাতার রস খেতে হবে। যারা তুলসী পাতার রস খেতে পারেন না এনারা তুলসী পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন।

পাতিলেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সাইট্রিক অ্যাসিড যা ক্যালসিয়াম জাত পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং কিডনিতে জমে থাকা ছোট পাথরগুলো ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার কিডনি সুস্থ রাখতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে পানির সাথে লেবুর রস মিক্স করে পান করুন। দিনের যেকোনো সময় পান করলে ও হবে।

ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং কিডনির পাথর ও অন্যান্য টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে পর্যাপ্ত পরিমাণ যা কিডনির পাথর দূর করতে ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ও দুই চামচ পানি মিশিয়ে পান করতে হবে।

  1. মেডিসিনেরা বলেছেন মেথির বীজে এমন সব উপাদান রয়েছে যা কিডনিতে জমাকৃত পাথর দূর করতে সাহায্য করে তাই ডাক্তারেরা মেথির বেজ খাওয়ার জন্য কিডনি রোগীদের পরামর্শ দেন। আপনার যদি কিডনির সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনিও মেথির বীজ খেতে পারেন।
  2. কালোজিরার বীজ কিডনির পাথর অপসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কালোজিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর তৈরিতে বাধা প্রদান করে। তাইতো চিকিৎসকরা কিডনি ড্যামেজ রোগীকে কালোজিরার বীজ খাওয়ার পরামর্শ দেন। হাফ চা চামচ শুকনো কালোজিরার বীজ ২৫০ মিলি লিটার গরম পানিতে ভিজিয়ে দিনে দুইবার খেতে হবে। এভাবে কিছুদিন খেলে কিডনি আক্রান্ত রোগী সুস্থতা লাভ করবে।
  3. ভুট্টার তুষ কিডনির পাথর সরাতে ভূমিকা রাখে। শুনে হয়তো অবাক হচ্ছেন কিন্তু আসলে সত্যি কথা পানির সাথে ভুট্টার তুষ ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর এই মিশ্রণটি নিয়মিত পান করতে হবে। দেখবেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনার কিডনি সুস্থ হয়ে উঠেছে।
  4. অলিভ অয়েল ও পাতিলেবুর রস একসাথে মিক্স করে নিয়মিত সেবন করলে কিডনির পাথর গলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
  5. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে আপনার কিডনির পাথর ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাবে এবং আপনার কিডনি সুস্থ থাকবে কারণ পানি মিনারেল ও নিউট্রেশন গলিয়ে দিয়ে কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন অন্তত আপনাকে সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করতে হবে।
  6. বেকিং সোডা তে থাকা উপাদান কিডনির পাথরে থাকা এসিডকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে যার ফলে আস্তে আস্তে কিডনির পাথর অপসারণ করা সম্ভব হয়।
  7. তরমুজের বীজে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা কিডনির পাথর অপসারণ ভূমিকা রাখে। তাই আপনি যদি নিয়মিত তরমুজের বীজের চা পান করেন তাহলে আপনার কিডনির পাথর নিমিষেই গলে যাবে।
    সেলারি শাক কিডনি থেকে পাথর অপসারণে সাহায্য করে। তাই যাদের কিডনির প্রবলেম তারা এই শাক নিয়মিত ডায়েট চাটে রাখতে পারেন।
    মুলার রস রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান যা কিডনির পাথর ভাঙতে এবং পাথর নরম করতে সাহায্য করে। মুলা কেটে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে আধা ঘন্টা সেদ্ধ করতে হবে এরপর এই পানিটা ছেঁকে খেতে হবে। এভাবে কয়েকদিন খেলেই আপনি আপনার কিডনির সুস্থতা বুঝতে পারবেন।

শেষ কথাঃ কিডনি সমস্যার সমাধান সম্পর্কে

কিডনি সুস্থ রাখার জন্য আমাদের রক্তচাপ ও রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে এবং নিয়মিত পরিশ্রম করতে হবে। 

ধূমপান ও অ্যালকোহল জাতীয় পদার্থ গ্রহণ থেকে দূরে থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন প্রকার ব্যথার ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কিডনির কোন সমস্যা বা ব্যথা বুঝতে পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ওষুধ সেবন করতে হবে। 

প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেল করার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে অবশ্যই পরিবারের সাথে শেয়ার করবেন। সকলে ভালো থাকবেন এবং পরিবারের প্রতি খেয়াল রাখবেন আজকের মত এখানেই শেষ করছি-আল্লাহ হাফেজ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url