ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা

এই গোটা বিশ্ব জাহানে যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা অনেক নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কেননা ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য কিন্তু কিছু কিছু গোষ্ঠী গ্রহণ করে আর বাকীগুলো প্রত্যাখান করে। 

ইসলাম শব্দটি হলো একটি আরবী শব্দ অর্থ আত্মসমর্পণ করা। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ধর্ম  ইসলাম। আমরা একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করবো এবং তিনিই ইবাদতযোগ্য স্রষ্টা। মানবজাতির পথ প্রদর্শনের জন্য ও ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে যুগে যুগে অনেক নবী ও রাসুল  পাঠিয়েছেন। ইসলাম ধর্মের প্রধান গ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন। আল্লাহর বাণী ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই উপর নাযিল হয়েছিল। আর নবী কথা, কাজ ও সম্মতিকে সুন্নাহ বলায় হয় যা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রহিয়াছে। 

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে একমাত্র ইসলাম ধর্মই একমাত্র গ্রহণযোগ্য জীবন ব্যবস্থা। সুরা আল-ইমরানের ১৯ নং আয়াতে  উল্লেখ্য করেছেন যে, নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন। যাহাদেরকে কিবা দেওয়া হইয়াছিল তাহারা জ্ঞান লাভের পর পরস্পর বিদ্বেষবশত মতানৈক্য ঘটেছিল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশনাসমূহ অস্বীকার করবে, নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অতিশয় তৎপর। 

ইতিপূর্বে ইসলামের বিরুদ্ধে অনেক রাজা বাদশারাও বিরোধীতা করেছে কিন্তু টিকতে পারে নি। বর্তমান সময়েও বহু মানুষ ইসলাম সম্পর্কে সঠিকতা বুঝার চেষ্টা করে না। তারা মনে করে ইসলাম নিতান্তই ব্যক্তিগত। বাস্তবে সর্বস্ব জীবন ব্যবস্থা ইসলাম নয়। ইসলাম হলো আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক প্রেরিত ও পছন্দনীয় পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। এখানে কোন কিছুরই অপরিপূর্ণ নাই। 

আল্লাহ তায়ালা নিজেই মহা গ্রন্থ আল-কোরআনেই ঘোষণা দিয়েছেন মানব জাতির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ এক জীবন ব্যবস্থার নামই ইসলাম। তাই বিশ্বাস করতে হবে যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।

পবিত্র কোরআনে সুরা আল-ইমরানের ১৯নং আয়াতে বর্ণিত আছে ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা এবং মহান আল্লাহর কাছে মনোনীত ধর্মই হচ্ছে ইসলাম। নিম্ন ইসলামের ৫টি স্তম্ভ উল্লেখ করা হলো-

ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় বলবো ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ও পরিপূর্ণ  জীবন বিধান এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই এবং এতে কোন প্রকার অপূর্ণতাও নেই। আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে সূরা মায়িদার ৩নং আয়াতে এরশাদ করেছেন, আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ  করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহ পাকের প্রেরিত শেষ নবী ও রাসূল। আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর আসমানী কিতাব আল-কোরআন অবতীর্ণ করেন।  এর পর  আর কোন নবী কিংবা রাসুল পৃথিবীর বুকে আগমন ঘটবে না এবং কোন আসমানী কিতাবও অবতীর্ণ হবে না।  এই বিশ্বাস কিংবা আকিবা যারা বুকের মধ্যে ধারণ করেছে তারাই মুসলিম। আর যারা করতে পারে নাই তারা অমুসলিম ও কাফির। 

সূরা বাকারার ২৮৬ নং আয়াতে উল্লেখ আছে আল্লাহ কাহারও উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যাহা তাহার সাধ্যাতীত। সে ভাল যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই এবং সে মন্দ যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই। তাই সকল জাতিকে জানতে ও বুঝতে হবে যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নবুওয়াত লাভের পর পূর্বের সকল ধর্মের বিধান বা কার্যক্রম ইসলাম দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে। ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয় অষ্টম শতকের শুরুর দিকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত ইসলামের ইতিহাসে অর্থনেতিক, সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিকভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার সময়কালকে বুঝায়। ৬২২ সালে মদিনায় ১ম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ইসলামী শক্তির উত্থানের সময় থেকে শুরু হয়। 

নবুওয়াত লাভের পর হতে কোরআন এর বাণী ও নবী করিম (সাঃ) এর কথা বা হাদীসের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষা আর জ্ঞান লাভের উপর যথেষ্ঠ পরিমাণ গুরুত্ব দেওয়া হত। কেননা তৎকালীন মুসলমানদের জ্ঞান অর্জন, বিজ্ঞানের বিভিন্ন স্তরে উন্নয়ন ও শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণ হিসেবে মুসলমানদের ইসলামী ধর্মীয় মূলবোধ যথাযথ ভূমিকা পালন করেছিল। 

ইসলামী দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের জন্য বিভিন্ন মুনিষী বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন। জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব বুঝাতে বিভিন্ন বিজ্ঞ ব্যক্তি উক্তি বা বচন  ব্যক্ত করেছেন। তন্মধ্যে উন্নতম বচন হচ্ছে ‘‘জ্ঞানার্জনের জন্যে সুদূর চীন দেশে যেতে হলেও যাও’’। এ সংশ্লিষ্ট হাদিস এবং এ জাতীয় অনেক ধারা মুসলিম পন্ডিতগণ বিশ্বব্যাপি মুসলমানদের মধ্যে প্রচার, প্রয়োগ ও প্রসার করতে দেখা গিয়েছে। আর একটি উক্তি রয়েছে আল-জারনুযির। তিনি বলেন ‘‘বিদ্যার্জন করা আমাদের প্রত্যেকের জন্য যথাবিহিত ও বাধ্যতামূলক’’। 

প্রত্যেক মুসলিমদের  উচিত কোরআন ও হাদিসের আলোকে দিন যাপন করা। কেননা কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা চলতে ইহকালে শান্তি পাবো এবং পরকালে মুক্তি পাবো। যেহেতু ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। তাই আমরা এটাকে আকড়ে ধরি এবং এ মোতাবেক জীবন যাপন করি। 

আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই, তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তিনি সত্যসহ তোমার প্রতি কিবা অবতীর্ণ করেছেন, যাহা উহার পূর্বের কিতাবের সমর্থক। আর তিনি অবতীর্ণ করেছেন তাওরাত ও ইঞ্জিল। ইতিপূর্বে মানবজাতির পথ প্রদর্শনের জন্য, আর তিনি ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন। যাহারা আল্লাহর নিদর্শনকে প্রত্যাখ্যান করে তাহাদের জন্য কঠোর শাস্তি আছে। আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও দন্ডদাতা। সূরা আল-ইমরান- ১ থেকে ৪ নং আয়াত।

আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনে কিছুই তাঁহার নিকট গোপন থাকে না। তিনিই মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের আকৃতি গঠন করেন। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই, তিনি প্রবল পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন। যাহার কিছু আয়াত মুহকাম, এই গুলি কিতাবের মূল আর অন্যগুলি মুতাশাবিহ যাহাদের অন্তরে সত্য লংঘণ প্রবণতা রয়েছে। শুধু তারাই ফিতনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুস্মরণ করে। 

আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেহ ইহার ব্যাখ্যা জানে না। আর যাহারা জ্ঞানে সুগভীর তাহারা বলে, আমরা ইহা বিশ্বাস করি, সমস্তই আমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে আগত এবং বোধশক্তিসম্পন্নরা ব্যতীত অপর কেহ শিক্ষা গ্রহণ করে না। সূরা আল-ইমরান- ৫ থেকে ৭ নং আয়াত।

ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামই একমাত্র ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। এটা ১০০%  সঠিক এবং এর কোন কমতি বা কোন ঘাটতি নাই। তাই প্রত্যেক নর-নারির ইসলাম ও দ্বীন শিক্ষা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক এবং  কোরআন ও হাদিসের আলোকে নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠা করি এবং অন্যকে উৎসাহিত করি। 

লেখকের মন্তব্য

যদি আমার এই পোস্টটি সস্পূর্ণ  পড়ে আপনাদের ভালো লেগে থাকে কিংবা কোন উপকারে আসে তাহলে আমার সাইটটি ভিজিট করুন এবং অন্যকে শেয়ার করে জানিয়ে দিন। আর এই সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করলে  আরো অনেক তথ্য পাবেন ইনশাআল্লাহ।